‘সামনে আমাদের যুদ্ধ আছে’
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘কোভিড যুদ্ধ চলছে এবং চলবে। পৃথিবী থেকে কবে এই ভাইরাস বিদায় নেবে কেউ জানে না। সামনে আমাদের যুদ্ধ আছে।’
কয়েক সপ্তাহ দেশে করোনা সংক্রমণ কমতির দিকে থাকলেও সম্প্রতি আবার বেড়েছে। এদিকে, শীতের সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আশঙ্কা প্রকাশ করে সবাইকে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাঝে টেস্ট কমে গিয়েছিল। গত সপ্তাহে টেস্ট বেড়েছে, সেই অনুসারে রোগী বেড়েছে। এখনও শুধু উপসর্গ থাকা রোগীরাই পরীক্ষা করাতে আসছেন। উপসর্গহীন ব্যক্তিদেরও যদি পরীক্ষা করা যায়, তাহলে রোগীর সংখ্যা বাড়বে।
করোনা আবার বাড়তে পারে বলে গত ১১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করে জানিয়েছেন, এখনও করোনাভাইরাসের প্রভাব আছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরেকবার হয়তো প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। কারণ ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে আবার নতুন করে তা দেখা দিচ্ছে। এ আশঙ্কা সামনে রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসহ ২২টি মন্ত্রণালয়কে আগাম প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পরীক্ষা বাড়লে রোগী আরও বাড়বে এটা শুরু থেকেই বলেছি। মাঝে মানুষ পরীক্ষা করাতে আসেনি। গত সপ্তাহে টেস্ট বেড়েছে। রোগীও বেড়েছে। টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, ‘শীতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়বে বলে আগেই আমরা আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলাম। উত্তরবঙ্গে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। শীতের সময় নিউমোনিয়া, ঠান্ডা, কাশি, জ্বর এগুলো হয়। এবার যোগ হয়েছে করোনা।’
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ৬৩৭ জনের। এখন পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্ত ৩৯ লাখ ২০৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২১ জন। মোট মৃত্যু পাঁচ হাজার ৬৮১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষাও বেড়েছে। এ সময়ে পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ১৪৬টি। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৮১ শতাংশ। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯১ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিদিনের করোনা সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে সংক্রমণের ৪১তম সপ্তাহে (৪ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর) পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৮১ হাজার ৭২৩টি, আর শনাক্ত হয়েছে নয় হাজার ৫০৮ জনের। এ সময় সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ২৯৬ জন, আর মৃত্যু হয়েছে ১৭৫ জনের।
ঠিক পরের সপ্তাহেই অর্থাৎ ৪২তম সপ্তাহে (১১ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর) পর্যন্ত নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ৯০ হাজার ১৭৪টি, এ সময়ে শনাক্ত হয়েছেন ১০ হাজার ২২২ জন, সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৯৩৩ জন আর মৃত্যু হয়েছে ১৪৬ জনের।
৪১তম সপ্তাহের চেয়ে ৪২তম সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা বেড়েছে ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। শনাক্ত বেড়েছে সাত দশমিক ৫১ শতাংশ। সুস্থতার হার কমেছে তিন দশমিক ২১ শতাংশ আর মৃত্যুর হার কমেছে ১৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন
12