সারাদেশে ফের শুরু হচ্ছে শুদ্ধি অভিযান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০; সময়: ৯:৪৩ অপরাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সারাদেশে ফের শুরু হচ্ছে আওয়ামী লীগের শুদ্ধি অভিযান। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা সবুজ সংকেত এবার ফরিদপুর আদলে সারাদেশে এই শুদ্ধি অভিযান করার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত প্রায়। যেকোন সময়ে এই শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে একসাথে সবগুলো জেলায় নাকি ধাপে ধাপে সবগুলো জেলায় এই অভিযান হবে সে ব্যাপারে কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এছাড়াও জনগণকে জিম্মি করে সেখানে এক ধরণের অপশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল আওয়ামী লীগের কয়েকজন দুর্বৃত্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ফরিদপুরে অভিযান পরিচালনা করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং এখন পর্যন্ত সেখানে দুই ডজনের বেশি দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করেছে যারা আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করতো এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে তাঁরা এলাকায় নিজেদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল।

আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রমতে, আওয়ামী লীগ সভাপতি নিজেই বলেছেন, ফরিদপুরে যেভাবে দুর্বৃত্ত এবং দুর্নীতিবাজদের দমন করা হয়েছে ঠিক একইভাবে সারাদেশে যারা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় দুর্নীতি, অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতা করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্রমতে, সারাদেশে যারা আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন রকমের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত তাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার ব্যক্তির নাম এই তালিকায় রয়েছে বলেও আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী দুই বছর আগে তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন। এই তালিকাটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এই খসড়া তালিকাটি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনির নেতৃত্বে একটি কমিটিকে যাচাই-বাছাই করতে দেন। তালিকাটি যাচাই বাছাইয়ের পর কিছু নাম বাদ যাওয়ার পর প্রায় সাড়ে সাত হাজার অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। এই তালিকাটির মধ্যে কারা কারা অপরাধী এবং কারা কারা বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যাপারে নতুন করে অনুসন্ধান করা হয়েছে। সেখানে প্রায় এক হাজার ব্যক্তি যারা আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দুর্বৃত্তায়নের সঙ্গে জড়িত এবং এখন এদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, কয়েকটি জেলায় এই ধরনের অপরাধীরা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের ছত্রছায়ায় অপকর্ম করছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আগে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এসব জেলার মধ্যে রয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগের দুইটি, রাজশাহী বিভাগের চারটি, রংপুর বিভাগের দুইটি, ও খুলনা বিভাগের দুইটিসহ ২০টি জেলার নাম। ওই সব জেলায় এক সঙ্গে অভিযান হতে পারে। যেখানে স্থানীয় নেতা, এমপি, মেয়র এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে দিয়ে দুর্বৃত্তরা বেড়ে উঠেছে এবং নানারকম অপকর্ম করছে। এই সমস্ত এলাকাগুলোতে যেকোন সময়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সাঁড়াশি অভিযান শুরু হতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সূত্রমতে, শুদ্ধি অভিযানের জন্য তিনটি কৌশলও নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো হলো- যারা অনুপ্রবেশকারী তাদের তালিকা করে তাদেরকে দল থেকে বের করে দেওয়া। যারা প্রচলিত আইনে অপরাধ করছে, তিনি যে-ই হন না কেন আইনকে তাঁর নিজস্ব গতিতে প্রবাহিত করতে দেওয়া এবং যাতে এই সমস্ত দুর্বৃত্তরা দলীয় ছত্রছায়ায় আছে এই জন্যে পার পেয়ে না যায় এবং ভবিষ্যতে যেন এই সমস্ত অনুপ্রবেশকারী দলে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারে নজরদারি বাড়ানো।

  • 143
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে