শুরু হল দেশের ইতিহাসে সংসদের প্রথম বিশেষ অধিবেশন

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২০; সময়: ৭:০৮ অপরাহ্ণ |
শুরু হল দেশের ইতিহাসে সংসদের প্রথম বিশেষ অধিবেশন

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত এই বিশেষ অধিবেশন রোববার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয়। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হল একাদশ সংসদের এই দশম অধিবেশন। সংসদ কক্ষে জাতির জনকের ছবিসহ এটাই সংসদের প্রথম বৈঠক।

এটি বিশেষ অধিবেশন হলেও এর প্রথম কার্যদিবস চলবে সাধারণ অধিবেশনের মতো। অধ্যাদেশ উপস্থাপন, কয়েকটি খসড়া আইন ও বিলের প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মনোনয়ন দেন। এ অধিবেশনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা হলেন- আবুল কালাম আজাদ, বীরেন শিকদার, শামসুল হক টুকু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, উম্মে কুলসুম স্মৃতি।স্পিকার-ডেপুটি স্পিকারের অনুপস্থিতিতে এদের মধ্যে অগ্রবর্তীজন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন। সোমবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের স্মারক বক্তৃতার মাধ্যমে শুরু হবে বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম।

রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার আগে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণ সংসদ কক্ষে দেখানো হবে। বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় রাজনৈতিক জীবন নিয়ে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার পর তা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সাধারণ প্রস্তাব আনা হবে।ওই প্রস্তাবের উপর সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যদের আলোচনা শেষে তা পাস হবে। অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার পরে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জীবন নিয়ে আলোচনা হবে।

সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরপর আগামী সপ্তাহে দুই বা তিন দিন সাধারণ বৈঠক চলার মাধ্যমে অধিবেশনটি শেষ হতে পারে।অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার সংসদ কক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির স্থাপনের বিষয়টি অবহিত করেন। করোনাভাইরাস মহামারীকালের আগের তিনটি অধিবেশনের মতো এবারও সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ অধিবেশনের কার্যক্রম চলবে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সাড়ম্বরে উদযাপনে এ বছরকে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করে নানা কর্মসূচি নিয়েছিল সরকার। তার অংশ হিসেবে গত ৯ জানুয়ারি সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই বিশেষ অধিবেশন করার সিদ্ধান্ত হয়।

কথা ছিল, ২২-২৩ মার্চ এই বিশেষ অধিবেশন হবে। অধিবেশনের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণ দেবেন। এরপর বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন নিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হবে।কিন্তু বিশ্বের অন্য সব দেশের মত বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকলে মুজিববর্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কাটছাঁট করা হয়, সংসদের বিশেষ অধিবেশনও স্থগিত হয়ে যায়।

এবার অধিবেশনে যোগ দিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানো হচ্ছে সংসদ সদস্যদের। মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হওয়ার পর এটি চতুর্থ অধিবেশন। সোমবার কোভিড-১৯ নেগেটিভ সকল আইনপ্রণেতা সংসদে থাকতে পারবেন। তবে এর পর থেকে তালিকা করে প্রতিদিন ৮০ জনের মতো সংসদ সদস্য সংসদ অধিবেশনে অংশ নেবেন।

অধিবেশন চলাকালে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করবেন তাদের সবার কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। মার্চে যে বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল, সেখানে প্রতিবেশী দেশগুলোর স্পিকারদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা ছিল; কিন্তু তখন তা স্থগিত হয়।

এদিকে ৯ নভেম্বর বিশেষ অধিবেশনে সংসদ কক্ষে দেশীয় বিভিন্ন অতিথিকে আমন্ত্রণ জানাতে না পারছেন বলে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।বিভিন্ন জনের কাছে পাঠানো কার্ডে স্পিকার বলেছেন, “বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি জনিত কারণে বিশেষ অধিবেশন স্বশরীরে প্রত্যক্ষ করার জন্য সংসদ ভবনে আপনাকে আমন্ত্রণ জানাতে অপরাগ হওয়ায় আন্তরিকভাবে দুঃখিত।”

সভাপতিমণ্ডলীর মনোনয়নের পর স্পিকার শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন।সাবেক গণপিরষদ সদস্য সৈয়দ একেএম এমদাদুল বারী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, নুরুল ইসলাম, খন্দকার গোলাম মোস্তফা, শামছুল হক তালুকদারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সংসদ।

এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক, কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার, সাংবাদিক আবুল হাসনাত, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলী, হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীসহ বিশিষ্ট কয়েকজনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।

করেনানাভাইরাসে আক্রান্ত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের মৃত্যুতে সংসদ শোক প্রকাশ করে। একই সঙ্গে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য শোক প্রকাশ করা হয়।

  • 4
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে