কমছে সংক্রমণ : আক্রান্তের শীর্ষে যুক্তরাজ্য, মৃত্যুতে ইন্দোনেশিয়া

প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২১; সময়: ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ |

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চলমান মহমারি পরিস্থিতিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর হিসেবে শীর্ষে আছে যুক্তরাজ্য, অন্যদিকে প্রাণঘাতী এ রোগে মৃতের হিসেবে শীর্ষে আছে বর্তমানে করোনার এশীয় কেন্দ্র (এপিসেন্টার) হিসেবে পরিচিতি পাওয়া দেশ ইন্দোনেশিয়া।

মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে এ রোগে আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠাদের সংখ্যা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারর্স এ তথ্য জানিয়েছে।

তবে ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের চার্ট আরও বলছে- বিশ্বজুড়ে কমছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত দু’দিন ধরে এ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

রোববার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৪১ হাজার ২৮৯ জন এবং মারা গেছেন ৬ হাজার ৭০০ জন। আগের দিন শনিবার প্রাণঘাতী এই রোগে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৮৪ হাজার ১৬৩ জন এবং ওই দিন করোনায় মৃত্যু হয়েছিল ৭ হাজার ১৯১ জন।

অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিশ্বে নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে ৪২ হাজার ৮৭৪ জন এবং মৃতেরত সংখ্যা কমেছে ৪৯১ জন।

শনিবারের আগের দিন, শুক্রবার বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৯০৯ জন এবং এ রোগে ওই দিন মারা গিয়েছিলেন ৮ হাজার ৬৩৬ জন।

হিসেবে দেখা যায়, শুক্রবারের তুলনায় শনিবার নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার কম ছিল এবং মৃতের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল দেড় হাজারের বেশি।

ওয়ার্ল্ডোমিটারর্সের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ছিল যুক্তরাজ্যে। রোববার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮ হাজার ১৬১ জন এবং এ দিন এ রোগে যুক্তরাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের।

অন্যদিকে, এশিয়ায় করোনার এপিসেন্টার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ইন্দোনেশিয়ায় রোববার ঘটেছে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা। এ দিন দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৯৩ জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৭২১ জন।

২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থনে যৌথভাবে আছে ব্রাজিল ও ভারত। যুক্তরাজ্য-ইন্দোনেশিয়ার মতো চিত্র দেখা গেছে এ দু’দেশের ক্ষেত্রেও; অর্থাৎ, আক্রান্তের হিসেবে এগিয়ে আছে ভারত, মৃত্যুর হিসেবে ব্রাজিল।

ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ভারতে করোনায় আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৮ হাজার ৩২৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা ছিল ৫০১ জন।

অন্যদিকে ব্রাজিলে রোববার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ১২৬ জন এবং এ রোগে এ দিন দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৯৩৯ জনের।

এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে থাকা দেশটির নাম রাশিয়া। রোববার বিশ্বের বৃহত্তম দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ১৮ জন এবং মারা গেছেন গেছেন ৭৬৪ জন।

এছাড়া আরও যেসব দেশে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে সে দেশসমূহ হলো- ইরান (আক্রান্ত ২২ হাজার ১৮৪, মৃত্যু ১৯৫), কলম্বিয়া (আক্রান্ত ১৮ হাজার ২০৬, মৃত্যু ৪৭৬), মেক্সিকো (আক্রান্ত ১২ হাজার ৬৩১, মৃত্যু ২২৫) ও বাংলাদেশ (আক্রান্ত ১১ হাজার ৫৭৮, মৃত্যু ২২৫)।

রোববারের পর বিশ্বে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে মোট ১ কোটি ২৯ লাখ ৪১ হাজার ৬৪২ জনে। এদের মধ্যে এই রোগের মৃদু উপসর্গ বহন করছেন ১ কোটি ২৮ লাখ ৬১ হাজার ১১১ জন এবং গুরুতর অবস্থায় আছেন ৮০ হাজার ৫৩১ জন।

ওয়ার্ল্ডোমিটার্সের তথ্য অনুযায়ী, মহমারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ কোটি ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯ জন এবং এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৪১ লাখ ৫ হাজার ৩৭৭ জনের।

তবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যাও কম নয়। রোববার বিশ্বে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৬ জন এবং মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠেছেন মোট ১৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৯ হাজার ৫০ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম সার্স-কোভ-২ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। পরে সাধারণভাবে এই ভাইরাসটি পরিচিতি পায় নতুন বা নভেল করোনাভাইরাস নামে। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছে উহানেই। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তখন জানানো হয়েছিল, ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছেন।

এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা যাওয়ায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে ওই বছর ১১ মার্চ করোনাকে মহামারি ঘোষণা ডব্লিউএইচও।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে