মুন্ডুমালায় মনোনয়ন পেতে মরিয়া এক ডজন নেতা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২০; সময়: ১:২৩ অপরাহ্ণ |
মুন্ডুমালায় মনোনয়ন পেতে মরিয়া এক ডজন নেতা

আসাদুজ্জামান মিঠু : পৌরসভা নির্বাচনের বাজনা বাজতে শুরু হয়েছে সবখানে। প্রার্থী ও ভোটাদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসাহ-উদ্দিপনা। করোনা সময় ভোট হবে কিনা এমন দ্বিধাদ্বন্দে ছিলেন প্রার্থীসহ ভোটাগণ। কিন্ত সে দ্বিধা দুর করেছেন নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষনা দিয়েছেন কয়েক দফায় ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট হবে মেয়াদ শেষ হওয়া পৌরসভাগুলো।

এর ধারাবাহিগতায় রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর সভায় চলছে মেয়র প্রার্থীদের দোড়ঝাঁপ। বিশেষ করে দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া এখন বড় দুই দলের একাধিক মেয়র পদপ্রাথীরা। নির্বাচন কমিশনের ঘোষনা অনুযায়ী পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষনার হতে পারে চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে। এজন্য দলীয় টিকিট পেতে আরো ততপর শরু করেছেন প্রার্থীরা।

এদিকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সম্ভব্য মেয়র প্রার্থীরা অগ্রিম ভোটের মাঠে নেমে পড়েছেন অনেক আগে থেকেই। অনেক পদপ্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে নানা ভাবে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরছেন। অনেকে আবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির উপর মহলে লবিং সহ দৌড়-ঝাপ শুরু করেছেন। ভোটারের দের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসাহ উদ্দিপনা।

এবার মুন্ডুমালা পৌর সভায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের অন্তত ৯ জন প্রার্থী মেয়র পদে নির্বাচন করবে বলে ঘোষনা দিয়ে উপর মহলে দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং দৌড়-ঝাপ শুরু করেছেন। আর বর্তমান মেয়র তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী এ বছর নির্বাচন করবেনা বলে আগেই ঘোষনা দিয়েছেন।

মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যালীরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শরিফ খান, মুন্ডুমালা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তাফা, সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান,পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক স্বপন, আ,লীগ নেতা দেবান্দন বর্মন, যুবলীগ নেতা আহম্মদ হোসেইন সিজার,আরিফ রায়হান তপন,নাহিদ হাসান এবং এ্যাডভকেট সাজেমান আলী।

এর মধ্যে পৌর আ,লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান মেয়র পদে নির্বাচন করবে বলে গত দুই বছর যাবত ভোটের মাঠে আছেন। এছাড়াও করোনাকালিন সময়ে পৌর এলাকার বেকার ও কর্মহীন হয়ে পড়া বিভিন্ন শ্রেনীর পেশার প্রায় ৬ হাজার পরিবারকে নিজ তহবিল হতে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার ত্রাণ সামগ্রি প্রদান করে ভোটারদেনর কাছে বেশ আলোচনায় রয়েছেন।

অন্যদিকে স্থানীয় এমপির সমার্থিত ৮ জন মেয়র প্রার্থী একসঙ্গে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বর্ধিত সভায় গিয়ে উপস্থিত নেতা কর্মিদের কাছে নিজে মেয়র প্রার্থী বলে ঘোষনা দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে দেনদরবার করছেন উপর মহলে। দলীয় টিকিট পাবে তারা সবাই আশাবাদী ব্যক্ত করেছেন।

অপর দিকে বিএনপির দুইজন সম্ভব্য মেয়র প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন পেতে হাইকমান্ডারের কাছে ততবির শুরু করেছেন। এরা হলেন,পৌর যুবদলের সাবেক সম্পাদক ফিরোজ কবির ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজ্জামেল হক।

২০১৪ সালে পৌর নির্বাচনে বিএনপি থেকে এ দুইজনই মনোনয়ন চেয়েছিলেন। সে সময় পৌর নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়ে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন ফিরোজ কবির। অবশ্য তিনি সে বছর ৯টি কেন্দ্রে একটিতেও পাশ করতে পারিনি। ফলে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম রাব্বানীর কাছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়ে ছিলেন।

এর পর থেকে ফিরোজ করিব ভোটের মাঠে পাঁচ বছর নিজেকে গুঠিয়ে নেন। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এবার দলীয় মনোনয়ন পাওয়া আশা পৌর বিএনপির সাবেক চেয়ারম্যান মোজ্জামেল হক ভোটার ও দলীয় সমর্থকদের কাছাকাছি থাকতে নিজ উদ্যোগে বিএনপির নানা দিবস পালন করেছেন। এবং করোনাকালিন কিছু ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করেছেন। যোগাযোগ রাখছেন দলের উচ্চ পর্যায়েও।

পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী মোহ্জামেল হক বলেন, আমি দলের জন্য জীবনের শেষ সময়টুকু পর্যন্ত কাজ করেছি। দলকে সুসংঘঠিত করতে বিশেষ ভুমিকার রয়েছে আমার। আমাকে দলীয় টিকিট দিলে এই পৌর সভায় বিএনপির জয় নিশ্চিত হবে বলে আমি আশা করছি।
এছাড়াও গত পৌর নির্বাচনের আমি দলীয় মনোনয়ন চেয়ে পাইনি। একজন জুনিয়র ব্যাক্তিকে দলীয় মনোনয়ন ধানের শীষ দিয়েছিলেন। তিনি বিপুল ভোটে হেরে গিয়ে ছিলেন।

আওয়ামী লীগের মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী শরিফ খান বলেন,তিনি দলের জন্য জীবনের শেষ সময়টুকু শেষ করেছেন,তবুও কিছু পাননি। বর্তমানে যে সকল প্রার্থী মনোনয়ন চাইছে সবার চেয়ে তিনি যোগ্য বলেই দলের হাইকমান্ডারের কাছে এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।

একই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক,সাইদুর রহমান বলেন, পৌর আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে তার বিশেষ অবদান রয়েছে। এছাড়া তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনা ফলো করে দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষদের নানা ভাবে সহযোগিতা করেন। সুখ-দুখে পাশে থাকেন। একারণে পৌর এলাকার সাধারণ ভোটাদের কাছে তার বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। এবার দলীয় মনোনয়ন নৌকা পেলে জয় নিশ্চিত হবে বলে আশা করছেন তিনি।

পৌর আ,লীগের বর্তমান সভাপতি মনোনয়ন প্রত্যাশী গোলাম মোস্তাফা বলেন,তিনি আওয়ামীলীগের জন্য অনেক ত্যাগ সিকার করেছেন। দলকে ভালবেসে ও এলাকার কথা চিন্তা করে তিনি বড় একটি চাকুরী ছেড়ে দীর্ঘদিন দলীয় নেতাকর্মির পাশে আছেন। তিনি সততা নিয়ে রাজনীতি করেন। সততার কারণে তিনি শেষ বয়সে এসে এ্যাডভোটের পেশায় বেছে নিয়েছেন। তিনি একজন প্রকৌশলীয় ছিলেন।

পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক স্বপ্ন বলেন,তিনি একজন সহিদ পরিবারের সন্তান। সাবেক ছাত্র নেতা। এছাড়াও পৌর আওয়ামী লীগেকে শক্তিশালী করতে তার বিশেস অবদান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিলে এ পৌর সভায় নৌকার বিজয় সিনিয়ে আনতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।

একই দলের আরেক তরুণ মনোনয়ন প্রত্যাশী যুবলীগ নেতা আরিফ রায়হান তপন,তিনি বলেন,আমার বাবা অধ্যাপক লুৎফর রহমান। তিনি তানোর আওয়ামী লীগের একজন প্রবিণ নেতা ছিলেন। দলের জন্য নানা ত্যাগ স্বীকার করে গেছেন। আমি ছাত্র রাজনীতি হতে দলের হয়ে কাজ করছি। সভা সমাবেশে বিশেষ ভুমিকার রয়েছে আমার। এছাড়া বাবা কিছু দিন আগে মারা গেছেন। আমি তার উত্তরসুরি হিসাবে দলের কাছে মনোনয়ন চাই।

  • 97
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে