দলীয় কোন্দল দমনে কঠোর হচ্ছে বিএনপি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০; সময়: ১২:১৮ অপরাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ফের মাথাচাড়া দিয়েছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এবার কোন্দলে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। যাতে করে সংসদের উপনির্বাচনসহ আগামী পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় কোন্দল যেন কোন প্রভাব না পড়ে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে দলের অভ্যন্তরে নানা আলোচনার পর সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করায় বিএনপি গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত বগুড়া-১ ও যশোর-৬ আসনের উপনির্বাচন বর্জন করে। ফলে আসন্ন উপনির্বাচনগুলোতে বিএনপি অংশ নেবে কি না তা নিয়েও প্রথমদিকে এক ধরনের ধোয়াশা ছিল।

দলের হাইকমান্ড সেই সংশয় উড়িয়ে দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছে। মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। আর মাঠে নেমেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এমন ঘটনা আর যেন না ঘটে তা নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে কঠোর হওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা জানান, উপনির্বাচনকে ঘিরে দলে যে স্থানীয় পর্যায়ের কোন্দল সামনে এসেছে, যা দলের জন্য দুশ্চিন্তার বড় কারণ। শনিবার বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে তাতে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন দলের হাইকমান্ড। এজন্য সাক্ষাৎকারের পর ঢাকা-১৮ আসনের সব প্রার্থীকে ডেকে ভার্চুয়ালেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন। প্রয়োজনে বহিষ্কার করারও হুমকি দিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ঢাকা-৫ এবং নওগাঁ-৬ আসনে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১৭ অক্টোবর। এরপরই অনুষ্ঠিত হবে শূন্য হওয়া অন্য দুটি আসন ঢাকা-১৮ এবং সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচন। গত শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ চার আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ২৮ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিএনপি। এর আগে দুদিন মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা নেওয়া হয়েছে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সাক্ষাৎকার এবং ফরম জমা-উত্তোলনের সময় সম্ভাব্য প্রার্থীরা ব্যাপক শোডাউন করেছেন।

বিশেষ করে ঢাকা-১৮ ও ঢাকা-৫ এর প্রার্থীরা বিপুল সমাগম ঘটিয়ে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন, জমা দিয়েছেন এবং সাক্ষাৎকার পর্বে অংশ নিয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। কার অবস্থান কত শক্ত, এটি জানান দিতে গিয়ে প্রার্থীদের অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে হট্টগোল, মারামারির মতো ঘটনাও ঘটেছে গত শনিবার। গুলশান কার্যালয়ে সাক্ষাৎকার দিতে আসা ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী যুবদল উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন ও মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম কফিল উদ্দিনের সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনায় মাথা ফেটে রক্ত বের হতেও দেখা গেছে কয়েকজনের। এর আগে এস এম জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন না দিতে বিগত নির্বাচনে দলের ৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থী দলের দপ্তরে চিঠি দেন।

দলের সিনিয়র এক নেতা বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের সময় নেতাদের ঘরে বসে থাকার বিষয়টি নতুন নয়। আর কোনো কমিটি ঘোষণা করা হলে পার্টি অফিস দখল এবং মনোনয়ন প্রতিযোগিতার জন্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের বিষয়টি সামনে আসছে। যেই নির্বাচনের ফলাফল কী হবে তা জেনেও এসব উপনির্বাচনে নিয়ে কেন সংঘর্ষ করতে হবে এ প্রশ্ন দলের নেতাকর্মীদের।

এ জন্য সরকারবিরোধী আন্দোলনের বদলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে দলের যারা শক্তি প্রদর্শন করছে তা আর মেনে নেওয়া হবে না। এ ঘটনা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। দোষীব্যক্তির যোগ্যতা থাকলেও মনোনয়ন দেওয়া হবে না। এর বাইরে স্থানীয় পর্যায়ে কোন্দলরত সব নেতাকর্মীরও একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

  • 24
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে