আফগানিস্তানে মন্ত্রণালয়ে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১; সময়: ১২:০৯ অপরাহ্ণ |
আফগানিস্তানে মন্ত্রণালয়ে নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছে তালেবান। তারও আগে থেকেই সবাইকে স্বাভাবিকভাবে কাজে ফেরার আহ্বানও জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। তবে এরপরও আফগানিস্তানের মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নারী কর্মীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তালেবান। সেখানে কেবল পুরুষ কর্মীদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

আফগান মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মীর বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রুশ বার্তাসংস্থা স্পুটনিক নিউজ এবং ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।

মন্ত্রণালয়ের ওই স্টাফ স্পুটনিক নিউজকে বলেন, ‘এখানে কর্মরত চারজন নারী কর্মীকে মন্ত্রণালয়ের ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।’ ওই নারীরা তখন মন্ত্রণালয়ের বাইরে প্রতিবাদ করবেন বলে মনস্থির করেছিলেন।

২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট কাবুল দখল করে তালেবান। এরপর থেকেই বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন যে, কট্টরপন্থি তালেবানের শাসনাধীনে দেশটির নারীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।

তবে কাবুল দখলের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তালেবান জানিয়েছিল যে, ইসলামি রীতি-নীতি অনুযায়ী নারীদের অধিকার রক্ষা ও বাস্তবায়নে তারা প্রতিশ্রুতবদ্ধ। সেসময় দলটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছিলেন, ‘ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নারীদের অধিকার রক্ষা করবে তালেবান। স্বাস্থ্যখাত-সহ অন্য যেসব খাতে নারীদের প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে তারা কাজ করতে পারবেন। নারীদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হবে না।’

এর দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পরে আফগানিস্তানে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে তালেবান। এই সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। কোনো নারীর স্থান না হওয়া নতুন এই সরকারে এমন সব জ্যেষ্ঠ ও কট্টরপন্থি তালেবান নেতাদেরকে স্থান দেওয়া হয়েছে, যারা গত দুই দশক ধরে দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ওপর জঘন্য সব হামলা পরিচালনার জন্য অভিযুক্ত।

পরে গত সপ্তাহে তালেবানের মুখপাত্র সাঈদ জাকরুল্লাহ হাশিমি আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজকে জানান, নারীরা মন্ত্রী হতে পারবেন না, তাদের কাজ সন্তান জন্ম দেওয়া। তার এই বক্তব্যের ভিডিও ব্যাপকভাবে শেয়ার হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।

তোলো নিউজকে তালেবান মুখপাত্র বলেন, ‘একজন নারী মন্ত্রী হতে পারেন না। এটা এমন যে, আপনি তার গলায় কিছু একটা ঝুলিয়ে দিলেন, যার ভার সে বহন করতে পারে না। মন্ত্রিসভায় নারী থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের কাজ হওয়া উচিত সন্তান জন্ম দেওয়া। বিক্ষোভকারী নারীরা সব আফগান নারীর প্রতিনিধিত্ব করে না।’

উল্লেখ্য, পুরুষ-সর্বস্ব সরকার গঠনের প্রতিবাদে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ করেছেন আফগান নারীরা। বিক্ষোভকারী কিছু নারী নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় নারী মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন। তবে সেসব বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয় তালেবান। অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভরত ওই নারীরা বেধড়ক মারধরেরও শিকার হয়েছেন।

  • 2
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে