সংসদের আজকের বৈঠকে যা থাকছে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২০; সময়: ১:০৭ অপরাহ্ণ |
খবর > জাতীয়
সংসদের আজকের বৈঠকে যা থাকছে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ইতিহাসে প্রথম বিশেষ অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম সোমবার শুরু হচ্ছে। আজ সোমবারসহ চার দিন বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম চলবে। অবশ্য চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের ১০ম এ অধিবেশন রবিবারই শুরু হয়েছে।

সংসদের বৈঠকের কার্যসূচি থেকে জানা গেছে মুজিববর্ষ উপলক্ষে আজকের বিশেষ অধিবেশন সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে। অধিবেশনের শুরুতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংসদ কক্ষে প্রবেশ করবেন। এরপর জাতীয় সংগীত প্রচার হবে। জাতীয় সংগীতের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের (১০ জানুয়ারি ১৯৭২) ভাষণ প্রচার করা হবে সংসদ কক্ষে। এরপর রাষ্ট্রপতি মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশনে ভাষণ প্রদান করবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর আবারও জাতীয় সংগীত প্রচার হবে এবং তিনি সংসদ কক্ষ ত্যাগ করবেন। এরপর কিছুক্ষণের জন্য বিরতি দেওয়া হবে সংসদের বৈঠক।

বিরতি শেষে সংসদের বৈঠক শুরু হলে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় জীবন নিয়ে ১৪৭ বিধিতে আলোচনার জন্য সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করবেন।

সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালীন সংসদের বৈঠকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার স্বার্থে রোস্টার ভিত্তিক পরিচালিত হলেও বিশেষ অধিবেশনের আজকের বৈঠক সকল সংসদ সদস্যের জন্য উন্মুক্ত থাকছে। সংসদের বৈঠকে যোগদানের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সকল সংসদ সদস্যের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হয়েছে। করোনা নেগেটিভ আসা সকল সদস্যই আজকের বৈঠকে যোগদানের সুযোগ পাবেন। সব সংসদ সদস্য নমুনা পরীক্ষা করেছেন, তাদের মধ্যে ৬ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এছাড়া আরও কয়েকজন সদস্য আগে থেকেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এসব করণে আক্রান্ত এমপি বাদে সবাই আজকের বৈঠকে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন।

অবশ্য আজকের বৈঠকে সকল এমপি উপস্থিত থাকলেও আগামীকাল থেকে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে আগের মতো রোস্টার ভিত্তিক এমপিরা অংশ নেবেন। সংসদে কোরাম পূর্ণ হওয়ার স্বার্থে প্রতিদিন ৮০/৯০ জনের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে গত ২১ অক্টোবর একাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনটি আহ্বান করেন। ২০২০ সালের পঞ্চম এ অধিবেশনটিকে মুজিববর্ষের বিশেষ অধিবেশন ঘোষণা করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গত ২২ মার্চ এই বিশেষ অধিবেশন (৭ম অধিবেশন) আহ্বান করেছিলেন রাষ্ট্রপতি। এ অধিবেশন দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের কথা ছিল, তবে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ার কারণে শেষ সময়ে রাষ্ট্রপতি তা স্থগিত করেন।

দেশে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের অফিস-আদালত খুলে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে সর্বশেষ নতুন করে এ অধিবেশন ডাকা হয়।

গত ২২ মার্চের স্থগিত হওয়া বিশেষ অধিবেশনে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি সদ্য প্রয়াত প্রণব মুখার্জিসহ একাধিক বিদেশি অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও এবার অধিবেশনে বিদেশি কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্যরাই জাতির পিতার কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করবেন এ বিশেষ অধিবেশনে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে দুটি বিশেষ বৈঠক বসলেও বিশেষ অধিবেশন কখনও বসেনি। ১৯৭৪ সালের ৩১ জানুয়ারি ও ১৮ জুন সংসদে যে বিশেষ বৈঠক বসেছিল, সেখানে যুগোস্লাভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো এবং ভারতের রাষ্ট্রপতি বরাহগিরি ভেঙ্কট গিরি (ভি ভি গিরি) ভাষণ দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপনে এ বছরকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করে নানা কর্মসূচি নিয়েছিল সরকার। তার অংশ হিসেবে এই বিশেষ অধিবেশন আয়োজনসহ জাতীয় সংসদের পক্ষ থেকে বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে সরকার তার কর্মসূচি কাটছাঁট করে এবং ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পালন শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে সংসদ সচিবালয়ও তার কর্মসূচি কাটছাঁট করেছে।

  • 6
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে