ছাত্রদল পুনর্গঠনে কমিটি বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ, তৃণমূলে ক্ষোভ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৫, ২০২০; সময়: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ |
ছাত্রদল পুনর্গঠনে কমিটি বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ, তৃণমূলে ক্ষোভ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : কমিটি বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি আর নানা অনিয়মের কাছে পরাজিত হচ্ছে ছাত্রদলের তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।

পদবঞ্চিত এসব নেতাকর্মীদের অভিযোগ অনৈতিক লেনদেন ও পক্ষপাতিত্বের কারণে পরীক্ষিত ও মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা অনেক জায়গায় পদ পাচ্ছেন না। এ নিয়ে তৃণমূলে ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভ। আর এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয় মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা ছাত্রদলের ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি। কমিটিতে সদস্য সচিব পদে বিদেশ ফেরত জহিরুল ইসলাম বাদশার নাম আসার পরই কমিটির প্রতি অনাস্থা জানায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাকর্মীসহ স্থানীয় বিএনপি।

মুন্সিগঞ্জের সরকারি শ্রীনগর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকি ১৪ জন লিখিত অনাস্থা জানিয়েছে।

শ্রীনগর উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য আরিফ হোসেন বাবু মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা বাণিজ্য করছে। যদি বাণিজ্য করতেই হয় তাহলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুললেই হয়। রাজনীতি করার প্রয়োজন কি?

শ্রীনগর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি রাহাদুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। একটা রাজনৈতিক দলে এমন অভিযোগ উঠবে কেন। ছাত্রদলের তৃণমূল নেতাদের দাবি, স্থানীয় বিএনপিকে পাশ কাটিয়ে ইচ্ছেমতো কমিটি করছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসেখ আল আযাদ অভিযোগ করেন, কলেজ কমিটি করা হয়েছে অছাত্রদের দিয়ে, পৌর কমিটি করা হয়েছে চাকরিজীবীদের নিয়ে। এভাবে কমিটি করা হলে ছাত্রদলের কোনও দরকারই নেই। তিনি দাবি করেন, টাকার বিনিময়ে এসব কমিটি করা হয়েছে।

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের বয়রাগাদি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ নাঈম জানান, বিভাগীয় ও জেলা ছাত্রদলের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে এবং গঠনতন্ত্র না মেনেই মুন্সিগঞ্জে ৬টি ইউনিটের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাগেরহাটের শরনখোলা থানা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক শফিকুল ইসলাম এসব কমিটিতে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তোলেন। জানান, এ বিষয়ে প্রতিবাদ করা হলেও কোনও ফল মেলেনি।

অনিয়ম আর স্বজনপ্রীতির কারণেই ছাত্রদলসহ কোনও কমিটিই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছেনা বলে মত স্থানীয় বিএনপি নেতাদের।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বলেন, গ্রুপিং এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে, বেশকিছু প্রমাণ আমাদের কাছেও আছে। গ্রুপিং রাজনীতি করতে গিয়ে আমরা একক ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা তুলে দেই।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি কাজী খায়রুজ্জামান শিপন বলেন, গ্রুপিং ঝামেলা না মেটানো পর্যন্ত কোনো দলই দাঁড়াতে পারবে না।

এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দাবি, স্বচ্ছতার সঙ্গেই সংগঠন গোছানোর কাজ চলছে। তবে, অনিয়মের অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে আমরা বিভাগীয় ও জেলার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তবে, এখন পর্যন্ত আমরা এসব অভিযোগের বাস্তব কোনো ভিত্তি খুঁজে পাইনি। অনেকে কমিটিতে স্থান না পেয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে অভিযোগ করে থাকে। তবে, আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করা হবে বলেও জানান ছাত্রদল সভাপতি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে