এবার চাঁদের বুকে প্রথম নারী নভোচারী পাঠাতে চলেছে নাসা

প্রকাশিত: ২৭-০৯-২০২০, সময়: ১৩:২৩ |
Share This

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ২০২৪ সালের মধ্যে চাঁদে প্রথম নারী নভোচারী পাঠাবে নাসা। আর এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৮০০ কোটি মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা। ২০২৫ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের প্রথম ধাপে এই টাকা খরচ হবে।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘আর্টেমিস প্রোগ্রাম’ নামে একটি নতুন প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে তারা। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী ৪ বছরের মধ্যে চাঁদের বুকে প্রথম নারী এবং ১৯৭২ সালের পর প্রথম পুরুষ পাঠাবে তারা।

গ্রীক পুরাণ অনুযায়ী সূর্যদেব অ্যাপোলোর যমজ বোন আর চাঁদের দেবী হলেন আর্টেমিস। তার নাম অনুসারে এই অভিযানের নামকরণ করা হছে। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই অ্যাপোলো-১১ অভিযানের মাধ্যমে চাঁদে প্রথম মানুষ পাঠানো হয়।

নাসার যোগাযোগ বিষয়ক বিভাগের পরিচালক বেটিনা ইনক্লান বলেন, ‘এর আগে ১২ জন নভোচারী চাঁদের বুকে পা রেখেছেন। আর এদের সবাই ছিলেন পুরুষ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।’

সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইনক্লান বলেন, ‘এর আগে ১৯৭২ সালে শেষবারের মতো চাঁদে মানুষ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এপর্যন্ত কোন নারী চাঁদে যাননি’।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে মহাকাশ নীতিমালা নিয়ে একটি চুক্তি ‘স্পেস পলিসি ডিরেক্টিভ ১’ সই করেন। এই চুক্তি অনুযায়ী, ‘চাঁদে দীর্ঘমেয়াদী নীরিক্ষণ’ এর জন্য ১৯৭২ সালের পর প্রথম মানুষ পাঠাবে নাসা। আর এর পাশাপাশি অন্যান্য গ্রহেও অভিযান পরিচালনা করা হবে।

নাসা জানিয়েছে, ‘মহাকাশে যত বেশি অভিযান পরিচালনা করা যাবে, ততই মহাকাশে এক কৌশলগত অবস্থান নিতে সক্ষম হবে যুক্তরাষ্ট্র। আর এতে করে তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও আরও জোরদার হবে।

যে ২৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় ধরা হয়েছে, তার মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে নভোচারীদের বহনকারী যানটি তৈরি করতে।

নাসার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জিম ব্রাইডেনস্টাইন বললেন, ‘‌নাসার ওরিওন মহাকাশযান এবং স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেটকে চাঁদে নিয়ে যাবে আর্টেমিস ১ রকেট।

নাসা জানিয়েছে, এই বড়দিনের মধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসকে ৩২০ কোটি ডলারের অনুমোদন দিতে হবে। তারপরেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। ল্যান্ডিং মডিউলের জন্যই লাগবে ১৬০ কোটি ডলার।

প্রকল্পের কয়েকটি ধাপ রয়েছে। প্রথমে নাসা মানবহীন একটি যান পাঠাবে ২০২১ সালে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বে যাবেন মহাকাশচারীরা।

আর্টেমিসে যে নভোচারীরা চাঁদে নামবেন, তারা চাঁদের অদেখা জায়গাগুলো ঘুরে দেখবেন। সেখান থেকে মহাকাশ নিয়েও গবেষণা চালাবেন তারা। যন্ত্রের বদলে মানুষ নিজে গেলে পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ সম্পর্কে আরো বেশি তথ্য জানা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১৯৬০ সালের ১৬ জুলাই রওনা দিয়ে ২০ জুলাই চাঁদে নেমেছিল নাসার মহাকাশযান অ্যাপোলো-১১। চাঁদের বুকে পা রেখেছিলেন প্রথমে নীল আর্মস্ট্রং এবং পরে এডউইন ওরফে বাজ অলড্রিন।

অ্যাপোলো ১১–র মধ্যে ছিলেন মাইক কলিন্স। মহাকাশচারীরা পৃথিবীতে ফিরেছিলেন ২৪ জুলাই। তাদের রকেট নেমেছিল প্রশান্ত মহাসাগরে। তবে নাসার পুরো চন্দ্রাভিযান শেষ হয়েছিল ১৯৭২ সালে। তাতে খরচ হয়েছিল ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

যদিও এ ব্যাপারে বিতর্ক রয়েছে যে নাসা সে সময় কোনও মানুষ পাঠায়নি চাঁদে। তৎকালীন শীতযুদ্ধে রাশিয়াকে হারাতেই এই ছক কষেছিল আমেরিকা। চাঁদে আর্মস্ট্রং–এর পা রাখা ওই ছবি মেরু প্রদেশের কোনও তোলা। কারণ মাত্র আটদিনের মাথায় চাঁদে গিয়ে ফের পৃথিবীতে ফিরে আসা সেই সময় অসম্ভব বলেই মনে করেন একদল বিজ্ঞানী।

তাছাড়া চাঁদে পোঁতা মার্কিন পতাকার সামনে দাঁড়ানো আর্মস্ট্রং–এর ছবিতে দেখা গিয়েছিল পতাকা উড়ছে। যদিও পরবর্তীকালে চাঁদ নিয়ে গবেষণা আবিষ্কার হয় চাঁদে বাতাস নেই। তাই পতাকা ওড়া সম্ভব নয়।

  • 8
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
উপরে