ওসিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়!

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২০; সময়: ৭:৪১ অপরাহ্ণ |
ওসিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়!

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : টেকনাফ থানা বা ওসি প্রদীপ নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকার ওসিদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ অনেক পুরানো। পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, এজন্য আছে কমপ্লেইন সেল। সাবেক পুলিশ প্রধান বলছেন, অভিযোগগুলো গতানুগতিকভাবে দেখলে চলবে না। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বলছেন, পুলিশ সদরদপ্তরকে আরো কঠোর হতে হবে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার ওসি আতিকুল ইসলাম। স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ দেওয়া এক ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারের হত্যার হুমকির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে আরো আছে অনেক অভিযোগ। দুদক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ পুলিশ সদর দপ্তরের আইজিপি কমপ্লেইন সেলে হয়েছে লিখিত অভিযোগও। কিন্তু তিনি এখনো ওই থানাতেই কর্মরত আছেন।

সিলেটের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র বলেন, ইনকোয়ারি রিপোর্টে তার বিরুদ্ধে যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আমাদের ডিপার্টমেন্টের যে প্রসিডউর আছে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনদিন আগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার ওসিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে টাকা দাবি। আদালত মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পিবিআইকে।

পিবিআই এর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, সর্বোচ্চ নিরপেক্ষ তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করি। কোতয়ালির ক্ষেত্রেও আমরা নিরপেক্ষভাবেই তদন্ত করবো।

বিভিন্ন থানার ওসির বিরুদ্ধে এমন নানা অভিযোগ প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। গণমাধ্যমে খবরও আসছে। থানার ওসি ছাড়াও, পুলিশের বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধেও উঠছে এরকম নানা অভিযোগ। ভুক্তভোগীরা যাতে সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারেন, সেজন্য ২০১৭ সালে পুলিশ সদর দপ্তরে চালু হয় আইজিপি কমপ্লেইন সেল। যেখানে ফোন, ইমেইল বা স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রয়েছে।

পুলিশ সদস্যরা অপরাধে জড়িত হলে গুরু ও লঘু এই দুই ধরনের দণ্ড বা বিভাগীয় শাস্তি দেয়ার বিধান রয়েছে। গুরুদণ্ডের আওতায় চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদাবনতি, পদোন্নতি স্থগিত, বেতন বৃদ্ধি স্থগিত ও বিভাগীয় মামলা হয়। মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হলে বরখাস্ত করা হয়। ছোট অনিয়ম বা অপরাধের জন্য দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার, অপারেশনাল ইউনিট থেকে পুলিশ লাইনস বা রেঞ্জে সংযুক্ত করার বিধান রয়েছে।

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, ‘অপরাধ দমনে পুলিশ সদর দপ্তরকে আরো কঠোর হতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে আরো বেশি শক্তিশালী হতে হবে। অভিযোগ আসলে সাথে সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিলে তাদের মধ্যে ভীতি আসবে। তারা আর এ ধরনের অপরাধ করবে না।’

আর সাবেক আইজপি একেএম শহীদুল হক বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ গতানুগতিকভাবে দেখার সুযোগ নেই। বর্তমানে পুলিশ প্রশাসনে যারা আছেন তাদের এটা ইভেকটিভলি দেখা উচিত। তদন্ত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করতে হবে।

দুজনেই বলছেন টেকনাফকান্ডে জড়িত ওসি প্রদীপ কুমার এবং এর আগে ফেনীর সোনাগাজীতে নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিলো আগে থেকেই। তাদের লাগাম আগেই টেনে ধরা গেলে হয়তো বড় ঘটনা এড়ানো যেতো।

  • 68
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে