মুনিয়ার মৃত্যুতে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি আনভীরের ‘দোষ পায়নি’ পুলিশ

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২১; সময়: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ |
মুনিয়ার মৃত্যুতে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি আনভীরের ‘দোষ পায়নি’ পুলিশ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়াকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের কোনো ‘দোষ পায়নি’ পুলিশ। মুনিয়ার বোনের করা এ মামলার অভিযোগ থেকে আনভীরকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে গুলশান থানা পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেছেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৯ জুলাই আদালতে ওই ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ দাখিল করেন।

তিনি বলেন, “মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”

গত ১৯ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। ঢাকার গুলশানের এই ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।

ঢাকার গুলশানের এই ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।
সেখানে বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।

মামলা হওয়ার পর পুলিশের আবেদনে আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। তবে তার স্ত্রী- সন্তানসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য লকডাউনের মধ্যে বিমান ভাড়া করে দুবাই চলে যান।

অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কখনো কথা বলেননি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। এপ্রিলের শেষ দিকে তার আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হলেও মহামারীর মধ্যে লকডাউনে সে আবেদনের শুনানি তখন আর হয়নি।

মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকেন। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি।

মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধার করে পুলিশ, যার মধ্যে ছয়টি ডায়েরি ছিল। সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করে মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথাও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

বড় বোন তানিয়া সে সময় বলেছিলেন, “মুনিয়া ডায়রি লিখত। সেখান থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে।”

তিনি বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে গ্রেপ্তারের দাবি জানালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সে সময় বলেছিলেন, তদন্তে প্রমাণ পেলে তখনই তারা ব্যবস্থা নেবেন।

তানিয়া তার মামলায় আনভীরকে আসামি করলেও মুনিয়ার ভাই আশিকুর রহমান সবুজ দাবি করেন, তার বোন মুনিয়াকে হত্যা করা হয়েছে এবং হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুন চৌধুরী তাতে ‘জড়িত’।

মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের পাঁচ দিন পর তিনি ঢাকার আদালতে হত্যা মামলার আবেদন নিয়ে গেলেও আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার তদন্ত চলায় আপাতত নতুন মামলার কার্যকারিতা স্থগিত রাখার আদেশ দেন বিচারক।

আশিকুরের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় শারুন সে সময় বলেছিলেন, “বসুন্ধরা গ্রুপ ইস্যুটাকে ভিন্ন খাতে নিতে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি এই ঘটনায় সম্পৃক্ত নই। আইন এবং বিচারের প্রতি আমার শতভাগ আস্থা আছে।”

  • 137
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে