বিতর্কিত মেয়র আব্বাসের প্রভাব শাশুড়ির ভোটের মাঠে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২১; সময়: ১১:৫৪ অপরাহ্ণ |
বিতর্কিত মেয়র আব্বাসের প্রভাব শাশুড়ির ভোটের মাঠে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফাইমা বেগম রাজশাহীতে ইউপি নির্বাচনের একমাত্র নারী প্রার্থী। তিনি জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক। তাকে জেলার পবা উপজেলার পারিলা ইউপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে নেয় দলের নেতাকর্মীরা।

ফাইমা বেগম কাটাখালি পৌরসভার বিতর্কিত মেয়র আব্বাস আলীর শাশুড়ি। এর আগের নির্বাচনেও তিনি দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে তিনি বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরে যান। এবার নির্বাচনের শুরু থেকে তার ভোটের মাঠ চাঙ্গা। মেয়র নিজে গিয়ে তার নির্বাচন তদারকি করেন।

তবে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করায় মামলা আসামী হয়ে আত্মগোপনে যাওয়া এবং দল থেকে বহিস্কার হওয়ায় শাশুড়ির নির্বাচনে যেতে পারছেনা মেয়র আব্বাস। এ কারণে দলের নেতাকর্মীসহ অনেক সমর্থক ভোটের মাঠ থেকে নিজের গুটিয়ে নিয়েছেন।

তৃতীয় ধাপে ২৮ নভেম্বর পারিলা ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারও দলের দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল বারী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সমর্থক আবু সাঈদ মোরশেদ (দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে) দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় নেতারা অনেকে নৌকার পক্ষে কাজ না করে ভাগাভাগি হয়ে বিদ্রোহী দুজনের পক্ষাবলম্বন করেছেন।

ফাইমা বেগমের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক পবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, নেতারা প্রার্থীর সঙ্গে নেই এটা ঠিক নয়। ব্যক্তিগত ক্ষোভের কারণে কোনো নেতা না থাকতে পারেন। এটা দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। মাঠে অন্য নেতা-কর্মীরা সবাই আছেন। তারা মাঠে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন।

ফাইমা বেগম বলেন, তার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহরাব আলী খোদ পারিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়কে বিদ্রোহী প্রার্থী সাঈদ আলী ওরফে মোরশেদের কার্যালয় বানিয়ে তার পক্ষে কাজ করছেন। দলের নেতারা তাদের নেতাদের নির্দেশনা মেনে নির্বাচন করছেন।

পারিলা বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল বঙ্গবন্ধুর ছবি সংবলিত একটি পোস্টার রয়েছে। তবে নৌকার কোনো পোস্টার নেই। বরং বাইরের দেয়ালে বিদ্রোহী প্রার্থী আবু সাঈদের পোস্টার রয়েছে।

সেখানে মঞ্জুর রহমান নামের একজন কর্মী বসে ছিলেন। দলীয় কার্যালয়ে নৌকার পোস্টার নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনী কার্যালয়ে নৌকার পোস্টার রয়েছে। এটা দলীয় কার্যালয়। এখানে শুধু একজন মেম্বারের পোস্টার রয়েছে। কেন চেয়ারম্যানের পোস্টার নেই প্রশ্নে তিনি কোনো জবাব দেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ কর্মী বলেন, নৌকার প্রার্থী ফাইমা বেগমের সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীরা আসলে নেই। তার মেয়েজামাই কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী এসে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দিয়ে এ কদিন মাঠ গরম করে রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্য করার ঘটনায় তার নামে মামলা হয়েছে। তিনি আর শাশুড়ির নির্বাচনী সভায় আসতে পারছেন না। এ কারণে তার পক্ষ ছেড়েছেন অনেক নেতাকর্মীই। এই জন্য তার মাঠের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।

জামাতা আব্বাস আলীর না আসার কারণে তার মাঠের অবস্থা খারাপ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ফাইমা বেগম বলেন, জামাইয়ের নির্বাচনী এলাকা আলাদা। তার নির্বাচনী এলাকা আলাদা। তার কী হলো, না হলো তার সঙ্গে এই নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা মাঠে তার সঙ্গে ছিলেন, তারাই আছেন।

তিনি বলেন, যে নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে তারা প্রকাশ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারতেন না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে