রাজশাহী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বাড়ছে রোগীর চাপ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২২; সময়: ১:৩৪ অপরাহ্ণ |
রাজশাহী হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বাড়ছে রোগীর চাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঠাণ্ডা, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, চর্মরোগসহ শীতকালীন নানা রোগে আক্রান্তদের চাপ বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া এবং শ্বাসকষ্টের রোগীর ভর্তি বেড়েছে। শিশুদের প্রতিটি ওয়ার্ডে শয্যা না থাকায় চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে হাসপাতালের মেঝেতে।

গত বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, শয্যায়, মেঝেতে এমনকি ওয়ার্ডের বারান্দাতেও শিশু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর ভিড় দেখে মনে হয়েছে, যেনো পা ফেলার জায়গাও অবশিষ্ট নেই। সর্বত্রই শিশু রোগীর ভিড়।

চিকিৎসকরা বলছেন, শীত আরও বাড়লে রোগীর সংখ্যাও বাড়বে। তবে আশার কথা হচ্ছে, গত সোমবার রাজশাহীতে শীতের তীব্রতার পরিমাণ কিছুটা কম ছিলো। ওইদিন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ৪৫টি শিশু ভর্তি হয়েছে।

বুধবার পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি আছে প্রায় ১৩৫ শিশু। এদের মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রয়েছে ৬৫ জন। গত শুক্রবার ডায়রিয়ায় রামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলো ৬২ জন। গত বৃহস্পতিবারে ডায়রিয়ার রোগী ছিলো ৫২ জন। গত বুধবার ভর্তি ছিলো ৫৬ জন। তবে তুলনামূলক নিউমোনিয়ার রোগী নেই বললেই চলে। রামেক হাসপাতালে নিউমোনিয়ার হাসপাতালে রোগী রয়েছে মাত্র ৯ জন।

রোগী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে সাধারণত যেসব রোগ দেখা দেয়, সেসব রোগীই তুলনামূলকভাবে বেশি। ঠাণ্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা শীতের কারণে দ্বিগুণ বেড়েছে। সকাল ৮টার দিকে রোগীর সংখ্যা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

রামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক পার্থ মনি জানান, হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। আক্রান্তদের অধিকাংশই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসছে। সেবা দিতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি বেগ পেতে হচ্ছে নবজাতকদের। শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে অভিভাবকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মৃনাল কান্তি দাস বলেন, শীত আরও বাড়লে ঠান্ডাজণিত রোগীর সংখ্যাও বাড়বে। ঠান্ডাজণিত রোগীর মধ্যে নবজাতকের সংখ্যাই বেশী। এসব নবজাতকের মধ্যে নানা রোগে আক্রান্ত হয়েই জন্ম নিয়েছে অনেক শিশু। এসব শিশুদের জীবন রক্ষায় সুচিকিৎসার পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সচেতন থাকতে হবে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, আমাদের এখানে রোগীদের চেয়ে শয্যা এমনিতেই কম। তারপরও শীতের মধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডেই রোগীর চাপ বেশি। প্রায় দ্বিগুণ তিনগুণ রোগী রয়েছে ওয়ার্ডগুলোতে। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেই আমরা তাদের সেবা দিতে চেষ্টা করছি। আমরা শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি শিশুদের জন্য ১৫টি রুম হিটার লাগিয়েছি। পাশাপাশি বারান্দার জন্য আমরা কাঁচ দিয়ে ঘিরে দেয়ার ব্যবস্থা করেছি।

তিনি বলেন, এখানে শীতে রোগী বাড়ে। ডায়রিয়াটাই এখানে বেশি হয়। বর্তমানে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ শিশু প্রতিদিনই ডায়রিয়ার রোগী আসছে চিকিৎসা নিতে। এছাড়াও শ্বাসকষ্ট ও বৃদ্ধদের শীত জনিত রোগীও বেড়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে