কমছে না বিদেশে অর্থ পাচার

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২১; সময়: ৮:৪১ অপরাহ্ণ |
খবর > জাতীয়
কমছে না বিদেশে অর্থ পাচার

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে কমছে না টাকা পাচারের ঘটনা। একাধিক সংস্থার কাছে হাজারের উপর প্রতিবেদন থাকলেও, মামলা হয়েছে হাতে গোনা। সেগুলোও আটকে আছে আইনি জটিলতায়।

দুদক বলছে, মামলার ফল না আসা পর্যন্ত পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আর বিশ্লেষকদের অভিযোগ, সরকার আন্তরিক নয় বলেই টাকা পাচার বাড়ছে। গতবছরও বেরিয়ে গেছে ৫ লাখ কোটি টাকা।

জানান গেছে, বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ঘটনা বহুদিনের। তবে নতুন করে আলোচনায় আসে ২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। তার বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে ২২৭ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পায় দুদক।

দেশের বাইরে টাকা সরিয়ে বাড়ি কেনার খবরও পুরোনো। কিন্তু এবার নাম এসেছে সংসদ সদস্যদের। নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের স্ত্রী, জান্নাতীর নামে কানাডার এ বেগম পাড়ায় সাড়ে ১২ কোটি টাকায় বাড়ির খবর প্রচার হয়েছে গণমাধ্যমে। আমলারাও কম যান না। জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বয়ং।

দেশের ইতিহাসে অর্থপাচারের বড় খলনায়ক পিকে হালদার। একাই ১০ হাজার ২০০ কোটি টাকা পাচার করে পালিয়ে গেছেন অনায়াসেই।

গেল ৫ বছরে অর্থ পাচারের ১০২৪টি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট। বিদেশি সংস্থার উপাত্তেও মিলেছে ভয়াবহ খবর। জিএফআইসহ বিভিন্ন সূত্র বলছে, ২০২০ সালে দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের আমানত সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। ৮৪ বাংলাদেশির টাকা পাচারের তথ্য এসেছে পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে। কিন্তু মামলা হয়েছে হাতে গোনা।

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলনে, ২০১৮-২০ এর মধ্যে ৭৭ টি মামলা হয়েছে মানি লন্ডারিংয়ের। ৫০টি মামলা চার্জশিট হয়ে ট্রায়ালে আছে। আর বাকি ২৭টি মামলার তদন্ত হচ্ছে। এগুলো কোর্টে আসতে অনেক সময় লাগে, মমলা নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগে। প্রত্যেকটা ধাপ চ্যালেঞ্জ করা হয়।

অর্থ পাচার রোধে আছে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন। সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধ ও টাকা পাচার প্রতিরোধে তথ্য লেদেনের জোট ১৫৯ দেশের এগমন্ড গ্রুপের সদস্যও হয়েছে বাংলাদেশ। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না ।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সদিচ্ছার ঘাটতি, স্বচ্ছতা ও দৃঢ়তার ঘাটতি এর (অর্থ পাচার) অন্যতম কারণ। যারা অর্থ পাচারর সাথে জড়িত তাদের একটা বড় অংশ রুইকাতলা জাতীয়, যারা আসলে ক্ষমতা ও রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত। সে কারণে তাদের হাত দেয়া হয় না।

প্রশ্নবিহীনভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বহুবারই দিয়েছে সরকার। অর্থবিলের এমন বিধান টাকাকে অপ্রদর্শিত রাখার মানসিকতাকে উসকে দেয় বলে মত আইনজীবীদের।

কোম্পানি আইন বিশ্লেষক ব্যারিস্টার এম এ মাসুম বলেন, ফাইনান্স অ্যাক্ট ২০২০ এ বলা হয়েছিল, অপ্রদর্শীত টাকার ১০ শতাংশ দিলেই বৈধ করা যাবে। সেটা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। সেই সাথে মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট ২০১২ এর সাথেও সাংঘর্ষিক। এভাবে খোলা চেক দিয়ে দিলে মানি লন্ডারিং ঠেকানো যাবে না।

দুদক মোট ৬০ ব্যক্তির অর্থ পাচারের তথ্য চেয়ে ১৮টি দেশে চিঠি দিয়েছিলো। তার মধ্যে ৩০ জনের ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে দুদক।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে