শীতে রাজশাহী অঞ্চলে করোনা ছড়ানোর শঙ্কা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২০; সময়: ১:১৬ অপরাহ্ণ |
শীতে রাজশাহী অঞ্চলে করোনা ছড়ানোর শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে দিন দিন কমছেই সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত থেকে শুরু করে নগরীর মার্কেট ও হাট-বাজারগুলোতে অধিকাংশ মানুষই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। সরকারিভাবে মাস্ক পরার নির্দেশনা থাকলেও কেউ তা ব্যবহার করছে না।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বস্তরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু রাজশাহী নগরের মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছে না। মানছেন না সামাজিক দুরত্ব। এছাড়াও করোনার উপসর্গ থাকলেও পরীক্ষাও করছেনা অনেকেই। ফলে শীতের শুরুতে রাজশাহী অঞ্চলে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগ ও হাসপাতালের বর্হিবিভাগের দুইটি পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। প্রতিদিন দুই ল্যাবে ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষার সক্ষমতা রয়েছে। রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, পাবনা ও নওগাঁ জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয় এই দুই ল্যাবে। বর্তমানে দুই ল্যাবে রয়েছে নমুনা সংকট।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, বুধবার তাদের ল্যাবে মোট ৭৭ নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে পজেটিভ ৩টি। তাদের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা ঠিকঠাক হচ্ছে। পরীক্ষার সবকিছু আছে কিন্তু নমুনা নাই।

তিনি বলেন, রাজশাহীতে তিনিটি হাসপাতালে করোনা রোগির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু রোগি কমে যাওয়ায় দুইটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখন শুধু রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বলেন, রাজশাহী জেলার নয়টি উপজেলা থেকে বর্তমানে গড়ে ২০ থেকে ৩০টি নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে। আগে যেটি হতো ৮০ থেকে ১০০।

তিনি বলেন, মাস্ক পড়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে মানুষকে সচেতন করার কাজ চলছে। মানুষ সচেতন না হলে শীতে রাজশাহীতে করোনার প্রভাব বাড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তারের পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্য জানান, রাজশাহী বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। একই সময় সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৯৮ জন। আর মারা গেছেন বগুড়ায় একজন।

বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এ বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৭০৪ জনে। এ বিভাগে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩১৯ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ১৯ হাজার ২৩৮ জন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ১৪৭ জন।

তিনি জানান, রাজশাহী বিভাগে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় ৭ হাজার ৯৩৮ জন। এছাড়াও নগরীতে ৩ হাজার ৭৪৬ জনসহ রাজশাহীতে ৫ হাজার ৮৭ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৮২ জন, নওগাঁয় ১ হাজার ৩১৯ জন, নাটোরে ১ হাজার ৩১ জন, জয়পুরহাটে ১ হাজার ১২৫ জন, সিরাজগঞ্জে ২ হাজার ২২৪ জন ও পাবনায় ১ হাজার ১৯৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত রাজশাহীতে ৪৯ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ জন, নওগাঁয় ২১ জন, নাটোরে ১২ জন, জয়পুরহাটে ৭ জন, বগুড়ায় ১৯৩ জন, সিরাজগঞ্জে ১৩ জন ও পাবনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে।

এ পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগে সুস্থ্য হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাদের মধ্যে রয়েছে, রাজশাহীতে ৪ হাজার ৯০৮, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭৫৮ জন, নওগাঁয় ১ হাজার ২৬৯ জন, নাটোরে ৯০৫ জন, জয়পুরহাটে ১ হাজার ৯২ জন, বগুড়ায় ৭ হাজার ২০০ জন, সিরাজগঞ্জ ২ হাজার ২ জন ও পাবনায় ১ হাজার ১০৪ জন।

  • 310
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে