ভারতে অক্সফোর্ডের টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের সংক্রমণের হার খুব কম

প্রকাশিত: এপ্রিল ২২, ২০২১; সময়: ১:০৯ অপরাহ্ণ |
ভারতে অক্সফোর্ডের টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের সংক্রমণের হার খুব কম

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ভারতে টিকা নেওয়ার পর করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশ কম। গতকাল বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাঁরা সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা কোভিশিল্ডের একটি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে দশমিক শূন্য ২ শতাংশ মানুষের নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর যাঁরা এই টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এ হার আরও কম, দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিন গ্রহণকারীদেরও সংক্রমণের হার কম।

বাংলাদেশেও অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ও সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি করোনার টিকা কোভিশিল্ডের প্রয়োগ চলছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে ৫৭ লাখের বেশি মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। আর ১৬ লাখের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভারত সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ১০ কোটি ৩ লাখ ২ হাজার ৭৪৫ জন অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পর তাঁদের মধ্যে নতুন করে ১৭ হাজার ১৪৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা প্রথম ডোজ টিকাগ্রহীতার দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। অন্যদিকে, ভারতে এই টিকা দুটি ডোজ নিয়েছেন ১ কোটি ৫৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৪৫ জন। টিকা নেওয়ার পর তাঁদের মধ্যে ৫ হাজার ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শতাংশের হিসাবে এ হার দশমিক শূন্য ৩।

প্রতি ১০ হাজার টিকাগ্রহীতার মধ্যে ২ থেকে ৪ জনের নতুন করে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা খুবই নগণ্য। তাই আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই।

ভারতের নিজস্ব টিকা কোভ্যাক্সিন। ভারত বায়োটেক করোনার এ টিকা উদ্ভাবন করেছে। এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৯৩ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৬ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ১৭৮ জন। ভারত সরকারের হিসাব অনুযায়ী, কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ৪ হাজার ২০৮ জনের (দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ) নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর দুটি ডোজ নেওয়ার পর করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৬৯৫ জনের। এ ক্ষেত্রেও শনাক্তের হার দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) মহাপরিচালক বলরাম ভরগাভা বলেন, ‘প্রতি ১০ হাজার টিকাগ্রহীতার মধ্যে ২ থেকে ৪ জনের নতুন করে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সংখ্যা খুবই নগণ্য। তাই আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই।’

ভারতে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। প্রতি দিনই দেশটিতে রেকর্ড ছাড়াচ্ছে নতুন শনাক্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিকার ওপর জোর দিয়েছে ভারত সরকার। তবে টিকা নেওয়ার পরও অনেকের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। টিকার কার্যকারিতা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে।

ভারত সরকার জানিয়েছে, এক কিংবা দুই ডোজ নেওয়ার পরও শনাক্তের এ সংখ্যা প্রমাণ করে টিকা নিরাপদ। অধিকসংখ্যক মানুষকে করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। তাই সবার উচিত টিকা নেওয়া। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থেকে পুরোপুরি সুরক্ষা দেবে না। কিন্তু আক্রান্ত হলে শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হওয়া কিংবা মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দেবে। আর মানুষের শরীরে টিকা প্রয়োগের পর কার্যকারিতা শুরু হতে দুই সপ্তাহ সময় প্রয়োজন হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে