করোনার নতুন ধরন মোকাবেলায় সীমান্তে কড়াকড়ি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের নতুন আরেক ধরন নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ার মধ্যে সীমান্তে কড়াকড়ির পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাজ্য। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে এরই মধ্যে ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাজ্য। সেখান থেকে ফেরা ভ্রমণকারীদেরও কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
এর কয়েকঘণ্টা পরই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তড়িঘড়ি এমন সব পদক্ষেপ নেওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে। তবে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিন বলেছেন, ইইউ’ও ওই অঞ্চল থেকে বিমান চলাচল বন্ধ করার পথে রয়েছে। বিবিসি জানায়, ফ্রান্সও দক্ষিণ আফ্রিকার কয়েকটি দেশ থেকে ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা, লেসোথো, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে, মোজাম্বিক, নামিবিয়া এবং ই’সোয়াতিনির ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে ফ্রান্সও সেই একইরকম পদক্ষেপ নিয়েছে। এই দেশগুলো থেকে ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে অন্তত ৪৮ ঘণ্টার জন্য। ফরাসি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, যেসব ভ্রমণকারী গত ১৪ দিন এইসব দেশে কাটিয়েছেন তাদেরকে সেকথা কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এবং যত শিগগিরই সম্ভব আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে।
ওদিকে, ইতালিও গত ১৪ দিন দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্রমণ করা মানুষজনের ইতালিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। জার্মানি দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভাইরাসের ধরন ছড়ানো এলাকা হিসাবে ঘোষণা করতে চলেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। বাহরাইন এবং ক্রোয়েশিয়াও কিছু দেশ থেকে মানুষের আসা-যাওয়া বন্ধ করার পথে।
অন্যদিকে, এশিয়ায় ভারত তাদের সব রাজ্যে নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে যে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে আসা সব ভ্রমণকারীকে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। জাপান এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং আফ্রিকার অন্য আরও ৫ টি দেশ থেকে আসা দর্শণার্থীদের জন্য সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সিঙ্গাপুরও।
করোনাভাইরাসের সর্বশেষ শনাক্ত হওয়া ধরনটি নিয়ে বেশ চিন্তায় পড়েছেন বিজ্ঞানীরা। কেউ কেউ বলছেন, এটিই এখন পর্যন্ত দেখা করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক ধরন। এর বিরুদ্ধে টিকা কাজ করবে কিনা, কত দ্রুত এটি ছড়াবে, উপসর্গ কতটা ভয়াবহ হবে সেসব নিয়ে এখন আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। ধরনটিকে ডাকা হচ্ছে বি.১.১.৫২৯ নামে। এটির ঝুঁকি কতটা তা নিয়ে জেনেভায় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে শুক্রবার বৈঠক করছে ডব্লিউএইচও।
এখনই এই ধরনটি নিয়ে উদ্বেগে পড়ে তড়িঘড়ি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ নেওয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে ডব্লিউএইচও বলেছে, দেশগুলোর বরং ‘ঝুঁকির ভিত্তিতে এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ’ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। মানুষজনের এখনও মাস্ক পরে চলাফেরা করা, জমায়েত এড়িয়ে চলা এবং সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত বলে পরামর্শ দিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র মুখপাত্র।