ইজারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বালু উত্তোলন রাজশাহীতে (ভিডিওসহ)

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২০; সময়: ৫:১০ অপরাহ্ণ |
ইজারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে বালু উত্তোলন রাজশাহীতে (ভিডিওসহ)

নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলাতলি ইউনিয়নের রানীনগর মৌজার বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনির হোসেন বকুল নামের এক বালু ব্যবসায়ী মনির হোসেন বকুল ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বালুমহালটি ইজারা নেন। যা রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দুরে।

ওই বালু মহালের নামে একটি সিন্ডিকেট রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সুলতানগঞ্জ ফরিদপুর ও সারাংপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, মজুদ এবং সেখান থেকে পরিবহন করছে। স্থানীয় প্রভাবশালী আনারুল বিশ্বাস ও তার ছেলে রোমেন বিশ্বাস এই বালু সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যাদের কাছে এলাকাবাসীসহ প্রশাসনও অসহায় বলে অভিযোগ তুলেছেন ভূক্তভোগিরা।

উপজেলার সুলতানগঞ্জ ফরিদপুর ও সারাংপুর এলাকার পদ্মা থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এতে নদী ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে কয়েকটি গ্রাম। এছাড়াও ভারি ট্রাক-লরি ও বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলের কারণে এলাকার সড়কগুলো ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেছে।

দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা বালু পরিবহনের কারণে এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বালু ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটির মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে। আক্রান্ত হচ্ছে নানা জটিল অসুখে। এছাড়া সড়কগুলো নষ্ট হয়ে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে গোদাগাড়ী প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

ফরিদপুর গ্রামের আয়নুল হক জানান, প্রশাসনের নাকের ডোগায় এই অবৈধ বালু কারবারে তারা অতিষ্ঠ। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারী দলের নেতাদের অনেকেই অবৈধ এই বালু কারবারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এ নিয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ সংগ্রহ ও আনারুল বিশ্বাসের বক্তব্য নিতে গেলে তিনি ও তার ছেলে রোমেন বিশ্বাসসহ তার লোকজন সংবাদকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় তারা সাংবাদিকদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে সবার মোবাইল ফোন ও ক্যামেরা কেড়ে নেয়। ফলে তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভাব হয়নি।

তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বালু মহাল ইজারাদার মনির হোসেন বকুল বলেন, আনারুল বিশ্বাস তার বালু মহাল থেকে ৫০ পয়সা সেফটি বালু কিনে নিয়ে গিয়ে গোদাগাড়ীতে মজুদ করে। সেখান থেকে তিনি বালু বিক্রি করে।

গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সজিকিউটিভ ম্যজিস্ট্রেট ইমরানুল হক বলেন, সারেংপুর এলাকায় এর আগে পদ্মা নদীর পাড়ে বালু মজুদের বিষয়টি নিষেধ করা হয়েছিলো। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন করে সুলতানগঞ্জে বালু তুলার বিষয়টি সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাণীনগর নামক একটি মোজা লিজ দিয়েছে। সেখান থেকে বালু উত্তলন করে তারা রাজশাহীর সীমানায় মজুদ করছে। এতে এলাকাবাসীর সমস্যা হলে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে এ বিষটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ডিসি স্যারের সাথে ও রাজশাহীর ডিসি স্যারের সাথে কথা বলে তারা এটার সমাধান দিতে পারবেন।

গোদাগাড়ী উপজেলার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তবে অবৈধ বালু উত্তোলন ও বালু মুজুদ করার জন্য এলাকাবাসী এবং ইজারাদারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ দিলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে