পাবনা হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২২; সময়: ৮:১১ অপরাহ্ণ |
পাবনা হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনা ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক-কর্মচারীরা। তার নাম (এডি) ডা. ওমর ফারুক মীর। হাসপাতালে চিকিৎসক-কর্মচারীদের সাথে তার অসৌজন্যমূলক আচরণ ও প্রশাসনিক কোন সহযোগিতা না করার প্রতিবাদে গতকাল রবিবার সকালে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

এসময় সহকারী পরিচালকের বিরুদ্ধে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। ফলে হাসপাতালে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভের কিছুক্ষণ পরে সকাল ৯টার দিকে সহকারী পরিচালক (এডি) ডা. ওমর ফারুক মীর তার অফিসে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় আন্দোলনকারীরা তাকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে তার ধাক্কাধাক্কি হয়।

পরে অফিসে ঢুকতে ব্যর্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যান সহকারী পরিচালক। চিকিৎসক, কর্মচারীদের সাথে দূর্ব্যবহার, অসৌজন্যমূলক আচরণ ও হুমকি ধামকি দেয়াসহ অসহযোগিতামূলক কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে কর্মরত চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা তাকে অবাঞ্ছিত করেছে। আন্দোলনকারীদের সাথে চিকিৎসকদের বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন একাত্মতা প্রকাশ করেছে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজ চালাচ্ছেন। সম্প্রতি পাবনা জেনারেল হাসপাতালের নাক, কাল ও গলা বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুজ্জামান নয়নকে কতিপয় সন্ত্রাসী শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে জানানো হলে তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

শারীরিকভাবে লাঞ্চিত সহকারী সার্জন ডা. কামরুজ্জামান নয়ন জানান, ঈদের আগের দিন স্ত্রী ও ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে শহরে আসার পথে সদর উপজেলার টেবুনিয়া বাজারে দূর্বৃত্তের হামলার শিকার হন। এ সময় দূর্বৃত্তরা চিকিৎসক নয়ন ও তার ভাইকে বেধরক মারপিট করে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

তিনি আরো বলেন, সহকারী পরিচালককে বিষয়টি অবহিত করার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও তিনি কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করে কালক্ষেপণ করেন। হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম তিনদিন।

তিনি একবারের জন্যও দেখতে আসেননি, কোন খোঁজখবরও নেন নাই। মামলা দিতে গেলে সদর থানা মামলা নেয়নি। সহকারী পরিচালককে জানিয়েছি মামলা নিচ্ছে না থানা। আপনি মামলা নেয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি সে জন্যও কোন সহযোগিতা করেননি। চিকিৎসক কামরুজ্জামান নয়ন দাবী করেন, অদক্ষ এই সহকারী পরিচালকের পক্ষে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সম্ভব নয়। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এ ব্যাপারে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, ঘটনাটি হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বাইরে। আমাকে লিখিত ভাবে জানানো হয়নি। তবে ঘটনাটি জানার পরপরই পুলিশ প্রশাসনের সাথে আলোচনা করেছি।

নিয়মতান্ত্রিক ভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কাজ করছেন। অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়ে সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, অফিসের মধ্যে রয়েছি। বাইরে বেশকিছু চিকিৎসক ও কর্মচারীরা অবস্থান করছেন। অবরুদ্ধ নাকি অবাঞ্ছিত সেটা আমি নিশ্চিত নই।

তিনি আরো বলেন, নতুন যোগদান করেছি। অনেকেই নানা তদবির, সুপারিশ, সুযোগ সুবিধা অনৈতিক ভাবে না পেয়ে আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এটা তারই বর্হিপ্রকাশ।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) আবুল কালাম বলেন, চিকিৎসক কামরুজ্জামান নয়ন থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। মামলা নয়। জিডি গ্রহনের পর নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে পুলিশ।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। তবে লোক মুখে শুনেছি সহকারী পরিচালককে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাকে লিখিত ভাবে জানালে বিষয়টির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে