‘লং কভিড’ যেভাবে অতীতকে সামনে নিয়ে এসেছে

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২০; সময়: ২:২৪ অপরাহ্ণ |
‘লং কভিড’ যেভাবে অতীতকে সামনে নিয়ে এসেছে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক: এখন ছয় বছর হতে চলল, যেখানে আমি প্রতিদিন ঘটে যাওয়া তিনটি ভালো ব্যাপার লিখে রাখি। প্রতিদিনই রাখি। সেগুলো কত বড় বা ছোট তা কোনো ব্যাপার না। এটা হতে পারে, বাগানে শেয়াল দেখতে পাওয়ার মতো কিছুও। এটাকে আমি কৃতজ্ঞতামূলক কোনো জার্নাল হিসেবে দেখি না। কারণ আমি প্রেরণাদায়ী কোনো ব্লগার না। কিন্তু আমার মস্তিষ্কে যে ভালো বিষয়গুলো রয়েছে তার দিকে মনোনিবেশ করার জন্য এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

আমি বড় হয়েছি ইতালিতে যেখানে বলা হয়, ভালো জিনিস বা খারাপ জিনিত তিনটি একসঙ্গে আসে। আমার প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে যখন বিছানায় শুতে যাই তিনটি প্রধান ইস্যু আমার চিন্তাকে আচ্ছাদিত করে রাখে। আমি সেগুলোকে খুব মূল্যবান কিছু হিসেবে সুরক্ষিত রাখি। এমনকি নিজের কাছের বন্ধুকেও বলিও না। কখনো কখনো সেগুলোর মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে চাপিয়ে রাখা অধিক কষ্টসাধ্য। যেমন আমি বাম বাহুতে একটি বিকৃতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি। এটি ডান পাশটির চেয়ে কয়েক ইঞ্চি খাটো এবং কনুইয়ের দিকে বাঁকানো। পাশাপাশি আমার বাম হাতের আঙুল হচ্ছে চারটি। ছোটবেলাতেই আমাকে কয়েকবার সার্জনের ছুরির নিচে যেতে হয়েছিল, অনেকবার ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিল। এরপর সেখানে স্ক্রু লাগানো হয়। যা আমার হাতকে কয়েক ইঞ্চি বাড়িয়ে দিয়েছিল। হাস্যকরভাবে আমি কার্ডিগান পরে ঘুরতাম, ভানটা এমন ছিল যে শরীরের সঙ্গে লাগানো এ ধাতব কাঠামোটি কারো চোখে পড়বে না। আমি সেভাবে কখনো দুয়োর মুখে পড়িনি কিন্তু অস্বস্তিকর মন্তব্য এবং দৃষ্টি আমার মাথায় আঘাত করত।

এ তিন ঘটনার পর ২০ মার্চ চতুর্থটিও এল। আমার পার্টনার যখন কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ল। কয়েকদিন পর আমিও আক্রান্ত হলাম এবং অবস্থা আরো খারাপ হতে শুরু করল। আমার শরীরের ওপর আরো একটি বাজে ঘটনা মেনে নেয়া রীতিমতো অসহনীয় ছিল। এটা শরীরের সেই অংশগুলোকে আক্রান্ত করেছিল যা অন্যান্য অবস্থার দ্বারা আক্রান্ত হয়নি: হূদযন্ত্র, ফুসফুস ও পেশি। আমার স্নায়ুতন্ত্র, যার ওপর আমার ক্যারিয়ার ও জীবিকা নির্ভর করছিল তা ক্ষতিগ্রস্ত মনে হচ্ছিল। যেখানে মাথাব্যথা, ব্রেইন ফগ ও শব্দ ভুলে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছিল। ব্যায়াম করা, যাকে শারীরিক ও মানসিক উন্নতির জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ বলা হচ্ছিল সেটিও আমার নাগালের বাইরে। কারণ সামান্য হাঁটাও ব্যথা বয়ে আনে।

ভাইরাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতি ছিল দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ও পরবর্তী অবসাদ। আপনি যখন ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করবেন এটা কখন সারবে, ডাক্তারদেরও আমি অস্বস্তিতে পড়তে দেখবেন। আট মাস পর এখনো উন্নতির গতি বেশ ধীর, আছে লক্ষণের পরিবর্তনও। সব মিলিয়ে আমার ছোটবেলায় ঘটে যাওয়া সেই অভিজ্ঞতাগুলোকেই যেন কভিড আবার আমার সামনে এনে হাজির করেছে।

  • 12
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে