শূন্য পদে আসছেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০; সময়: ৮:৪৭ অপরাহ্ণ |
শূন্য পদে আসছেন তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চলতি বছরেই পূরণ হতে পারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য ছয় পদ। এসব পদে তৃণমূলের যোগ্য, ত্যাগী ও বঞ্চিতদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। এছাড়া জাতীয় চার নেতার পরিবারের যোগ্য সদস্যদের থেকে কাউকে দেখা যেতে পারে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রগুলো বলছে, দলের ২১তম কাউন্সিলে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা পর্যায়ক্রমে যোগ্য নেতাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নিয়ে আসবেন। কেন্দ্রীয় কমিটির চারটি পদে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা বেশি থাকলেও সভাপতিমন্ডলীতে নতুন কেউ আসার সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে বর্তমান কমিটিতে কিছুটা রদবদল হতে পারে। সভাপতিমন্ডলীর সদস্য হিসেবে বর্তমান কমিটিতে থাকা সিনিয়র নেতাদের পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। বর্তমান কমিটির নেতাদের মধ্য থেকে দুজনকে পদোন্নতি দিয়ে সভাপতিমন্ডলীর সদস্য করা হলে ওই দুই পদে বা রদবদলে খালি হওয়া পদেও নতুন কাউকে দেখা যেতে পারে।

জানা গেছে, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ২১তম কাউন্সিল অধিবেশনে আংশিক ও ২৬ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। তবে ধর্ম, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এবং তিনটি কার্যনির্বাহী সদস্য পদ ফাঁকা ছিল। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য করা হয়। এরপর মোহাম্মদ নাসিম ও সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর দুটি পদ শূন্য হয়। এছাড়া সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মারা গেলে আরও একটি সদস্য পদ শূন্য হয়।

সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে সাতটি পদ শূন্য ছিল। এর মধ্যে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপস্নব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিদ্দিকুর রহমানকে কার্যনির্বাহী সংসদের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক করার কথা জানানো হয়। এখনো ছয়টি পদ শূন্য রয়েছে।

সূত্রমতে, চলতি বছরের বাকি সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে শূন্য পদ পূরণ করবে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে তৃণমূলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। বিশেষ করে যেসব জেলায় মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য নেই, কেন্দ্রীয় কমিটিতেও কেউ নেই, এমন জেলা থেকে ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা দেওয়া হতে পারে।

এসব পদের জন্য সম্ভাব্য নেতাদের আমলনামা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে দলের দুঃসময়ে ব্যক্তি ও তার পরিবারের কী অবদান আছে তা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালনকারী জেলা পর্যায়ের কোনো নেতাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়ে আসা হতে পারে।

এদিকে, জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্ব খোঁজা হচ্ছে। কেননা, আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের পর জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একমাত্র মোহাম্মদ নাসিমই দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। তার মৃত্যুতে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যশূন্য হয় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ।

এর আগে প্রতিটি কেন্দ্রীয় কমিটিতে জাতীয় চার নেতার পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০তম জাতীয় কাউন্সিলের পরও চার নেতার পরিবার থেকে অন্তত চারজন সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে ছিলেন। ফলে এবার শূন্য হওয়া পদগুলোতে জাতীয় চার নেতার পরিবারের কাউকে নিয়ে আসার ব্যাপারে চিন্তা করছেন দলের নীতি নির্ধারকরা।

দলের শীর্ষ এক নেতা জানান, এই পদগুলো নিয়ে নেত্রী (শেখ হাসিনা) চিন্তা-ভাবনা করছেন। জাতীয় চার নেতার পরিবারের কাউকে আনা যায় কি না এ নিয়েও তিনি ভবছেন। সময়মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের নাম প্রকাশ করবেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, এরই মধ্যে শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক পদটি পূরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি পদগুলোও পূরণ করা হবে। সেখানে ত্যাগী ও যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হবে।

  • 36
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে