বিশ্বজুড়ে সুস্থতার সংখ্যা ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে

প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২০; সময়: ১২:১৫ অপরাহ্ণ |
বিশ্বজুড়ে সুস্থতার সংখ্যা ৩৩ লাখ ছাড়িয়েছে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি এই রোগ থেকে সুস্থ হয়ে উঠার সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৩ লাখের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। করোনায় মোট মৃত্যুর চেয়ে এই সেরে উঠাদের সংখ্যা ১০ গুণেরও বেশি বলে জানা গেছে।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসেবে, করোনাভাইরাসে শনিবার সকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬৮ লাখের বেশি মানুষ। অর্থাৎ মোট আক্রান্ত ৬৮ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৫ জন। এদের মধ্যে গত ২৪ ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ।

অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪ হাজার ৯০৬ জন। আর সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৮২ হাজার ৬০১ জন। গত শুক্রবার সেরে উঠার এই সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ১৯৭ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় সুস্থ হয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। পাশাপাশি করোনায় একদিনে মারা যাওয়ার তুলনায় সুস্থতার সংখ্যাও কিন্তু বহু গুণ বেশি। যদিও নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার তুলনায় সুস্থ হওয়ার সংখ্যা এখনও বেশ কম।

এ পর্যন্ত করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন বিশ্বের মোট ৩৩ লাখ ৩২ হাজার ৫৮ জন। আর মারা গেছে মোট ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৪৬ জন। অর্থাৎ এখনও বিশ্বে করোনায় মৃত্যুর তুলনায় সুস্থ হয়ে উঠাদের সংখ্যা ৮ গুণেরও বেশি। এই পরিসংখ্যান আমাদের আশার আলো দেখায়।

২০১৯ এর ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম হামলা হয়েছিল করোনার। চীন থেকে ইরান হয়ে ইউরোপের ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে মরণ কামড় বসিয়েছে করোনা।

ইউরোপকে তছনছ করার মধ্যেই উত্তর আমেরিকায় হামলা শুরু করে করোনা। এই ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে মারা গেছে ১ লাখ ১১ হাজার ৩৯০ জন। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরও ৯৭৫ জন। নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ৩৯৭ জন।

বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের। শুক্রবারও সেখানে ৩০ হাজারের বেশি আক্রান্ত এবং আরও ১ হাজার ৮ জন মারা গেছেন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৬ জন। আর মোট মারা গেছেন ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে দিন কয়েক আগেই রাশিয়ারকে হটিয়ে করোনা তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে দেশটি।

দেশটিতে সুস্থ হওয়ার সংখ্যাও তুলনামূলক কম। সেখানে মোট সুস্থ হয়েছেন ২৮ লাখ ৮ হাজার ৬৫২ জন। এখনও চিকিৎসাধীন রয়েছে ৩ লাখ ২২ হাজার ৩০৭ জন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জায়গা দখল করে নেবে দেশটি। করোনা তালিকায় দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষে রয়েছে ট্রাম্পের দেশ।

প্রসঙ্গত, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে জার্মানিতে। সেখানে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৮শ জনই সুস্থ হয়েছেন। মারা গেছেন ৮ হাজারের কিছু বেশি মানুষ। বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা মাত্র ৮ হাজার ৩৮৭ জন।

এছাড়া সুস্থ হওয়ার তালিকায় এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো।

এদিকে করোনা মোট আক্রান্তের সংখ্যায় তালিকার শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি তিনটি দেশ হচ্ছে যথাক্রমে রাশিয়া (আক্রান্ত ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৮৩৪ জন; মৃত্যু ৫ হাজার ৫২৮ জন, স্পেন (আক্রান্ত ২ লাখ ৮৮ হজার ৫৮ জন ও মৃত্যু ২৭ হাজারের বেশি) ও যুক্তরাজ্য (আক্রান্ত মোট ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩১১ জন ও মৃত্যু ৪০ হাজার ২৬১ জন)। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তো বটেই যুক্তরাষ্ট্রের পর যুক্তরাজ্যেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

আফ্রিকার কিছু দেশেও বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। তবে আপাতত নিরাপদ অস্ট্রেলিয়া এবং ওশেনিয়া মহাদেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) রিপোর্ট বলছে, এবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলি যেমন, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশে করোনার সামাজিক সংক্রমণ ও মৃত্যু রীতিমতো উদ্বেগ তৈরি করছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে করোনায় ভারতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে। এ পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে ৬ হাজার ৬৪৯ জন। আর আক্রান্ত হয়েছে মোট ২ লাখ ৩৬ হাজার ১৮৪ জন।

তবে সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও।

বৃহস্পতিবারই আক্রান্তের সংখ্যায় চীনকে পেছনে ফেলেছে পাকিস্তান। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে আরও ৩ হাজার ৯৮৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৯২৪ জনে।

আর চীনে গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র পাঁচজন আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে মোট রোগী ৮৩ হাজার ২৭ জন। ফলে বিশ্ব তালিকায় চীনকে হটিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান এখন ১৭তম।

অন্যদিকে বাংলাদেশেও হু হু করে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। প্রতিদিনই সেখানে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে দেশটিতে মোট আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার ৩৯১ জন এবং মৃত্যু ২ হাজার ৮২৮ জন। এদের মধ্যে গত শুক্রবারই আক্রান্ত হয়েছে আরও প্রায় ৩ হাজার মানুষ (২ হাজার ৮২৮ জন)। ফলে প্রথমবারের মতো করোনা তালিকার ২০তম স্থানে উঠে এসেছে দেশটি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে