সবার আগে করোনার ভ্যাকসিন আনার সম্ভাবনা চীনের

প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২০; সময়: ২:৩৭ অপরাহ্ণ |
সবার আগে করোনার ভ্যাকসিন আনার সম্ভাবনা চীনের

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে মরিয়া হয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশ। একটি নিরাপদ ভ্যাকসিন কে কার আগে নিয়ে আসতে পারবে তার জন্য দ্রুত গতিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে এরমধ্যে চীনের তৈরি করা ভ্যাকসিনগুলো বেশি এগিয়ে আছে যা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করছে বলে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে মর্ডানা। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে আগামী ২৫ নভেম্বরের আগ পর্যন্ত তারা ভ্যাকসিনের জরুরি প্রয়োগে যেতে পারবে না। অন্যদিকে অক্সফোর্ডের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর গতমাসে ব্রিটেনে একজন অসুস্থ্ হওয়ায় এর ট্রায়াল আপাতত স্থগিত রয়েছে। এরফলে আগামী ৪ নভেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভ্যাকসিন নিয়ে আসার যে আশার গল্প শুনিয়েছেন তা সত্যি হচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর এই নিরাপত্তা প্রটোকলের কারণে ভ্যাকসিনের এই দৌড় চীনের অনুকূলে চলে গেছে। সিএনএন বলছে, ভাল বা মন্দ যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তি রাষ্ট্রীয়, বাণিজ্যিক এবং ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়কে যথেষ্ট প্রভাবিত করে এবং যখন যেভাবে প্রয়োজন সেভাবেই নিয়মকে বদলে নেয়।

করোনার ভ্যাকসিনের গবেষণা ও ভ্যাকসিন তৈরির কাজ দ্রুততার সঙ্গে করার জন্য অনেকদিন থেকেই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার দেশের বিজ্ঞানীদের বারবার তাগাদা দিয়ে আসছেন। চীনের ভ্যাকসিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও বলেছে, তাদের এই কাজ ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ’। প্রেসিডেন্টের নির্দেশনা মানতে তারা সবকিছুই করছেন।

অন্যান্য দেশগুলো যখন একটি সফল ভ্যাকসিন তৈরির দিকে এগিয়ে যেতে তাদের গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে, চীন তখন নজর দিচ্ছে কীভাবে প্রথম হওয়া যায়।

অক্টোবর পর্যন্ত ভ্যাকসিনের সর্বশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ‘ফেইজ থ্রি’তে বিশ্বের যে ১০টি ভ্যাকসিন প্রবেশ করেছে তার চারটিই চীনা কোম্পানিগুলো বানিয়েছে।

এরমধ্যে দুটি বানিয়েছে চীনের জাতীয় ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ (সিনোফার্ম) এর প্রতিষ্ঠান সিএনবিজি। করোনাভ্যাক নামে অন্য একটি ভ্যাকসিন বানিয়েছে সিনোভ্যাক বায়োটেক। অন্যটি বানিয়েছে বেইজিং ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ভ্যাকসিন কোম্পানি ক্যাসিনো বায়োলজিকস।

ভ্যাকসিনের অগ্রগতি সম্পর্কে গত মাসেই সিএনবিজি’র চেয়ারম্যান ইয়াং জিয়াওমিং বলেন, ‘প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত গতিতে’ ভ্যাকসিন তৈরির কাজ তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে এই কোম্পানি সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, পেরু, মরক্কো এবং আর্জেন্টিনায় ৪২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, “চূড়ান্ত সফলতা থেকে আমরা খুব অল্প দূরেই অবস্থান করছি।’

চীনের ডিজিস কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেশন সেন্টারের বায়ো-সেইফটি বিশেষজ্ঞ উ গুইঝেন গতমাসে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভিকে বলেন, চলতি বছরের নভেম্বরের গোড়ার দিকেই সাধারণ জনগণের জন্য করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে আসতে সমর্থ হবেন তারা।

ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিল কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনস এর বৈশ্বিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ইয়ানঝং হুয়াং বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, করোনার সফল একটি ভ্যাকসিনের ঘোষণা সবার আগে চীন-ই দেবে। কিন্তু প্রশ্ন হল-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে বৈজ্ঞানিক কমিউনিটি এটাকে কীভাবে স্বীকৃতি দেবে।”

  • 29
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে