আইনি প্রক্রিয়ায় আসছে ‘রাজনীতি’

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২০; সময়: ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ |
আইনি প্রক্রিয়ায় আসছে ‘রাজনীতি’

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ইচ্ছে করলেই যে কেউ যে কোনো জায়গায় থেকে মনের মতো একটি নাম নির্ধারণ করে রাজনৈতিক দল গঠন কিংবা রাজনীতি করার সুযোগ আর পাচ্ছেন না। অংশগ্রহণ করতে পারবেন না জাতীয় কিংবা স্থানীয় কোন নির্বাচনেও। এবার সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়ায় নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেয়া শর্তগুলো পুরোপুরি প্রতিপালন করে তবেই নিতে হবে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন।

বর্তমানে দেশের দলগুলো নিবন্ধনপ্রাপ্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ- ১৯৭২ বা আরপিওর অধীনে। এবার সেই আরপিও থেকে বেরিয়ে প্রথমবারের মতো দল নিবন্ধনে পুরোপুরি পৃথক একটি আইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এরইমধ্যে ইসির আইন শাখাকে এই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনে তৎকালীন এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন। তার আগে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য দলগুলোকে ইসি থেকে নিবন্ধন নিতে হতো না। সে সময় আরপিওর ৬(এ) অধ্যায়ে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের বিষয়টি যোগ করা হয়।

এতে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে হলে, সংশ্লিষ্ট দলকে কমিশন থেকে নিবন্ধন পেতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও নিবন্ধিত দলের করণীয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয় ৯০(এ) থেকে ৯০(আই) ধারায়।

ইসি কর্মকর্তা বলছেন, আরপিও আইন নয়, তাই আলাদা একটি আইনের কথা ভাবা হচ্ছে। গণতান্ত্রিক দেশে অধ্যাদেশ বা আদেশ থাকার চেয়ে আইনই বেশি শোভা পায়। তবে প্রায়োগিক দিক থেকে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। ইতোমধ্যে আরপিও সংশোধন করে বাংলায় রূপান্তর করে আইন প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ। আইন মন্ত্রণালয়ে এটি শিগগিরই পাঠানো হবে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে প্রস্তাবিত এই বিলের ওপর অনুমোদনও দিয়েছে ইসি। তবে এখান থেকে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন অংশটুকু আলাদা করা হবে।

সূত্র জানায়, আইন শাখাকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধনের পৃথক আইন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজ শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। তবে পৃথক আইন হলেও তেমন কোনো পরিবর্তন আনার আপাতত চিন্তা নেই। যদিও বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, দল নিবন্ধনের প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কঠিন। নতুন দলগুলোর পক্ষে সব শর্ত পূরণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।

ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য পৃথক একটি আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এটি কেবল প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। আইন হতে সময় লাগবে। প্রথমে ইসিতে অনুমোদন হবে, এরপর আইন মন্ত্রণালয়ের ভোটিং হবে, এরপর আবার ইসিতে আসবে। তারপর বিল আকারে সংসদে পাশ হলে আইন হবে।

প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে দল নিবন্ধনের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ইসি। ২০১৮ সালেও এমন বিজ্ঞপ্তির আলোকে ৭৬টি দল নিবন্ধন পেতে কমিশনে আবেদন করে। এর মধ্যে মাত্র দু’টি দল নিবন্ধন পায়। অন্য দলগুলো নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে পারেনি। আরপিও অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে হলে কোনো দলকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কমিটি এবং ২২ জেলা, ১০০ উপজেলায় কমিটি ও কার্যালয় দেখাতে হয়। আর প্রতিটি কমিটিতে অন্তত দুইশ’ ভোটার সদস্য থাকতে হয়। এছাড়া, দলগুলোর প্রতি বছর আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হয়।

বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪১টি। নির্বাচন কমিশন দলগুলোকে নিবন্ধন দেয় শর্ত সাপেক্ষে। সময় সময় নির্বাচন কমিশন তা খতিয়ে দেখে। কোনো দল শর্ত পূরণ অব্যাহত না রাখলে, দলটির নিবন্ধন বাতিল করার ক্ষমতা রাখে ইসি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে