রাজশাহী রেল স্টেশনে সক্রিয় ছিনতাই চক্র

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২০; সময়: ৯:২৪ অপরাহ্ণ |

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাত ১১টা ২০ মিনিটে ‘ধূমকেতু এক্সপ্রেস’ ঢাকার উদ্যোশে ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে। অধিকাংশ ট্রেনের যাত্রীরা নিজ নিজ আসনে বসে পড়েছে। ট্রেন ছাড়ার ১০ মিনিট আগে জানালা দিয়ে ছুঁ মেরে এক যাত্রীর মোবাইল নিয়ে পালিয়ে গেল এক কিশোর। ট বগির ৪৯ নম্বর আসনে বসে ছিলেন ওই যাত্রী। তিনি নিজ আসনে বলে মোবাইলে ফেসবুক দেখছিলেন। ট্রেন থেকে নামার আগে স্যামসং ব্যান্ডের দামি মোবাইল ফোনটি নিয়ে চমপট ওই কিশোর। গত ৯ অক্টোবর এ ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে এভাবেই মাঝে মধ্যে ঘটে মোবাইলসহ যাত্রীদের মালামাল ছিনতাইয়ের ঘটনা। ফলে অনিরাপদ হয়ে পড়েছে ট্রেন যাত্রীদের ভ্রমন। এতে করে রাজশাহী রেলওয়ের উপর আস্থা হারাচ্ছে যাত্রীরা। আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে মূলত এসব ঘটনা ঘটছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেন ভূক্তভোগিরা।

প্রত্যক্ষদর্শী ট্রেনের যাত্রী ও সংবাদকর্মী মোহাম্মদ আলী জানান, পেশাগত কাজে আমরা ৫ জন রাতের ট্রেনে ঢাকা যাচ্ছিলাম । ট্রেনে জানালার পাশে আমার যেখানে সিট সেখানে ট্রেনের সংরক্ষিত টেবিল আছে। সেই সুবাদে নিজেদের ব্যাগপত্র ও মোবাইল রাখার সুবিধা হচ্ছে। আমার পেছনের মধ্যসিটের এক যাত্রী আমার টিবিলের সামনে মোবাইল রেখে চার্জ দিচ্ছিলেন। জানালা খোলা থাকায় এরই মধ্যে আমাদের এক সহযাত্রী ওই যাত্রীকে বারবার তাগাদা দিচ্ছিলেন মোবাইলটা হাতে নিন মোবাইলটা হাতে নিন। তবে এতো তাগাদা দেবার কারণটি আমি বুঝতে পারিনি। তিনি ঠিক বুঝতে পেরেছেন বলেই এমন তাগানা দিচ্ছিলেন।

এই কথা বলতে বলতে ঠিক আমার সিটের পেছনে যাত্রী এবং যে মোবাইল চার্জ দিচ্ছিলো তার পাশের যাত্রী জানালার পাশে বসে মোবাইল টিপাটিপি করছিলো এমন সময়ে ছুঁ মেরে মহুর্তেই জানালা দিয়ে ১৬-১৭ বয়সি এক কিশোর মোবাইল নিয়ে চলে যায়। যাত্রীরা ধর ধর চিৎকার চেচামেচি করতে থাকলেও ততক্ষণে সে মোবাইলটি নিয়ে চম্পট ।

প্লাট ফরমের দিকে রেল পুলিশ ও গার্ডরা ঘোরাঘুরি করছে কিন্তু অপর প্রান্ত হতে ছিনতাই হলেও সেদিকে কোন পুলিশ বা গার্ডদের দেখা মিলেনি। যাত্রীদের চিৎকার যখন জোরালো হয়েছে তার কিছুক্ষণ পর রেল পুলিশ ও গার্ডদের বাঁশি বাজাতে দেখা গেলো। কিন্তু পুলিশের পক্ষ হতে যার মোবাইলটি হারিয়ে গেছে তার সাথে এসে কেউ কথা বললে নি এমনকি সমস্যার কথাটি শুনবে সেটাও কাউকে দেখা গেলো না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু সেদিনই না প্রায় উঠতি বয়সী এই ছিনতাইকারিদের কবলে পড়ছে ট্রেনের যাত্রীরা। মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ে যাবে এমন ভাবনা আসার আগেই ছিনতাইকারী চক্রটা জানালা দিয়ে মোবাইল নিয়েই দৌড় দিয়ে চলে যায়। প্লাট ফর্মের অপর প্রান্তে কোন লোকজন ও আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর কোন ধরনের তৎপরতা না থাকায় খুব সহজেই এই কাজটি করতে পারছে।

তবে এসব চক্রের সাথে রেলওয়ে স্টেশনের নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা বাহিনীর ও অসাধু কর্মচারীদের সাথে তাদের সংখ্যতা আছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। শুধু মোবাইল নয় এমনি ভাবে ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে প্রায়। ফলে এই রেলওয়ে স্টেশন হতে যাত্রীরা ভ্রমনে নিরাপদ মনে করছে না।

রাজশাহী রেলওয়ে (পশ্চিম) অতিরিক্ত মহা-ব্যবস্থাপক অজয় কুমার পোদ্দার বলেন, এই রকম ঘটনা ঘটছে তা আমাদের জানা নেই। রাজশাহী রেল স্টেশন ম্যানেজারকে বিষয়টি অবহিত করে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজান আব্দুল করিম বলেন, এই ধরনের ছিনতায়ের কোন অভিযোগ আমরা পায়নি। রেলওয়ে থানায় হয়েছে কিনা জানা নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে ওসির সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই স্টেশন কর্মকর্তা।

  • 639
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে