র‌্যাম্পে হেঁটে নজর কাড়লেন ১০০ কেজির ‘গ্ল্যামারাস গার্ল’

প্রকাশিত: ০৮-১২-২০২০, সময়: ১৭:৫২ |
Share This

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : একটি দিনও কাটেনি, যেদিন আমাকে কেউ মোটা বলেনি- আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেছেন গ্ল্যামারাস গার্ল নেহা পারুলকার। বর্তমানে তার ওজন ১০০ কেজি। তবে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তিনি একজন নামকরা প্লাস সাইজের মডেল।

তার স্বপ্নই ছিল মডেল হিসেবে র‌্যাম্পে হাঁটবেন। এজন্য তার শরীর বাধা হতে পারেনি। অনেক চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে তাকে। তবুও নিরাশ হননি এই সাহসী নারী। বিগত চার বছর ধরে নিয়মিত র‌্যাম্পে হাঁটছেন নেহা।

তিনি আক্ষেপের সুরে গণমাধ্যমে বলেছেন, মডেল মানেই আমাদের ধারণা তারা সুন্দরী ও স্লিম হবেন। তবে এটা কারো বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। আমি যখন থেকে মডেল হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলাম, পদে পদে আমার শরীর নিয়ে কথা শুনতে হয়েছে।

অনেকে তো বিশ্বাসই করেনি যে, আমার ওজন ১০০ এর বেশি। যখন তারা আমাকে সরাসরি দেখেছে তখনই দূরে সরে গিয়েছে। তবে এখন আমি একা নই, আমার সঙ্গে আরো নারীরা রয়েছেন। যারা সবাই প্লাস সাইজ নিয়েও মডেল হয়েছেন। আবার অনেকে মডেল হতে আগ্রহী।

আমি কখনোই চাইনি যে, ওজন কমিয়ে মডেলিংয়ে আসতে। কারণ আমার শরীর নিয়ে আমি কখনো লজ্জাবোধ কিংবা আফসোস করিনি। ভারতে আমিই প্রথম নারী যে প্লাজ সাইজ নিয়েও র‌্যাম্পে হেঁটেছি। আর এখন তো নিয়মিত হাঁটছি।

আমার সঙ্গে পথযাত্রী হিসেবে এখন রয়েছেন আরো অনেক নারীরা। যদিও বিশ্ব এখনো প্লাস সাইজের মডেলদের নিয়ে ফ্যাশন শো এবং মডেলিং করানোর জন্য প্রস্তুত নয়। এজন্যই আমরা পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি।

প্লাস সাইজের মডেলদের নিয়ে ভারতে ২০১৬ সালে প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ফ্যাশন শো। তখন আমার সঙ্গে অনুষ্ঠানে আরো অংশগ্রহণ করেছিলেন ১০ জন নারী ও পুরুষ। এরপর থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আমার মতে, য্যোগতা থাকলে সব বিপত্তিই মাড়িয়ে চলা যায়।

চলার পথের প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে নেহা জানান, প্রথমে অনেক ব্র্যান্ডই আমাকে তাদের মডেল করতে নারাজ ছিল। কারণ তাদের কাছে এক্স-এল বা ডাবল এক্স-এল সাইজের কোনো পোশাক থাকত না। এছাড়াও অনেক এজেন্সিরা তাদের লোকশানের ভয়ে প্লাস সাইজের মডেল নিতে আগ্রহী নয়।

সাহসী এই নারী বলেন, শরীরের ওজন বা আকার কারো ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করে না। সুন্দরী মানেই স্লিম হওয়া নয়। এই বিষয়টি প্রমাণ করতে আমার অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে।

ছোটবেলা থেকেই নেহা বেশ হেলদি। এ কারণে ছোট থেকেই বডি শেমিংয়ে পড়তে হয়েছে তাকে। একসময় ডিপ্রেশন থেকে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেন নেহা। জিমে যাওয়া শুরু করেন। তবে বিধি বাম, নেহা স্লিম হতে পারেননি।

মডেলিংয়ের নেশায় পড়েন নেহা পারুলকার। তার এই ইচ্ছা জানার পর থেকে পরিবার এমনকি বন্ধুরাও হাসাহাসি শুরু করে। ১০০ কেজি ওজন নিয়ে নাকি নেহা মডেল হবে, এই কথা ছড়িয়ে পড়ে বন্ধুমহলে। সবাই মজা পেত আর হাসাহাসি করত।

এখন আর কে তাকে থামায়? যারা তাকে নিয়ে একসময় হাসির পাত্রী বানিয়েছিল, তারাই এখন নেহার খবর পড়ে পত্রিকা, জানার্ল ও ম্যাগাজিনে। র‌্যাম্পে হাঁটার দৃশ্যসহ তার সাক্ষাৎকার এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অহরহ। ভারতের এই আবেদনময়ী মডেল প্লাস সাইজ নিয়েও প্রমাণ করেছেন শারীরিক গড়ন নয় বরং যোগ্যতাই আসল।

  • 14
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
উপরে