পুঠিয়ায় ভোটের ডামাডোল

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২০; সময়: ৩:৪২ অপরাহ্ণ |
পুঠিয়ায় ভোটের ডামাডোল

তারেক মাহমুদ : দেশের তিন শতাধিক পৌরসভার মধ্যে প্রথম ধাপে ২৫টি পৌরসভায় ভোট হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। রোববার এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ১ ডিসেম্বর, বাছাই ৩ ডিসেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ সময় ১০ ডিসেম্বর।

এদিকে, রাজশাহীতে পুঠিয়ায় ও কাটাখালি পৌরসভায় প্রথম অনুষ্ঠিত হবে ২৮ ডিসেম্বর। এ দুই পৌরসভার নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা গত কয়েক মাস থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিলো।

পুঠিয়া পৌরসভায় প্রথম থেকেই এলাকায় মাঠ দাপাচ্ছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর এই পৌরসভাতে নির্বাচন হয়েছিল। সেই হিসেবে চলতি বছরের শেষের দিকে এখন নির্বাচন হওয়ার কথা। পৌর নির্বাচনে মনোনয়ন নিতে বেশ কয়েক মাস ধরেই বড় দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করে। আর জেলা ও কেন্দ্রের শীর্ষ নেতাদের আশীর্বাদ পেতে তারা প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখেছেন।

স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সমর্থন পেতে সবসময় বাড়িয়েছেন সাংগঠনিক তৎপরতা। এর মাঝে ইদ শুভেচ্ছা জানিয়ে ও করোনায় ত্রাণ বিতরণে মেয়র প্রার্থী হিসেবে অনেকে এসেছেন আলোচনায়। সম্ভব্য প্রার্থীরা গণসংযোগের পাশাপাশি করছেন বড় বড় শোডাউন ও সভা সমাবেশ। এবার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থী। আর রাজনৈতিক মাঠের বাইরে থাকা বিএনপিও বসে নেই। তারাও নির্বাচনকে ঘিরে প্রস্তুতি ছিলো। তবে দলের অনুমতি পেলেই তারা নির্বাচন করবেন।

তবে এ পৌরসভায় সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থাতে রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বিএনপি দূরে দূরে থেকে তাদের কার্যক্রম চালিয়েছেন। দুই দল মনে করে, আগামী পৌর নির্বাচন সকল প্রার্থীদের জন্যই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। এখানে আওয়ামী লীগ বিএনপিরতে ব্যাপক লবিং গ্রাপিং লক্ষ্য করা গেছে। তবে ক্লিন ইমেজের প্রার্থীই চাচ্ছে দুই বড় দল। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনে অঙ্ক কষেই মাঠে নেমেছেন নেতারা। করোনা মহামারিতে এলাকার কর্মহীন, হতদরিদ্র মানুষের মঝে সকল প্রার্থীই ত্রাণ সমগ্রী বিতরণ করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন ডজন খানিক। যার মধ্যে বর্তমান মেয়র থানা যুবলীগ সভাপতি রবিউল ইসলাম (রবি), জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও মিডিয়া কর্মী হাবিবুর রহমান সৌরভ, সাবেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতা পৌর আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন লালন, বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব খান। পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শারিয়ার রহিম কনক, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুবক্কর সিদ্দিক, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবিএম শাখাওয়াত হোসেন (বাশার), ও সাবেক ছাত্রনেতা শরিফুল ইসলাম টিপু।

এছাড়ও বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন, পুঠিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুল হক আসাদ, সাবেক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সবেক পৌর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আল মামুন খান, সাবেক পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য বাবুল মিয়া, এবং সাবেক রাজশাহী জেলা ছাত্রদলে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পৌর আহবায়ক কমিটির সদস্য আবুল হোসেন প্রমুখ।

প্রতিদিন মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকায় তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সমর্থন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তারা। জানা গেছে, পুঠিয়া পৌরসভা গঠনের ১৪ বছর পর আইনি জটিলতা কাটিয়ে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথমবারের মত এখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নানা প্রতিকূলতায় নাগরিকদের চাওয়া না পাওয়ার মধ্যে কেটে যাচ্ছে ৫ বছর।

ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে এই পৌরসভার নির্বাচনের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। এর মধ্যে সারা দেশের সাথে সাধারণ নির্বাচনের জন্য জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সে মোতাবেক উপজেলা নির্বাচন অফিস পৌরসভা এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে নতুন পুরাতন মিলে প্রায় ১৫ হাজারের বেশি ভোটাদের নাম তালিকার কাজ প্রায় শেষ করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই পৌরসভাকে উপজেলার মধ্যে সকল নির্বাচনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এখানে মেয়র পদের জন্য একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রত্যাশা করছেন। তবে এবার দলীয় প্রার্থী যাচাই বাছাইয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে জনকল্যাণমূলক কাজ করেন ও দলের ত্যাগী ব্যক্তিকেই মনোনয়নের জন্য সুপারিশ দেয়া বিষয়ে সিনিয়র নেতারা একমত প্রকাশ করছেন।

অপরদিকে মেয়র পদের জন্য বিএনপিতে ৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। তারা মৌখিকভাবে নির্বাচনের অংশ নেয়ার মত প্রকাশ করলেও দলীয় সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত মাঠে নামবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে বিএনপির জেলা পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা হলে জানা যায়, দল এবার সাবেক মেয়র আসাদুজ্জামান আসাদ ও থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন খান কে দল থেকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আরো দুইজন প্রাথী রয়েছে বিএনপিতে। অন্যদিকে অন্য দু’দলের মধ্যে চারজন প্রার্থীর নাম গুঞ্জন চলছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি নেয়া আছে। তফসিল ঘোষণা হয়েছে শুনেছি। তবে কাগজপত্র এখনো আমাদের কাছে পৌঁচ্ছঅয়নি। আমাদের কাছে আসামাত্র তা আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেয়া হবে।

  • 102
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে