রাজশাহী অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি
নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ে রাজশাহী অঞ্চলে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। তবে ভাইরাস ঠেকাতে সর্বাত্ব প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুরু হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে নানা কর্মসূচী।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরের সাহেববাজারে মাস্ক বিতরণ করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রচার প্রচারণা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কর্মসূচীর উদ্বোধন করে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। এসময় রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন ও সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তারের তথ্য মতে, মঙ্গলবার পর্যন্ত এ বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৭৯৬ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩২৭ জন এবং সুস্থ্য হয়েছেন ২০ হাজার ২৫৪ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ৪৬ জন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ১২ জন, জয়পুরহাটে একজন, বগুড়ায় ২৭ জন, সিরাজগঞ্জ চারজন ও পাবনায় দুইজন। মারা গেছেন বগুড়ায় দুইজন। সুস্থ্য হয়েছেন ৩২ জন। এর মধ্যে রাজশাহীতে ১৪ জন ও বগুড়ায় ১৭ জন।
রাজশাহী বিভাগে এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ বগুড়ায় ৮ হাজার ৪৪৩ জন। এছাড়াও নগরীতে ৩ হাজার ৯৬১ জনসহ রাজশাহীতে ৫ হাজার ৩৪৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৮০১ জন, নওগাঁয় ১ হাজার ৩৭৪ জন, নাটোরে ১ হাজার ৯০ জন, জয়পুরহাটে ১ হাজার ১৬৪ জন, সিরাজগঞ্জে ২ হাজার ৩০৯ জন ও পাবনায় ১ হাজার ২৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
সূত্রমতে, সরকারি হিসেবে এ পর্যন্ত রাজশাহীতে ৫০ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪ জন, নওগাঁয় ২২ জন, নাটোরে ১২ জন, জয়পুরহাটে ৭ জন, বগুড়ায় ১৯৮ জন, সিরাজগঞ্জে ১৪ জন ও পাবনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরের সাহেববাজারে মাস্ক বিতরণ করে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রচার প্রচারণা ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কর্মসূচীর উদ্বোধন করে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল। এসময় রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন ও সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক উপস্থিত ছিলেন।
মাস্ককে ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহার করার আহবান জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, এখন আমরা করোনাভাইরাসের সেকেন্ড ওয়েভ অতিক্রম করছি। আমরা সকালে যেন সুস্থ্য থাকতে পারি; এ জন্য মাস্ক পরার বিকল্প নাই। আমাদের সুস্থ থাকতে মাস্ককে ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এ নিয়ে অবহেলা করা যাবে না।
আব্দুল জলিল বলেন, আমরা সব সরকারি দপ্তর ও বিপণীবিতানগুলোতে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ কার্যক্রম চালু করেছি। এই কার্যক্রম চালু রাখতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। যাতে কেউ মাস্ক না পরে ঘরের বাইরে বের না হয়। বিপণীবিতানগুলোতেও যেন না আসে।
সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় আমরা সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রথম দফায় রোগী বাড়লেও হাসপাতালের বেড ওভারফ্লো হয়নি। মাঝখানে কিছুটা শিথিলতা আসলেও এবার আমাদের পর্যাপ্ত আইসিইউ বেডসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত আছে। ফলে এবার করোনা মোকাবেলায় আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তারপর আমাদের চেষ্টা থাকতে হবে যাতে করোনা আক্রান্ত না হই। এ জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
পরে নগরের সাহেববাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে মাস্ক না পরে চলাফেলার দায়ে কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়।