চলতি মাসেই আ.লীগে শুদ্ধি অভিযান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২০; সময়: ৪:৪৩ অপরাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সারা দেশে দুর্নীতি-অনিয়মসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের ৮ হাজার নেতার একটি তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে এই তালিকা প্রস্তুত করেছেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলীয় সূত্র জানায়, বিতর্কিত এই ৮ হাজার নেতার মধ্যে ৫ হাজারই বিরোধী মতাদর্শী অনুপ্রবেশকারী। অনেকে আবার বড় নেতাদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। তবে যত প্রভাবশালী এবং সরকার কিংবা ক্ষমতাসীন দলের যত ঘনিষ্ঠই হন না কেন, এবার ছাড় পাবেন না কেউ। কারো ব্যক্তিগত অপরাধের দায় নিতে নারাজ সরকার ও দল।

বিতর্কিত নেতাদের বিরুদ্ধে এবার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি মাসেই দেশ জুড়ে জোরালোভাবে শুদ্ধি অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একে একে সব বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ত্যাগীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করাই এর লক্ষ্য।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য জানান, সম্প্রতি কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একটি বার্তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে অপকর্মকারীরা দলের লেবাস ব্যবহার করে ছাড় পাবে না। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। সাংগঠনিক শাস্তি গ্রহণের পাশাপাশি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর তিন জন নেতা জানান, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর চলমান দুর্নীতিবিরোধী শুদ্ধি অভিযান জোরালো করা হবে। বিতর্কিতদের দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। দলের তৃণমূল শাখা সম্মেলনে তাদের অংশগ্রহণও নিষিদ্ধ থাকবে। রেহাই পাবেন না বিতর্কিত এমপিরাও।

ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়নে শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে পাবনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার মধ্য দিয়ে টানা ২৫ বছর পর এ আসনে সাবেক এমপি ডিলু পরিবারের একচ্ছত্র আধিপত্যের পতন হয়েছে।

করোনাকালে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে আরো দুটি আলোচিত ঘটনা হচ্ছে করোনার সনদ জালিয়াতিসহ নানা প্রতারণায় জড়িত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম এবং জেকেজির প্রধান নির্বাহী আরিফুল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মহাপ্রতারক সাহেদ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য পরিচয় দিয়ে সরকার ও দলের মধ্যে প্রভাব বিস্তারের অপতৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন। বুধবার রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদ পারভেজের ৫২টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দিয়েছে আদালত।

বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় সম্পাদকদের কঠোর নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, বিভাগীয় উপকমিটিগুলোতে আর বিতর্কিত বা অনুপ্রবেশকারীদের দেখতে চায় না আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে কোনো কারণে কোনো উপকমিটিতে সাহেদদের মতো কাউকে জায়গা দেওয়া হলে তার দায়দায়িত্ব কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যসচিবকেই নিতে হবে এবং দলের হাইকমান্ডের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে।

বৈঠক সূত্র জানায়, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরে বৈঠকে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ সম্পাদকমণ্ডলীর বেশ কয়েকজন নেতা বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের যেন কোনোভাবেই দলে জায়গা না দেওয়া হয় সে বিষয়ে আলোচনা করেন।

  • 316
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে