রাজশাহীতে চিকিৎসকের ২৩৩ পদ শূন্য

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২০; সময়: ৯:১৭ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে চিকিৎসকের ২৩৩ পদ শূন্য

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সারা দেশে সরকারি চিকিৎসকের ১১ হাজার ৩৬৪টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শূন্য পদ ঢাকা জেলায়। আর রাজশাহী জেলায় চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে ২৩৩টি। সোমবার জাতীয় সংসদের সরকারি দলের সংসদ সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ৪২তম বিসিএসের মাধ্যমে ২ হাজার চিকিৎসকের শূন্যপদ পূরণের কার্যক্রম চলমান। এছাড়া ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে ২৯০ জন, ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২৬০ জন, ৪১তম বিসিএসের মাধ্যমে ১০০ জন নিয়োগের কাজও চলছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী চিকিৎসকের জেলাওয়ারি শূন্য পদের পরিসংখ্যান দিয়েছেন। সে অনুযায়ী, দেশের ৬৪ জেলার সবকটিতেই চিকিৎসকের পদ ফাঁকা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি পদ ফাঁকা ঢাকায় ৩ হাজার ১৮৫টি। আবার মন্ত্রী বলেছেন, ওএসডি চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি থাকায় ঢাকায় বাড়তি চিকিৎসক দেখানো হয়েছে।

কোন জেলায় কত শূন্য পদ

ঢাকায় তিন হাজার ১৮৫টি পদ, ফরিদপুরে ২৭৮টি, গাজীপুরে ১২৫টি, গোপালগঞ্জে ২৮৩টি, কিশোরগঞ্জে ২৩৭টি, মাদারীপুরে ৪২টি, মানিকগঞ্জে ২১৪টি, মুন্সিগঞ্জে ৯১টি, নারায়ণগঞ্জে ৫৩টি, নারসিংদী ৫২টি, রাজবাড়ীতে ৭৪টি, শরীয়তপুরে ৭৮টি, টাঙ্গাইলে ৯০টি, জামালপুরে ১৫৬টি, ময়মনসিংহে ৩১১টি, নেত্রকোনায় ১২০টি, শেরপুরে ৪৭টি, বান্দরবানে ৪২টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৭৫টি, চাঁদপুরে ৫৬টি, চট্টগ্রামে ৩৪৬টি, কুমিল্লায় ২২৬টি, কক্সবাজারে ১৩৪টি, ফেনীতে ৪৮টি, খাগড়াছড়িতে ৩৭টি, লক্ষ্মীপুরে ৩৪টি, নোয়াখালীতে ৯৮টি, রাঙ্গামাটিতে ৬০টি, বগুড়ায় ২৬৫টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০টি, দিনাজপুরে ৩৩৩টি, গাইবান্ধায় ৭৬টি, জয়পুরহাটে ৬১টি, কুড়িগ্রামে ৯০টি, লালমনিরহাটে ৬৪টি, নওগাঁয় ১১৯টি, নাটোরে ৪৯টি, নীলফামারীতে ১২৫টি, পাবনায় ১২৪টি, পঞ্চগড়ে ৭৬টি।

রাজশাহীতে ২৩৩টি, রংপুরে ২৬১টি, সিরাজগঞ্জে ১৬১টি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭৩টি, বাগেরহাটে ১২৪টি, চুয়াডাঙ্গায় ২১টি, যশোরে ১২৩টি, ঝিনাইদহে ৭৭টি, খুলনায় ৩৯৬টি, কুষ্টিয়ায় ১০৭টি, মাগুরায় ৫০টি, মেহেরপুরে ৪৫টি, নড়াইলে ৪৯টি, সাতক্ষীরায় ১৬৫টি, বরগুনায় ৯৪টি, বরিশালে ৪৩৮টি, ভোলায় ৯২টি, ঝালকাঠীতে ৩৭টি, পটুয়াখালীতে ১৮৭টি, পিরোজপুরে ৭৮টি, হবিগঞ্জে ৫৫টি, মৌলভীবাজারে ৬৩টি, সুনামগঞ্জে ১৩১টি এবং সিলেটে ৩৩১টি।

সরকারি দলের হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে ৩৯তম বিসিএসে (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের বিশেষ ক্ষেত্রে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাজ করার জন্য সংযুক্তির মাধ্যমে পদায়ন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলার চেয়ে নিম্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে ৩৯তম বিসিএস (২য় পর্যায়) নিয়োগপ্রাপ্ত কাউকে পদায়ন করা হচ্ছে না। তবে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েছে। তাই প্রয়োজনে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংযুক্তির আদেশ বাতিল করে এই চিকিৎসকদের কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে পদায়ন করা হবে।

বিএনপির জিএম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান। জিএম সিরাজের আরেক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি এবং অব্যবস্থাপনা দূর করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রাপ্ত অভিযোগের আলোকে দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হচ্ছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ শৃঙ্খলামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে কোভিড-১৯ বিভিন্ন কার্যক্রমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কয়েকজন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে ওএসডি করা হয়েছে। এছাড়া সরকারিভাবে বিভিন্ন নির্দেশনার ভিত্তিতে শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, কিন্তু কমেছে নমুনা পরীক্ষা।করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, কিন্তু কমেছে নমুনা পরীক্ষা। দ্রুততম সময়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার পদ্ধতির আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিএনপির সংসদ সদস্য জি এম সিরাজের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

সরকার কোভিড পরীক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও এ সংক্রান্ত জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে পিসিআর পরীক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য আধুনিক ও দ্রুত সময়ে পরীক্ষার পদ্ধতি দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা কম হওয়ার জন্য দেশের মানুষ অনাগ্রহকে দায়ী করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কম হওয়ার কারণে মানুষ বেশি বেশি পরীক্ষা করতে চাচ্ছে না। এ কারণে দেশে সর্বোচ্চ সক্ষমতার চেয়েও দৈনিক কম সংখ্যক নমুনা সংগৃহীত হচ্ছে। সরকার কোভিড-১৯ মহামারীকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে বলেও দাবি করেন জাহিদ মালেক।

বাংলাদেশে সংক্রমণ শুরুর কয়েকমাসের মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১১৫টি পিসিআর ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। এ সকল ল্যাবে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ হাজার পিসিআর পরীক্ষা করা সম্ভব। প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো যেতে পারে। বর্তমানে নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার সব রকমের জনসচেতনতামুলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।

  • 76
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে