খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে তারেকের রাজনৈতিক পরিকল্পনা ফাঁস

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০২১; সময়: ১:২৮ অপরাহ্ণ |
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে তারেকের রাজনৈতিক পরিকল্পনা ফাঁস

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনা সাজিয়েছেন লন্ডনে পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত দলটির ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আর সেই পরিকল্পনা ফাঁস করেছেন বিএনপির খালেদা জিয়া পন্থী ও মধ্যম সারির নেতারা।

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপি ও তার রাজনীতিকে উজ্জীবিত করতে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করেছেন তারেক রহমান। নিজের প্রতি দেশের মানুষের বিশ্বাস অনুধাবন করে মায়ের অসুস্থতাকে রাজনীতির হাতিয়ার বানিয়েছেন ছেলে তারেক।

এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন খালেদা জিয়া পন্থী বিএনপির নেতারা। নোংরা রাজনীতি করায় ফের খালেদা জিয়া পন্থী ও তারেক পন্থী নেতাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপির রাজনীতিতে খালেদা পন্থী হিসেবে পরিচিত দলটির একাধিক দায়িত্বশীল ও মধ্যম সারির নেতা জানান, খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে বিএনপির মৃতপ্রায় রাজনীতিকে চাঙ্গা করার শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন তারেক রহমান।

কোনো যৌক্তিক আন্দোলন করতে ব্যর্থ বিএনপি ঘুরে দাঁড়ানোর সর্বশেষ চেষ্টা হচ্ছে খালেদা জিয়ার অসুস্থতা। যদি আন্দোলনে সফল হই, তাহলে ক্ষমতায় যেতে পারব।

তারা আরো জানান, আবেগকে পুঁজি করে তারেক রহমান যা করতে চাইছেন তা খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ঘটেছিল। জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর মানুষের আবেগকে পুঁজি করে বিএনপির রাজনীতি জমিয়ে তোলেন খালেদা।

কিন্তু দুইবার প্রধানমন্ত্রী হয়েও স্বামী-হত্যার বিচারের কোনো উদ্যোগ নেননি, যা ছিল লজ্জার। ঠিক তেমনি, দীর্ঘদিন থেকে নিস্ক্রিয় বিএনপির রাজনীতিকে বাঁচাতে শেষ চেষ্টা হিসেবে নিজের মাকে ব্যবহার করা তারেক রহমানের মতো উচ্চাভিলাষী মানুষের পক্ষেই সম্ভব। যেহেতু খালেদা জিয়া একটি আইনি প্রক্রিয়ায় রয়েছেন সেহেতু তাকে আইনের মাধ্যমে মুক্ত করতে হবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে, গত ২৪ নভেম্বর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গুজব ছড়াতে নিষেধ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কিন্তু একইদিন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনিং করা হয়েছে। রিজভীকে তারেক রহমানের নির্দেশের পরদিন ২৫ নভেম্বর থেকে মির্জা ফখরুলও একই কথা বলতে শুরু করেন।

জানা গেছে, কারাগারে যাওয়ার শুরু থেকে খালেদা জিয়ার দেখাশোনা করেছেন তারই ব্যক্তিগত পরিচারিকা। চিকিৎসার সবকিছু নিয়মিত তত্ত্বাবধান করেছেন তারই ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি নেতাদের পছন্দের শীর্ষ চিকিৎসকরা।

নিজের বাড়িতে থেকেই করোনায় আক্রান্ত হন খালেদা জিয়া। তিনি কীভাবে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তা আজও অজানা। পরে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হন খালেদা জিয়া। এরপরই হঠাৎ খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপির মৃতপ্রায় রাজনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা শুরু হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা করে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত।

তবে উচ্চ আদালত সেই সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নাজিমুদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। কিন্তু জেলে একা থাকতে অপারগতা প্রকাশ করেন খালেদা জিয়া।

তাই তার সহযোগিতায় ব্যক্তিগত গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকেও জেলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপিপন্থী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে