লকডাউন শিথিল হওয়ার মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যায় ভারত ইতালিকে ছাড়িয়ে গেল

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২০; সময়: ৮:৩০ অপরাহ্ণ |
লকডাউন শিথিল হওয়ার মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যায় ভারত ইতালিকে ছাড়িয়ে গেল

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ভারতে লকডাউন শিথিল করার প্রক্রিয়ার মধ্যে সংক্রমণের এই উর্ধ্বমুখী হার দেখা যাচ্ছে। ভারতে গত চব্বিশ ঘন্টায় কোভিড-১৯-এর প্রায় দশ হাজার নতুন সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এর ফলে দেশটিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা এখন ইতালিকে ছাড়িয়ে গেছে।

বিশ্বে আক্রান্তের হারের হিসাবে ভারত এখন ষষ্ঠ স্থানে। ভারতে এখন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫৭। মারা গেছে ৬,৬৪৯ জন। ভারতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। গত মার্চের শেষে ভারতে যে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়েছিল, এখন তা ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। মুম্বাইয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। আর রাজধানী দিল্লিতে হাসপাতালগুলো রোগীদের জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে শপিং মল, উপাসনাস্থল, রেস্তোরাঁ এবং অফিসগুলো সোমবার থেকে আবার খুলে দেয়া হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কোভিড-১৯-এ সংক্রমণের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকার বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের বিভ্রান্ত করেছে।

বিপুল জনসংখ্যা, রোগের বিস্তার এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে বিনিয়োগের অভাবের কারণে সংক্রমণ মোকাবেলার বিষয়টি দেশটির জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তবে সংখ্যার বিচারে ভারত যদিও বিশ্বে আক্রান্তের তালিকায় ছয় নম্বরে আছে, কিন্তু মৃত্যুর হিসাবে ভারতের স্থান বিশ্বে ১২ নম্বরে। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব থেকে এই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

ভারত লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এই আশা থেকে যে, ভারতে যেসব সংক্রমণ এখনও শনাক্ত হয়নি, তার বেশিরভাগই গুরুতর পর্যায়ের সংক্রমণ নয়, যার জন্য রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ভারতে যেভাবে শনাক্তের হার বাড়ছে, তাতে মনে হচ্ছে দেশটিতে সংক্রমণ গ্রাফের চূড়ায় পৌঁছচ্ছে দেরি করে। সোশাল মিডিয়াতে বহু ভারতীয় চিকিৎসা সেবা পাবার ক্ষেত্রে তাদের যে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তা নিয়ে কথা বলছে। কোন কোন হাসপাতাল রোগীদের বলেছে তাদের কাছে যথেষ্ট পরীক্ষা সরঞ্জাম আর নেই।

সমালোচকরা বলছেন ভারতে সংক্রমণ এখন যে চূড়ায় পৌঁছাচ্ছে, তা থেকে মনে হচ্ছে লকডাউন দেশটিতে কাজ করেনি। এই লকডাউনের জন্য দেশকে বিশাল অর্থনৈতিক মূল্য দিতে হয়েছে, কিন্তু এই লকডাউনের সময়কালে সরকারের চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থাসহ অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত ছিল, সমালোচকরা বলছেন সরকার সেটাও করেনি।

তবে, সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ক একজন গবেষক ও অধ্যাপক গৌতম মেনন বিবিসিকে এর আগে বলেছিলেন ভারতের সামনে আর কোন বিকল্প ছিল না।

তিনি বলেন, এই লকডাউন এত দীর্ঘদিন চালু রাখা একটা সময়ের পর অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল- অর্থনৈতিক, সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক সব দিক বিবেচনা করলে আর কোন বিকল্প ছিল না।

  • 62
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে