হাই কমান্ডের নজরদারিতে তৃণমূল নেতারা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২১; সময়: ৯:০৫ অপরাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চতুর্থ ধাপে ৫৬ পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় মনোনয়ন বিতরণ শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলটির কোন পর্যায়ের নেতাকর্মী যেন কার্যক্রম না চালায় সেজন্য নজরদারি বাড়িয়েছে দলটি। এমনকি দলের বিরুদ্ধে গিয়ে যেকোনো কার্যক্রম পরিচালনা করলে দলীয় শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে তৃণমূলে বার্তা দেয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন পৌর নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অমান্য করলে দলীয় শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। তৃণমূলের ঐক্য বাড়াতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা দিক নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের একাধিক সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকারে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার মেয়র। এ দুই পদ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়ে থাকে। নিজে পছন্দের আশির্বাদপুষ্ট লোককে মনোনয়ন দিতে অনেকে বলয় গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এ কারণে কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা চাইলে সংসদ সদস্য এবং উপজেলা চেয়ারম্যানরা নিজের পছন্দের প্রার্থীদের তালিকা পাঠানোর চেষ্টা করেন। যা আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করেছে।

তাই এবার দলের তৃণমূলকে গুরুত্ব দিতে এবং প্রকৃত যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য তৃণমূলে কেন্দ্রীয় নেতারা নজরদারি বাড়িয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গণমাধ্যমে বলেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা সাংগঠনিক শৃঙ্খলার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর। তিনিসহ দলের মনোনয়ন বোর্ড স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আগে যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে বিদ্রোহ করেছিলেন, এবার তাদের কোনোভাবেই মনোনয়ন দেয়া হবে না।

আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ে দলের ১৭ সদস্যের মনোনয়ন বোর্ড রয়েছে। বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিমধ্যে যেসব পৌরসভায় নির্বাচন হয়েছে, সেখানে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্তকরণে তৃণমূল পর্যায়ে প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা, ভোটারদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ এবং গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বাকি পৌরসভাগুলোতেও মনোনয়ন দেয়ার সময় এসব বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হবে।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, নেতাকর্মীদের দলীয় আনুগত্য, দলের শৃঙ্খলার প্রতি আনুগত্য থাকতে হবে। সেগুলো মেনে চলতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে বা সেই ব্যত্যয় যদি দলের প্রধানের কাছে প্রতীয়মান হয় তাহলে তাদের ব্যাপারে এই ধরণের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, দলকে গতিশীল করতে, আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির লক্ষে তৃণমূল থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। সেই জায়গায় যদি কোনো সংকট থাকে সেটি নিরসন করতে হবে।

দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল বলেন, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা সবসময় তৃণমূলের নেতা কর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তিনি সবসময়ই তাদের খোঁজখবর রাখেন। জেলা ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব হচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের খোঁজ খবর রাখা, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা, দলের কর্মসূচি জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। এর মাধ্যমে দল শক্তিশালী হবে।

  • 115
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে