নিজ ঘরেই দুর্নীতির অভিযোগ পাচ্ছে দুদক

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২১; সময়: ১০:৫২ অপরাহ্ণ |
নিজ ঘরেই দুর্নীতির অভিযোগ পাচ্ছে দুদক

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : শর্ষের মধ্যেই ভূত-এই প্রবাদটি যেন অতি সত্য হয়ে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকে।

গত পাঁচ বছরে দুনীতিবিরোধী এই সংস্থাটির শতাধিক কর্মকতা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। শর্ষের ভূত তাড়াতে এবার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি। গঠন করা হয়েছে উচ্চপর্যায়ের বিশেষ কমিটি।

২০১৯ সালে পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানকে দায়মুক্তি দিবেন বলে চল্লিশ লাখ টাকা ঘুষ নেন দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। সুনির্দিষ্ট এমন অভিযোগে নিজেদের কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারও করে দুদক। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় চাকরি খোয়ান দুদকের ওই পরিচালক। দিন কাটছে এখন কারাগারে।

দুদকের বিভিন্ন নথিপত্র ঘেটে দেখা গেছে, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তি পেয়েছেন একশোর বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের মধ্যে সংস্থার পরিচালক, উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, উপসহকারী পরিচালকসহ তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী রয়েছেন। চাকরিচ্যুত, বাধ্যতামূলক অবসর, বেতন কমানোসহ অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হয়েছে তাদের।

শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর শাস্তিও প্রতিষ্ঠানটিকে সম্পূর্ণ দূনীতিমুক্ত করতে পারেনি। এখনো একশ্রেনীর কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে। অভিযুক্তর সাথে যোগসাজশ, আসামিকে কৌশলে ভয়ভীতি দেখিয়ে ঘুষ গ্রহণ, অপরাধীকে অব্যাহতি, প্রতিবেদন দিতে কালক্ষেপণসহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাচ্ছেন উর্ধতন কর্মকর্তারা। এছাড়াও কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বৈধ আয়ের সঙ্গে সম্পদ এবং জীবনযাপনেরও মিল পাওয়া যাচ্ছে না।

চলতি বছরের ১০ই মার্চ দুদকে যোগ দিয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ সংস্থাটির ভেতরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনার কথা বলেন। এমন প্রেক্ষাপটে নিজ প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে দুদকের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠণ করেছে সংস্থাটি।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহবুব খান বলেন, বাইরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি নিয়ে দুদক অনেক কাজ করে। কিন্তু আমাদের নিজেদের ভেতরের দুর্নীতির যে প্রবণতা রয়েছে সেগুলো কিভাবে নির্ধারণ করা হবে সেজন্যই বর্তমান কমিশন এই কমিটি গঠন করেছে।

অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি বন্ধে এক মাসের মধ্যে এ কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলেছে কমিশন। মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব খান বলেন, আমাদের এক মাসের সময় দেয়া হয়েছে কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের সিস্টেম আরও উন্নত করা যায়। কিভাবে অনিয়ম বা দুর্নীতি দূর করা যায় সে বিষয়ে আমরা একটা প্রস্তাব প্রস্তুত করবো।

নিজ ঘরে দুর্নীতি বন্ধে এরইমধ্যে সংস্থাটির কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

  • 27
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে