হোয়াইট হাউসে ‘বিদায়ঘণ্টা’

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২০; সময়: ১০:২২ পূর্বাহ্ণ |
হোয়াইট হাউসে ‘বিদায়ঘণ্টা’

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : হোয়াইট হাউসে বাজতে শুরু করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিদায়ের ঘণ্টা। নাটকীয় নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে গত চার বছর প্রায় প্রতিদিন প্রেসিডেন্ট ভবন মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

এমন কম দিনই গেছে, যেদিন সংবাদের শিরোনাম হননি। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। এই সত্য ও বাস্তবতা এড়াতে পারছেন না।

পরাজয় না মানলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্ষমতা ছাড়ার। এখন বিদায় নেয়ার পালা। হোয়াইট হাউসে তাই বিদায়ের করুণ আবহ বিরাজ করছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে কোনো প্রাণচাঞ্চল্য নেই। অনেকটাই শান্ত হয়ে পড়েছে ওয়েস্ট উইং নামে সব সময় গমগম করা এলাকাটিও।

এদিকে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুনরুত্থান হয়েছে। অন্যের দ্বারা পরিচালিত হতে নয়, বিশ্বকে এখন নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।’ মঙ্গলবার ডেলাওয়ার রাজ্যের উইলমিংটনে এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।

এছাড়া মহামারী করোনাভাইরাস ও জলবায়ু পরিস্থিতি মোকাবেলার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও আটলান্টিকসহ সারা বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রকে তার ঐতিহাসিক নেতৃত্বের জায়গায় ফিরিয়ে নিতে কাজ করবেন বলেও জানান বাইডেন। বলেন, ‘বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুরো চিত্রটা পাল্টে ফেলেছেন। এখন যুক্তরাষ্ট্র সর্বাগ্রে একাই রয়েছে। আমরা একে এমন জায়গায় নেব, যেখানে আমাদের মিত্ররাও সম্মানের সঙ্গে থাকতে পারে।’ এনবিসি, বিবিসি ও এএফপি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর প্রায় তিন সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। ভোট গণনা ও বুথফেরত জরিপে পরাজয় স্পষ্ট হলেও তা মানতে অস্বীকার করতে থাকেন ট্রাম্প।

নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে দাঁড় করান উদ্ভট সব অভিযোগ। এমনকি শুরু করেন আইনি লড়াইও। কিন্তু একে একে যখন তার সব দরজা বন্ধ, তখন বাধ্য হয়েই ক্ষমতা ছাড়ার ইঙ্গিত দেন। সেই সঙ্গে নিজের প্রশাসনকে দিয়েছেন হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় সব কিছু করার নির্দেশ।

সোমবার ট্রাম্প বলেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তরে ফেডারেল এজেন্সির যা যা করা দরকার তারা তা শুরু করতে পারে।’ প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া দেখভালের দায়িত্ব বর্তায় স্বাধীন ফেডারেল প্রতিষ্ঠান জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিএসএ) ওপর।

আগামী ২০ জানুয়ারিই হোয়াইট হাউস ছাড়তে হচ্ছে ট্রাম্পকে। এরই মধ্যে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রশাসনিক কাজ শুরু করেছেন। ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে নিতে যোগাযোগ করছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে।

বাইডেন বলেছেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে ‘আন্তরিক’ সাড়া পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার এনবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত হোয়াইট হাউসের পক্ষ দেখে রুষ্ট আচরণ দেখেননি এবং তা দেখতেও চান না।

এরই মধ্যে নিজের সম্ভাব্য মন্ত্রিসভার শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম ঘোষণা করেছেন বাইডেন। এনবিসির নাইটলি নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ ডেমোক্র্যাট নেতা জানিয়েছেন, এখনও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তার কথা হয়নি। তবে তিনি আশা করেন, তার মেয়াদের শুরুতেই ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়াজনিত বিলম্বের প্রভাব পড়বে না। ‘এটি ধীরগতির সূচনা। তবে এটি হচ্ছেতো।

আর দুই মাস বাকি আছে। কাজের গতি বজায় রাখার ব্যাপারে আমি খুব আশাবাদী,’ বলেন বাইডেন। সদ্য বিজয়ী এ ডেমোক্র্যাট নেতা আরও বলেন, ভ্যাকসিন বিতরণ ও ভ্যাকসিন সহজলভ্য করার জন্য পদক্ষেপ নিতে হোয়াইট হাউসের কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সকে দায়িত্ব দেবেন তিনি।

হোয়াইট হাউসের পরিস্থিতি জানিয়ে এক প্রতিবেদনে পলিটিকো বলেছে, ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারশিবিরেও নীরবতা বিরাজ করছে। থ্যাংকস গিভিং উপলক্ষে অনেক কর্মী প্রচারশিবির ছেড়ে গেছেন। এসব কর্মী জানেন, শিগগির তাদের অন্য কোনো কাজ খুঁজে নিতে হবে।

  • 7
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে