মোহনপুরের অ্যাম্বুলেন্স ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন স্বাস্থ্য কর্তা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২০; সময়: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ |
মোহনপুরের অ্যাম্বুলেন্স ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন স্বাস্থ্য কর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে সরকারি গাড়ির অপব্যবহার ও ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ এন্ড এফপিও ) ডাক্তার আরিফুল কবীর হীন প্রবণতা দেখিয়ে ব্যক্তিগত কাজেও সরকারি আম্বুলেন্স ব্যবহার করছেন। এতে একদিকে যেমন জ্বালানি তেল বেশি যাচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে। তেমনি ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগের। ২০১৯ সালের মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আরিফুল কবীর (ইউএইচ এন্ড এফপিও) হিসেবে যোগদান করেন।

সরকারী অ্যাম্বুলেন্স রোগীদের আনা-নেওয়ার জন্য সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য নিয়ম রয়েছে এবং সরকারি কাজ জেলা সদরে রোগী বহন ছাড়া উপজেলার বাইরে গাড়ি নিয়ে যেতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ও সংশ্লিষ্ট কারণ থাকতে হয়। মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আরিফুল কবীর ব্যক্তিগত কাজে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা থেকে তিনি অ্যাম্বুলেম্স ও চালককে ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা নিজ বাড়ী নওগাঁতে যান।

পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার চেষ্টা করছিলেন আসগর আলী এক ভুক্তভুগি। তিনি তাঁর নিকট আত্মীয়কে রাজশাহীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা জন্য। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অবশেষে রাত আটটার দিকে রোগীকে নিয়ে সিএনজি যোগে রওনা দেন। ভুক্তভোগীরা অবশেষে স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আরিফুল কবীর কাছে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া জন্য চেষ্ঠা করে পাওয়া যাচ্ছে না ফোন দিলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরক্ষণে তিনি স্বীকার করে জানান, বর্তমানে তিনি সরকারি অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যক্তিগত বাহন হিসাবে গ্রামের বাড়ী নওগাঁ জেলার রানীনগরে যাচ্ছেন। যা মোহনপুর উপজেলা থেকে শহরের দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার।

নাম না প্রকাশে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ এন্ড এফপিও) নওগাঁ রানীনগর পরিবার থাকায় কারণে তিনি সরকারী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে প্রায় বাড়ীতে যান। এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন সরকারি গাড়ি। এ ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।

ভূক্তভোগী ২ জন রোগী আত্মীয় জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুরুতর অসুস্থ রোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) নেওয়ার জন্য ড্রাইভার রাকিবকে ০১৭১৪৬৫৮২৫৭ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন রোগী নিয়ে রাজশাহী আছেন আসতে ২/৩ ঘন্টা সময় লাগবে। ২ঘন্টা অতিক্রম হলেও আবারো ফোন দিলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে ফোন বিচ্ছিন্ন করে দেন। কিন্তু রাজশাহী থেকে মোহনপুর যাতায়াতে সময় লাগে ২৫/৩০ মিনিট। এইভাবে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে আসা রোগীর অভিভাবকদের হয়রানি করেন।সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগীর সঙ্গে আসা আত্মীয়দের। এ বিষয়ে গাড়ির চালক রাকিবুল প্রতিবেদককে বলেন, স্যার আমাকে যেখানে যেতে বলে আমি যাই। স্যারকে গ্রামের নওগাঁ বাসায় নামিয়ে দেয়। এদিকে মাদকাসাক্ত ড্রাইভার রাকিবের ডোপ টেষ্ট দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ এন্ড এফপিও) ডাক্তার আরিফুল কবীর দম্ভের সাথে বলেন, গাড়ি আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করিনা মাঝে মধ্যে বাড়ীতে আসতে হয়। আপনাদের যা ইচ্ছে লিখতে পারেন।

সরকারি যেকোন যানবাহন ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জানিয়ে রাজশাহী সিভিল সার্জন ডাক্তার এনামুল হক বলেন, ঘটনার সত্যাতা পেলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো জানান, ব্যক্তিগত কাজে সরকারি আম্বুলেন্স ব্যক্তিগত বাহন হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে