সোহরাওয়ার্দী স্মরণে বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০২০; সময়: ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ |
খবর > জাতীয়
সোহরাওয়ার্দী স্মরণে বঙ্গবন্ধু

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক বাণীতে আশা প্রকাশ করে বলেন যে, ‘মহান নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর গণতান্ত্রিক আদর্শ অনুসরণ করে, জাতি শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার যুদ্ধে ও সংগ্রামে এগিয়ে যাবে।’ ১৯৭২ সালের এই দিনে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রচারিত একটি বাণীতে বঙ্গবন্ধু তার নেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতি দেশ গড়ার সংগ্রামে এগিয়ে যাবে।

বঙ্গবন্ধুর দেওয়া বাণীর পূর্ণ বিবরণীতে ছিল— ‘স্বাধীন বাংলার মুক্ত অঙ্গনে গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন বিশেষ অর্থবহ। বাংলার মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণে সোহরাওয়ার্দী ছিলেন হিমাচলের মতো অবিচল ও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন।

বাংলাদেশ অবজারভার, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭২তিনি অন্যায়, অসত্য ও অসুন্দরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। তিনিও তার দেশের দেশবাসীর সঙ্গে অত্যাচারিত নিপীড়িত হয়েছেন। কিন্তু তিনি তার নির্দিষ্ট লক্ষ্য পথ থেকে কখনও বিচ্যুত হননি। তারই অগ্নিমন্ত্রে দেশবাসী আজ মুক্ত। জাতীয় নেতার মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আমি কামনা করি, তারই আদর্শের অনুসারী জাতি গণতন্ত্রের শপথে বলিয়ান হয়ে শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার সংগ্রামে এগিয়ে যাবে। আমার বিশ্বাস, জাতির জয় হবে। জয় বাংলা।’

পাকিস্তান বিচার চাইতে পারে না
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‘পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বিচার করার কোনও অধিকার পাকিস্তানের নেই। কারণ, এটা সব রকম নৈতিক ও মানবিক রীতিনীতির পরিপন্থী।’ এনা পরিবেশিত খবরে বলা হয় যে, পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বিচার করা হবে বলে প্রেসিডেন্ট ভুট্টো হুমকি দিয়েছেন। তার ওপর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান এসব কথা বলেন। ৯ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের শেষে দেশে ফেরার পথে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাঙালিরা কোনও অপরাধ করেনি।’ তিনি জানতে চান, এসব আটক নিরীহ বাঙালিদের বিচার করার হুমকি দিয়েছেন কেন? উল্লেখ্য যে, দখলদার আমলের ৯ মাসে বাংলাদেশে গণহত্যা, নারী নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের মতো জঘন্য অপরাধে অপরাধী পাক যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হলে, তার পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের বিচার করার হুমকি দেযন ভুট্টো। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, হত্যাকারীরাই আজ বিচারের কথা বলছে। যারা হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর অপরাধে অপরাধী, তারা কোন অভিযোগে নিরীহ বাঙালিদের বিচারের কথা বলছে?’

দৈনিক বাংলা,৬ ডিসেম্বর ১৯৭২বাংলাদেশের স্বীকৃতি চাইলো যুদ্ধবন্দিদের পরিবার

বাংলাদেশকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দান ও পাকিস্তানে আটক বাঙালিদের ফিরিয়ে আনতে সরকারি প্রচেষ্টার সমর্থনে ভারতে আটক পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিদের হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ পরিবার পিন্ডির রাজপথে শোভাযাত্রা বের করে। শিশু ও নারীসহ ১০ হাজার মিছিলকারী অবিলম্বে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিতে স্লোগান প্রদান করে।

দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭২বাংলাদেশ-ভারত সাধারণ সীমান্ত শান্তি ও শুভেচ্ছা

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ও ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি ১৯৭২ সালের এই দিনে এই মর্মে আস্থা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশ ও ভারতের সাধারণ সীমান্ত বরাবর শান্তি ও শুভেচ্ছার আন্তরিকতা টিকে থাকবে। ভারতের রাষ্ট্রপতির আস্থা,
দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ -২বাংলাদেশে যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির দেশ, শুভেচ্ছা ও পারস্পরিক সমঝোতার মনোভাব নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলেছে ভারত। ভারতীয় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনাকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান ভারত সরকার ও সেদেশের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের শুভেচ্ছা বাণী পৌঁছে দেন।

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে