ভারতে আক্রান্ত সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে, সুস্থ ৫৯ শতাংশ

প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২০; সময়: ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ |
ভারতে আক্রান্ত সাড়ে ৫ লাখ ছাড়িয়েছে, সুস্থ ৫৯ শতাংশ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : উচ্চহারে সংক্রমণ বেড়েই চলেছে ভারতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের ন্যায় দেশটিতে পাল্লা দিয়ে শনাক্ত হচ্ছে করোনা। ইতিমধ্যেই সেখানে ভাইরাসটির শিকার ৫ লাখ ৬৬ হাজার ভারতীয়। এর মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সুস্থ ৫৯ শতাংশ ভুক্তভোগী। এমন অবস্থায় আগামীকাল জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৫২২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এতে করে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৬০ শতাংশই তিন রাজ্যের (মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও তামিলনাড়ু)।

একইসময়ে প্রাণহানি ঘটেছে ৪১৮ জনের। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৮৯৩ জনের মৃত্যু হল করোনায়। এর মধ্যে সাত হাজার ৬১০ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। রাজধানী দিল্লিতে দু’হাজার ৬৮০ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাটে এক হাজার ৮২৭ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। হাজার পেরনোর তালিকায় ঢুকে পড়েছে তামিলনাড়ুও। সেখানে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১৪১। উত্তরপ্রদেশ (৬৭২), পশ্চিমবঙ্গ (৬৫৩), মধ্যপ্রদেশ (৫৬৪), রাজস্থান (৪০৫)-এ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।

এছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা (২৫৩), হরিয়ানা (২৩২), কর্নাটক (২২৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৮০), পঞ্জাব (১৩৮)।

আক্রান্তের তালিকায় বরাবরই শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৩ জন। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ২৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তামিলনাড়ু ও দিল্লির আক্রান্তের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় চার হাজার জন আক্রান্ত হওয়ায় তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল তামিলনাড়ু। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮৬ হাজার ২২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ হাজার ১৬১ জন।

আক্রান্তের নিরিখে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গুজরাট (৩১ হাজার ৯৩৮) ও উত্তরপ্রদেশ (২২ হাজার ৮২৮)। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (১৭ হাজার ৯০৭), রাজস্থান (১৭ হাজার ৬৬০), তেলঙ্গানা (১৫ হাজার ৩৯৪), হরিয়ানা (১৪ হাজার ২১০), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩ হাজার ৮৯১), কর্নাটক (১৪ হাজার ২৯৫), মধ্যপ্রদেশ (১৩ হাজার ৩৭০)। এরপর আছে বিহার, অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা ও পঞ্জাবের মতো রাজ্য, যেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।

গত তিন চার দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে গড়ে ৫০০ জনেরও বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬২৪ জন। এই বৃদ্ধির জেরে সেখানে সংক্রমিতের সংখ্যা ১৭ হাজার ৯০৭ জনে পৌঁছেছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৫৩ জন।

তবে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়লেও, হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও স্বস্তি দিচ্ছে ভারতবাসীকে। এমনিতেই করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৯ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৮২২ জন ভুক্তভোগী।

উল্লেখ্য, ভারতের সংক্রমণ এক থেকে দুই লাখ হতে ১৫ দিন, দুই থেকে তিন ১০ দিন। তিন থেকে চার ৮ দিন। আর সবশেষ চার থেকে পাঁচ লাখে পৌঁছতে লাগে মাত্র ছয়দিন। এভাবেই করোনা দাপট দেখাচ্ছে দেশটিতে। এমন অবস্থায় আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত বাতিল করা হয়েছে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল।

সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথমদিকে সামাজিক দূরত্বের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন লকডাউনের কড়াকড়ি নেই। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় বাজার-হাট, গণপরিবহনে বেড়েছে লোকের ভিড়। বেড়েছে একে অপরের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাও। তাই, প্রতিদিনই আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। এই হারে যদি বাড়তে থাকে তাহলে ছয় লাখে পৌঁছতে আরও কম সময় লাগবে।

  • 100
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে