খুঁড়িয়ে চলছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক

প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২১; সময়: ১১:৪৪ অপরাহ্ণ |
খুঁড়িয়ে চলছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবদেক : নানা অনিয়ম, দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় চলছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। লাগামহীন খেলাপি ঋণের কারণে নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মূলধনেও দেখা দিয়েছে সংকট। দীর্ঘদিনের খেলাপি ঋণ আদায়ে নেই তেমন অগ্রগতি। এ কারণে বছরের পর বছর ধরে লোকসান গুনছে এই ব্যাংক। ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, কৃষি খাতে ঋণপ্রবাহ জোরদারে বিশেষ আইনে প্রতিষ্ঠা করা হয় রাকাব। কিন্তু মূল উদ্দেশ্য থেকে সরে আসায় তাদের বিতরণ করা ঋণ সঠিক সময়ে আদায় হচ্ছে না। আদায় কম থাকায় খেলাপি ঋণ বেড়ে প্রভিশন ও মূলধনে ঘাটতি, লোকসানে পতিত হওয়াসহ নানা সংকট দেখা দিয়েছে। তাদের বিনিয়োগযোগ্য সম্পদও কমে যাচ্ছে।

ব্যাংকের আর্থিক সূচক ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে সরকারি ব্যাংকগুলো। এমওইউতে খেলাপি ঋণ আদায়, আয় বাড়ানোসহ নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে এর কোনো অগ্রগতি নেই। তারপরও গতানুগতিক নিয়মে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বছরের পর বছর এমওইউ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলের কৃষকদের জন্য গঠিত হয় বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। এ ব্যাংকে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা চলছে বলে অভিযোগ আছে। খেলাপি ঋণের ভারে ব্যাংকটির অবস্থা এখন নড়বড়ে। আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হওয়ায় ব্যাংকটির দেড়শোর অধিক শাখাকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

ব্যাংকটির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, রাকাবের মোট ৩৮৩টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে শহরে রয়েছে ৫০টি, পল্লী শাখা ৩৩৩টি। এসব শাখার মধ্যে ১৫১টি লোকসানে রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছয় কোটি ৭৫ লাখ টাকা লাভ করে ব্যাংকটি। এরপর টানা চার বছর লোকসান গুনছে রাকাব। সর্বশেষে গেল ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৮১ কোটি ৪১ লাখ টাকা আয় করে ব্যাংকটি। এর বিপরীতে ব্যয় হয় ৫৮৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ফলে লোকসান গুনতে হয় তিন কোটি ১০ লাখ টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন শেষে রাকাবের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছয় হাজার ২৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বা এক হাজার ২১২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। পাশাপাশি ব্যাংকটির মূলধন ঘাটতি রয়েছে এক হাজার ৫০৬ কোটি টাকা।

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, গত বছর খেলাপি ঋণ আরও বেশি ছিল। আমরা তা কমিয়ে এনেছি। এখন ১৯ শতাংশে আছে। ঋণ আদায়ে পাঁচ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী ডিসেম্বরে এটি আরও কমে আসবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে