আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বাড়ছে সংঘাত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০; সময়: ১:০৯ অপরাহ্ণ |
আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বাড়ছে সংঘাত

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সংঘাত ও হানাহানি বাড়ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে। গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে দলটির দুই গ্রুপের সংঘাতে অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সর্বশেষ সোমবার পাবনার ঈশ্বরদীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘাতে আহত হন ১২ জন।

সামনে কয়েকটি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে তৃণমূলে বাড়ছে বিরোধ। এছাড়াও এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও বৈষয়িক স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণেও বিরোধ বা সংঘর্ষ হচ্ছে। দলের অভ্যন্তরে একের পর এক সংঘাত-হানাহানির ঘটনায় উদ্বিগ্ন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, বিভিন্ন স্থানে উপনির্বাচন আছে; সামনে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদসহ (ইউপি) স্থানীয় সরকারের কিছু নির্বাচন আসন্ন; এসব কারণে হয়তো কিছু জায়গায় ছোটখাটো গোলমালের ঘটনা ঘটছে। দলীয়ভাবে বসে আমরা এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোগুলোর আরো তৎপর হওয়া দরকার। আগে থেকেই যেন এসব সংঘাতের ঘটনা আঁচ করা যায়, সেভাবে কাজ করতে হবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র বলছে, সামনে কয়েকটি সংসদীয় আসনে উপনির্বাচন, পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনের সময় বিভিন্ন স্থানে দলের ভেতর বিরোধ আরো বাড়তে পারে। তাছাড়া এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও বৈষয়িক স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণেও বিরোধ বা সংঘর্ষ হচ্ছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সাল ছিল আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বেশি ভ্রাতৃঘাতী। এর মূল কারণ ছিল স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচন। ঐসব নির্বাচন শেষ হওয়ার পরবর্তী পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ছয় ধাপের ওই ইউপি নির্বাচনে সারা দেশে তখন সহিংসতায় নিহত হন ১১৬ জন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলেন ৭১ জন, যারা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে প্রাণ হারান।

বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) বার্ষিক প্রতিবেদনে তখন বলা হয়, ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে নিহত হন ৮৩ জন। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ছিল ৩৩। তার আগের বছর নিহত হন ৩৪ জন।

সামগ্রিক রাজনৈতিক হানাহানি নিয়ে এ বছরের শুরুর দিকে আসক-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গত ছয় বছরে দেশে মোট ৬ হাজার ৭১০টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তাতে নিহত হয়েছেন ৬৩৫ জন, আহত ৪১ হাজার ৩৪৫ জন। আসক-এর হিসাবে, শুধু ২০১৯ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় ৩৯ জন নিহত হয়েছেন, আহত হন ২ হাজার ৬৮৯ জন।

সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের মতে, ক্ষমতার মোহে হানাহানি বাড়বে—এটাই স্বাভাবিক। মাঠে যেহেতু অন্য কেউ নেই, তাই নিজেদের মধ্যেই একে অপরকে লক্ষ্যবস্তু করছে।

  • 2
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে