গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ আসবে শনিবার

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২২; সময়: ১:৩৩ অপরাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : মহান একুশের অমর সংগীতের রচয়িতা বর্ষীয়ান সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ আগামীকাল শনিবার (২৮ মে) দেশে আসবে। ওইদিন সকাল ১১টায় বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনের সার্বিক তত্ত্বাবধনে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিজি ২০২ যোগে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবে।

বিমানবন্দরে সরকারের পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক তার লাশ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করবেন। মরদেহে সর্বসাধারণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, জানাজা ও সমাহিতকরণ ঘিরে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বেলা ১টা থেকে ৩ ঘটিকা পর্যন্ত সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আবদুল গাফফার চৌধুরীর লাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে রাখা হবে। এ সময় ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদর্শন করে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হবে।

বেলা সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে তার প্রথম জানাযার নামাজ। সেখান থেকে বিকেল ৪টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তার মরদেহ নিয়ে আসা হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে। সেখানে লাশ থাকবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এরপর সেখান থেকে লাশ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের। বিলে সাড়ে ৫টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার মরদেহ সমাহিত করা হবে।

কয়েক মাস চিকিৎসাধীন থেকে গত ১৯ মে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ৫৯ মিনিটে লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে মারা যান আবদুল গাফফার চৌধুরী। পরদিন শুক্রবার পূর্ব লন্ডনের ব্রিকলেইন মসজিদে তার প্রথম নামাজে জানাজা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। তার আরেক মেয়ে দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভুগে কিছুদিন আগে মারা যান।

১৯৩৪ সালে বরিশালে জন্ম নেওয়া গাফ্‌ফার চৌধুরী ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ অনার্স পাস করে ইত্তেফাক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার রাজনৈতিক পত্রিকা ‘চাবুক’ এর দায়িত্ব নেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকারের মুখপাত্র ‘জয়বাংলা’য় কাজ করেন গাফ্‌ফার চৌধুরী। ১৯৭৪ সালে অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান তিনি। এরপর সেখানেই স্থায়ী হন। লন্ডন থেকে দেশের সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লেখেন তিনি।

১৯৪৬ সালে স্কুলের ছাত্র অবস্থায় কলাম লেখা শুরু করেন আবদুল গাফ্‌ফার চৌধুরী। বরিশাল হিতৈষী পত্রিকায় তার প্রথম লেখার শিরোনাম ছিল ‘সমাচার সন্দেশ’। ৬০ বছর ধরে মিঠাকড়া, ভীমরুল, তৃতীয় মত, কাছে দূরে, একুশ শতকের বটতলায়, কালের আয়নায়, দৃষ্টিকোণ ইত্যাদি শিরোনামে কলাম লিখেছেন তিনি।

কলাম ছাড়াও কবি, নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিত তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার ওপর লেখা ‘পলাশী থেকে ধানমণ্ডি’ তার বিখ্যাত নাটক।

১৯৫০-এর দশকে সাংবাদিকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। পেশাগত কাজে সফলতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদক, ইউনেস্কো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মানিক মিয়া পদকসহ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পদক ও পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে