বাঁচতে চায় সুজানগরের শিশু রবিউল

প্রকাশিত: ২৫-০৪-২০২১, সময়: ১৫:২১ |
Share This

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুজানগর : পাবনার সুজানগরে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতদরিদ্র পরিবারের শিশু সন্তান রবিউল বাঁচতে চায়। তার বয়স মাত্র ১৪ বছর । এ বয়সে শিশুরা যখন আনন্দময় শৈশবকে উপভোগ করে। খেলাধুলা ও পড়াশুনায় ব্যস্ত থাকে ঠিক তখন যন্ত্রণায় ভুগছে এবং বাঁচার আকুতি জানাচ্ছে রবিউল। এই বয়সেই তার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণঘাতি রোগ ক্যান্সার।

দারিদ্রতা তার চিকিৎসায় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থের অভাবে তার কেমোথেরাপি বন্ধের পথে। রবিউল সুজানগর উপজেলার ভাঁয়না ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর আব্দুর রশিদ শেখ ও চায়না খাতুনের ছেলে। গোপালপুর আজগর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামিল হোসেন জানান,রবিউল তার বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর একজন ছাত্র।

স্থানীয়রা জানান, গত প্রায় ৮ মাস আগে রবিউল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শে সিরাজগঞ্জ খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে নিয়ে যান বাবা আব্দুর রশিদ। পরে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি ও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করানোর পর রবিউলের শরীরে দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে,রবিউলের ক্যান্সারের ১ স্টেজে আছে যা চিকিৎসা করলে নিরাময় যোগ্য। হতদরিদ্র দিনমজুর পিতা গত প্রায় ৮ মাস ধরে ছেলের চিকিৎসার খরচ যোগান দিতেই সর্বস্বান্ত। এখন চিকিৎসা ব্যয় বহন করা তাদের দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে।

সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সেলিম মোরশেদ বলেন,রবিউলকে কয়েক বছর মেয়াদি চিকিৎসা নিতে হবে। এরমধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি,হিমোগ্লোবিন ও দামি ইনজেকশন।

রবিউলের পিতা আব্দুর রশিদ শেখ বলেন, দিনমজুর হিসেবে অন্যের বাড়িতে কাজ করে প্রতিদিন যে ৩৫০-৪০০ টাকা রোজগার করি সেই টাকা দিয়ে পরিবারের ৫ জন সদস্যের মুখে আহার তুলে দেওয়া সহ সংসারের অন্যান্য খরচ করে কোনমতে জিবন চলে। নিজের বসতভিটা টুকু ছাড়া তাদের আর কিছুই নাই।

এরই মধ্যে ছেলে রবিউলের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ায় এনজিও আশা থেকে ৩০হাজার টাকা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে ২০ হাজার টাকা এবং স্থানীয় একটি এনজিও থেকে ২০ হাজার টাকা লোন নেওয়ার পাশাপাশি এলাকার মানুষ হাট-বাজার থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে দিলে সেই টাকা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করি। প্রতি মাসে ২ বার করে রাজশাহী হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে যেতে হয়।

এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ টাকা ছেলের চিকিৎসার পিছনে ব্যয় হয়েছে। প্রতি মাসে ২ টি করে সর্বমোট ১০টি কেমোথেরাপি দিতে বলেছে চিকিৎসক। এর মধ্যে ৮টি কেমোথেরাপি দিয়েছি। প্রতিটি কেমোথেরাপি দিতে ২০ হাজার করে টাকা লাগছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছে, সব মিলে আরো প্রায় ১ লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু এখন আর কোথায় পাব এ টাকা।

রবিউলের গর্ভধারীনি মা কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন সমাজের কিছু বিত্তবান মানুষ একটু সহযোগিতার হাত বাড়ালেই আমার রবিউল ইনশআল্লাহ সুস্থ হয়ে উঠবে। আবার সে স্কুলে যেতে পারবে। কেউ সহযোগিতার হাত না বাড়ালে প্রয়োজনে আমার নিজের কিডনি বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসা করাতে হবে। শিশু রবিউলের প্রাণ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী সহ সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের নিকট সাহাজ্যের আবেদন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা সহ স্থানীয় এলাকাবাসী। রবিউলের চিকিৎসার সহযোগিতা করতে চাইলে রবিউলের পরিবারের এই নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে ০১৭৭৬৬১৮৮৩১(বিকাশ), অন্যান্য যোগাযোগের নাম্বার ০১৭১৭৭০৩২২৫।

  • 15
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
উপরে