শতাধিক রোহিঙ্গার এনআইডি করে দেয়াই পুলিশ, ইসি কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ায় তিন পুলিশ সদস্য, একজন নির্বাচন কর্মকর্তা ও ১৩ রোহিঙ্গাসহ ১৭ জনের নামে মামলা করেছে দুদক।
সংস্থাটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে দুইশ’র বেশি রোহিঙ্গাকে জাতীয় পরিচয় দেয়া হয়েছে। যাদের অনেকে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার পর পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। এ ঘটনাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে দুদক।
কক্সবাজারের সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নে দুইশ’র বেশি ব্যক্তি রয়েছেন, যারা জন্মসূত্রে মায়ানমারের নাগরিক। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ভোটার তালিকায়ও নাম লিখিয়েছেন। পরে তা ব্যবহার করে পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে চম্পট দিয়েছেন অনেকেই।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তা, পুলিশ এবং রোহিঙ্গাদের একটি চক্র এ জালিয়াতিতে জড়িত। ২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে হয়েছে এ দুর্নীতি। বৃহস্পতিবার দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন সংস্থার উপসহকারী পরিচালক শরিফ উদ্দিন।
দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের সাতটি ল্যাপটপ যা দিয়ে এনআইডি কার্ড তৈরি হয় তা মিসিং ছিল। এই ল্যাপটপগুলো দিয়েই তারা এই কাজ করতো।
মামলায় আসামি করা হয়েছে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত রুহুল আমিনকে। যিনি ওইসময় কক্সবাজার পুলিশের বিশেষ শাখায় দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া ওইসময় দায়িত্বরত পুলিশের দুই পরিদর্শক মিজানুর রহমান ও প্রভাষ চন্দ্র ধরকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। জালিয়াতিতে জড়িত থাকায় কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে। যিনি ওইসময় কক্সবাজারের অতিরিক্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তা ছিলেন।
এ ঘটনাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি মনে করে দুদক। দুদক সচিব বলেন, সরকার যাদেরকে আমাদের দেশের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি তারা যদি এনআইডি কার্ড পেয়ে যায় দেশে-বিদেশে গিয়ে কোন অপকর্ম করে তাহলে তার দায় কিন্তু আমাদেরই নিতে হবে। তদন্তের প্রয়োজনে আসামিদের গ্রেপ্তারও করা হতে পারে বলে জানালেন সংস্থার সচিব।