খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২১; সময়: ১০:০১ অপরাহ্ণ |
খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।

রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবন ফিরোজায় সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ডা. অধ্যাপক ফখরুদ্দিন মো. সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘জি, ওনার সিরোসিস অব লিভার। এটা শনাক্ত হয়েছে। তার হিমোগ্লোবিন কমছে… ৭ দশমিক ৮ এর মত থাকছে। আমরা হিমোগ্লোবিন লেভেলটাকে ঠিক রাখতে চেষ্টা করছি।’

এর আগে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হওয়ার খবর প্রকাশিত হলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। রোববারের সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরাই সে খবর নিশ্চিত করে দিলেন। এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনবার রক্তক্ষরণ হয়েছে খালেদা জিয়ার।

ডা. অধ্যাপক ফখরুদ্দিন মো. সিদ্দিকী বলেন, ‘আবারও যদি তার রক্তক্ষরণ হয়, তবে তাকে বাঁচানো খুব কষ্টকর হয়ে যাবে। রিব্লিডিং কন্ট্রোল করার মতো টেকনোলজি আমাদের এখানে নেই। এখানে যদি আবার রিব্লিডিং শুরু হয় তার তবে তার মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাবে। বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থায় এখনও তিনি আছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাকে বাইরে নিতে হবে। এটা আমরা এভারকেয়ার হাসপাতাল, তার পরিবারের সদস্যদের বলেছি।’

৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এখন হৃদরোগ, কিডনি জটিলতা, খাদ্যনালীর সংক্রমণে ভুগছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্যাস্ট্রো এন্ট্রোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. এ টি এম মহসীন, অধ্যাপক ডা. শামসুল আরেফিন, হেপাটোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. নুরুদ্দীন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

ডা. শামসুল আরেফিন বলেন, ‘আমাদের শরীরে দুটি সার্কুলেশন সিস্টেম আছে। একটা হলো পোর্টাল সার্কুলেশন সিস্টেম, আরেকটা সিস্টেমিক সার্কুলেশন সিস্টেম। লিভারে দুটা সিস্টেমই কার্যকর। লিভারে টোটাল যে ব্লাড যায় তার তিন ভাগের এক ভাগ যায় সিস্টেমিক সার্কুলেশন থেকে আর দুই ভাগ যায় পোর্টাল সার্কুলেশন থেকে। এখানে যেটা হয় তার পোর্টাল প্রেসার বেড়ে গেছে।

‘কারণ তার লিভারের ভেতরের নরমাল চ্যানেলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে কারণে পোর্টাল প্রেসার বেড়ে যায়, আর যেসব ব্যান খাদ্যনালীতে থাকে, সেগুলো ফুলে ওঠে ফেটে যায়। সেজন্য সিভিআর ব্লিডিং হয়। এই সিচুয়েশনে আমরা যেটা করেছি সেটা ইন্টারন্যাশনাল প্রাকটিস। এটার পরে আবার ব্লিডিং হলে আরও কিছু জিনিস আছে যেগুলো আমরা করি, স্পেশাল কিছু কেমিক্যাল এজেন্ট আছে সেগুলো ইনজেক্ট করি অনেক সময়। আনফরচুনেটলি সেটা আমাদের দ্বারা সম্ভব হয়নি এবং এখন আমাদের দেশে সেই ওষুধগুলো পাওয়া যায় না।’

এ চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তৃতীয়ত যেটা আছে সেটা হলো টিপস। লিভারের ভেতরে টোটাল প্রেসার কমানোর জন্য সিস্টেমিক সার্কুলেশন এবং পোর্টাল সার্কুলেশনের মধ্যে একটা কমিউনিকেশন করে দেওয়া। এটা একটা হাইলি টেকনিক্যাল কাজ। এটা সচরাচর হয় না। আমাদের দেশে আমি দেখিনি কোনো টিপস করা রোগী এসেছে।

রোগীদের দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার ব্লিডিং হলে সার্ভাইভ করা কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য এ সেন্টারগুলো মেইনলি আমেরিকা ও ইউরোপে হয়। বিশেষত ইউকে জার্মানি এবং ইউএসএ। ওইসব দেশে এগুলোর জন্য অ্যাডভানস সেন্টার আছে। তবে সেসব দেশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই। দুই-চারটা সেন্টার আছে। বিশ্বের সব রোগীরা সেসব সেন্টারে যায়।’

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে