বঙ্গরত্ন শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ ॥ প্রাসঙ্গিক ভাবনা

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২০; সময়: ৫:০৬ অপরাহ্ণ |
খবর > মতামত
বঙ্গরত্ন শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ ॥ প্রাসঙ্গিক ভাবনা

প্রফেসর ড. আবদুল খালেক : আমার লেখার শিরোনামে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে ‘বঙ্গরত্ন’ বিশেষণটি দেখে অনেকের মনে নানা রকম প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। কারণ, এর আগে কখনও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে ‘বঙ্গরত্ন’ বিশেষণটি কেউ ব্যবহার করেনি। সম্ভবত কোন এক সময়ে ছাত্রলীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ‘দেশরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করা হয় এবং বিশেষণটি অনেকেই এখন ব্যবহার করে থাকেন। এ ধরনের সম্মাননা সরকার প্রদত্ত নয়। আপামর জনসাধারণের হৃদয়ের গভীর ভালবাসা থেকে এ সম্মাননাগুলো আসে, যেমন- শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, মহাত্মা গান্ধী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। হৃদয়ের অন্তহীন ভালবাসা থেকেই মানুষের মুখে সম্মাননাগুলো উচ্চারিত হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে একদিন তা সমাজে স্থায়ী রূপ লাভ করে।

একই প্রক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে সম্প্রতি ‘বঙ্গরত্ন’ বিশেষণটি সংযোজিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের এক অনুষ্ঠানে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন উপলক্ষে রাজশাহী জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদ গত ৩ অক্টোবর ‘আলোর পথযাত্রী’ শিরোনামে এক অনলাইন আলোচনা সভার আয়োজন করে। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এস এ মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান খান, প্রফেসর ছাদেকুল আরেফিন এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মতিউর রহমান লাল্টু। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর আবুল কাশেম।

রাজশাহী জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি হিসেবে পদাধিকারবলে উক্ত অনলাইন আলোচনা সভার সভাপতিত্বের দায়িত্ব পালন করতে হয় আমাকে। দেশ পরিচালনা এবং দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অসাধারণ অর্জনের কথা বলতে গিয়ে আমি তাঁকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করার আহ্বান জানাই। বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এস এ মালেক আমার প্রস্তাবটির পক্ষে আন্তরিক সমর্থন জ্ঞাপন করেন। বঙ্গবন্ধু পরিষদ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করার অধিকার রাখে। কারণ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সঙ্গে শেখ হাসিনার রয়েছে আত্মিক সম্পর্ক। বঙ্গবন্ধু পরিষদের জন্মলগ্ন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। প্রসঙ্গক্রমে বঙ্গবন্ধু পরিষদের জন্মকথা পর্যালোচনা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের যখন নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, তখন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। যার ফলে তাঁরা নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। দেশে জারি হয় সামরিক শাসন। প্রাথমিকভাবে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর বাসায় শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা আশ্রয় গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধুর খুনীরা যখন দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে, সে পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার জন্য দেশে ফিরে আসা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আন্তরিক সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেন। দিল্লীতে একটি ফ্ল্যাটবাড়ি বরাদ্দ দেয়া হয় শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা এবং শেখ হাসিনার স্বামী বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়াকে তাঁদের বসবাসের জন্য।

১৯৭৬ সালের দিকে ভাগ্যের অন্বেষণে শেখ রেহানা চলে যান লন্ডনে। আশ্রয় গ্রহণ করেন তাঁর খোকা চাচার বাসায়। অর্থের অভাবে তিনি ‘এ’ লেভেলে ভর্তি হতে পারেননি। ১৯৭৬ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে ড. শফিক সিদ্দিকীর সঙ্গে শেখ রেহানা বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়েতে বড় বোন শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকতে পারেননি।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার পর শুধু রাজনৈতিক নেতাদের নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরী এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামকে জেলখানায় আটক করা হয়। উচ্চ আদালতের মাধ্যমে এই দুই উপাচার্য ১৯৭৮ সালে জেল থেকে মুক্তি লাভ করেন। জেল থেকে মুক্ত হয়ে এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং দায়িত্ববোধ থেকে প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরী দেশের প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের সমন্বয়ে গঠন করেন ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’। আওয়ামী লীগের তখন চরম দুঃসময়। দেশের সামরিক সরকার ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর চরিত্র হননের অপচেষ্টায় লিপ্ত। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে চলছে গভীর ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলার লক্ষ্যে প্রফেসর আবদুল মতিন চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী দেশের প্রগতিশীল শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক এবং গুণী ব্যক্তিদের বঙ্গবন্ধু পরিষদের মঞ্চে নিয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ঢাকায় ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’ গঠনের সঙ্গে সঙ্গে দেশ-বিদেশের মানবতাবাদী বুদ্ধিজীবী মহল বঙ্গবন্ধু পরিষদের পতাকাতলে সমবেত হতে থাকেন।

দেশে বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনের পর ১৯৭৯ সালের শেষের দিকে প্রফেসর ড. আবদুল মতিন চৌধুরী অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে এক বছরের একটি ফেলোশিপ নিয়ে লন্ডনে চলে যান। লন্ডনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তখন দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ আওয়ামী লীগ, কেউ বাকশাল। সে এক আত্মঘাতী কলহ। বঙ্গবন্ধু পরিষদ প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর আবদুল মতিন চৌধুরী লন্ডনে আসায় শেখ রেহানা, ড. শফিক সিদ্দিক, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, ড. সেলিম প্রমুখ ভাবতে শুরু করেন যে, লন্ডনে বঙ্গবন্ধু পরিষদের একটি শাখা গঠন করতে পারলে হয়তো আওয়ামী লীগ এবং বাকশালের দ্বন্দ্ব খানিকটা কমানো সম্ভব হবে। সেই ভাবনা থেকে তাঁরা সবাই উদ্যোগী হয়ে ১৯৭৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর লন্ডনের ‘কনওয়ে’ হলে বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে একটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। গবেষণা কাজে ব্যস্ততার কারণে প্রফেসর আবদুল মতিন চৌধুরী মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হতে না পারলেও ড. মতিন চৌধুরীর সহধর্মিণী মিসেস রাজিয়া মতিন চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হয়ে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বের দায়িত্ব পালন করেন। এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক মতবিনিময় সভা। সভায় সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মনোনীত করা হয় স্যার টমাস উইলিয়ামসকে। উদ্দেশ্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ব্যবস্থা করা। স্যার টমাস উইলিয়ামস ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কাজ করেছেন, যার ফলে বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে তাঁর অনেক কিছু জানা ছিল।

১৯৮০ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে কিছুদিনের জন্য দিল্লী থেকে শেখ হাসিনা লন্ডনে আসেন। শেখ রেহানার তখন সন্তান হওয়ার সময়। লন্ডনে এসে শেখ হাসিনা কিছু রাজনৈতিক কর্মসূচী হাতে নেন। যেমন- আওয়ামী লীগ এবং বাকশালপন্থীদের বিরোধ মেটানো এবং আন্তর্জাতিক আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার দাবি। এসব কাজে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদকে সহায়ক শক্তি হিসেবে গণ্য করেন। শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেন স্যার টমাস উইলিয়ামস যখন সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তাঁর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের দাবি তোলা সহজ হবে।

১৯৮০ সালের ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন উপলক্ষে ১৬ ডিসেম্বর লন্ডনের ইয়র্ক হলে একটি শোক সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি স্যার টমাস উইলিয়ামস। সভাপতি হিসেবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা কিভাবে শুরু করা যায়, সে সম্পর্কে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।

সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি স্যার টমাস উইলিয়ামস প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি অতিদ্রুত তদন্ত কমিশন গঠনের কাজে হাত দেন। প্রস্তাবিত তদন্ত কমিশনে স্থান দেয়া হয় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত বিখ্যাত আইরিশ আইনবিদ শন ম্যাকব্রাইড এবং অপর একজন প্রখ্যাত আইনজীবী জেফ্রি টমাস কি সি এমপি মহোদয়কে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮০ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লন্ডনে অবস্থান করেছিলেন। আন্তর্জাতিক আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বিষয়ে মূলত তিনি সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি স্যার টমাস উইলিয়ামসের ওপর গভীর আস্থা রেখেছিলেন। এসব ঘটনা থেকে প্রমাণিত, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সম্পর্ক কতটা ঘনিষ্ঠ এবং আন্তরিক। বঙ্গবন্ধু পরিষদের জন্মলগ্ন থেকে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং এখনও তিনি পৃষ্ঠপোষক। কাজেই বঙ্গবন্ধু পরিষদ থেকে তাঁকে সম্মাননা দেয়া যেতেই পারে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই রাজশাহী জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানে আমি তাঁকে ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করার প্রস্তাব উত্থাপন করেছি এবং কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ এস এ মালেক প্রস্তাবটির প্রতি আন্তরিক সমর্থন জানিয়েছেন।

জানামতে, ছাত্রলীগ প্রদত্ত ‘দেশরত্ন’ সম্মাননাটি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নামের সঙ্গে প্রায়ই ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বিএনপি তাদের দলীয় সভাপতি বেগম খালেদা জিয়াকে ‘দেশনেত্রী’ সম্মানে ভূষিত করেছে। ‘দেশনেত্রী’ এবং ‘দেশরত্ন’ বিশেষণ দুটি অত্যন্ত কাছাকাছি। আমরা জানি এবং সমগ্র বিশ্ব জানে, বাংলা দেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার অর্জন তুলনাহীন। বলা যেতে পারে, শেখ হাসিনার তুলনা একমাত্র শেখ হাসিনাই। তিনি একের পর এক নিজের গড়া উন্নয়ন রেকর্ড নিজেই অতিক্রম করে চলেছেন। যে বাংলাদেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যায়িত করা হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ এখন সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত। যে বিশ্ব ব্যাংক পদ্মা সেতু নির্মাণে নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছিল, তারা এখন বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ নিতে সাধাসাধি করছে। শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি এখন বিশ্বনেতা। শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের রাজনীতিতেই আলো ছড়াচ্ছেন না, সমগ্র বিশ্ব রাজনীতিতেও তিনি আলো ছড়াচ্ছেন।

হাজার বছরের পরাধীন বাংলাদেশকে স্বাধীন করে শেখ মুজিব যেমন ‘বঙ্গবন্ধু’ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন, পাশাপাশি একটি হতদরিদ্র বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত উন্নয়নশীল বাংলাদেশে রূপান্তরিত করার জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত হতেই পারেন। ‘বঙ’ শব্দটি অতি প্রাচীন একটি ঐতিহ্যবাহী শব্দ। প্রাচীন ‘বঙ’ জনপদ থেকেই জন্ম হয়েছে বঙ্গদেশের। বঙ্গদেশ থেকে আজকের বাংলাদেশ। ‘বঙ্গ’ শব্দের বিস্তৃতি অনেক ব্যাপক, ঐতিহ্যের শিকড় অনেক গভীরে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সাফল্য যে পর্যায়ে এসেছে, সমগ্র বিশ্ব রাজনীতিতে যে উচ্চতায় তিনি পৌঁছে গেছেন, সে বিবেচনায় ঐতিহ্যবাহী ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মাননাই তাঁর জন্য অধিকতর মানানসই ও যুক্তিযুক্ত।

বঙ্গবন্ধু পরিষদ একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। জাতীয় সঙ্কটকালে, আওয়ামী লীগের চরম দুঃসময়ে, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ পালন করেছে অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কাছেও রয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের নানা রকম দায়বদ্ধতা। সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে, বিশ্বের বাঙলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে যে অর্থে শেখ মুজিব ‘বঙ্গবন্ধু’ সম্মানে সমাদৃত, যে বিবেচনায় বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ‘বঙ্গমাতা’ সম্মানে ভূষিত; একই দৃষ্টিকোণ থেকে কালজয়ী আন্তর্জাতিকমানের নেত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধু পরিষদ ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করতেই পারে। কেন্দ্রীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে ‘বঙ্গরত্ন’ সম্মানে ভূষিত করার মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করবে, সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।

লেখক : উপাচার্য, নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সাবেক উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।

  • 421
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে