মাসে মাসে মুনাফা তোলা যায় ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক থেকে

প্রকাশিত: জুলাই ২৭, ২০২১; সময়: ৮:৩৪ অপরাহ্ণ |
মাসে মাসে মুনাফা তোলা যায় ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক থেকে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : খরচের জন্য মাসে মাসে টাকা দরকার, এমন কোনো নিশ্চিত বিনিয়োগের জায়গা খুঁজছেন? জায়গা কিন্তু আছে। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত নয়, উচ্চ সুদে আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও টাকা রাখা নয়। ডাকঘরে চলে আসুন। বিভাগীয় শহর থেকে থানা পর্যায় সব জায়গাতেই আছে এই ডাকঘর।

ডাকঘরের একটি কর্মসূচি আছে, যার নাম পোস্ট অফিস সেভিংস ব্যাংক বা ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক। এর আওতায় দুটি কর্মসূচি আছে। একটি হচ্ছে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক সাধারণ হিসাব, অন্যটি ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক মেয়াদি হিসাব। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বোনাস হিসাব নামের একটি কর্মসূচি আগে ছিল। ১৯৯২ সাল থেকে তা বন্ধ।
দেশের সব শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশি নাগরিকই এ দুই কর্মসূচিতে টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। সাধারণ হিসাবে মুনাফা তোলা যায় মাসে মাসে। আর মেয়াদি হিসাবে মুনাফা তোলা যায় ছয় মাস পরপর। স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বিনিয়োগ করার সুবিধাও রয়েছে এতে।

একক নামে রাখা যায় ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর যুগ্ম নামে রাখা যায় ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। গত বছরের মে মাসে এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিনিয়োগসীমা এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনে সরকার। তার আগে একক নামে ৩০ লাখ টাকা অথবা যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেত।

তবে এই কর্মসূচিতে একক নামে রাখা যায় ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর যুগ্ম নামে রাখা যায় ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। গত বছরের মে মাসে এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে বিনিয়োগসীমা এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনে সরকার। তার আগে একক নামে ৩০ লাখ টাকা অথবা যুগ্ম নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেত। বর্তমানে সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে মুনাফা সরল হারে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ থেকে মাসে মাসে মুনাফা তোলার সুযোগ রয়েছে। আর মেয়াদি হিসাবের মুনাফার হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। মেয়াদি হিসাবটি তিন বছরের জন্য। তিন বছরের মেয়াদ পূর্তির আগে ভাঙানোর ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য মুনাফা ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। আর দুই বছরের জন্য ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ।

ব্রিটিশ সরকার আমলে ১৮৭২ সালে ডাক-হরকরাদের সুবিধা দিতে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক কর্মসূচি চালু করা হয়। সাধারণ মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা বৃদ্ধির স্বার্থে বাংলাদেশে তা চালু হয় ১৯৭৪ সালে।

বার্ষিক মুনাফার পরিবর্তে যদি কেউ ছয় মাসে মুনাফা তুলতে চান, সেই উপায়ও আছে। সে ক্ষেত্রে মুনাফার হার একটু কম। অর্থাৎ ১ বছরের জন্য মুনাফার হার ৯ শতাংশ, ২ বছরের জন্য ৯ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ৩ বছরের জন্য ১০ শতাংশ।
ডাক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ সরকার আমলে ১৮৭২ সালে ডাক-হরকরাদের সুবিধা দিতে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক কর্মসূচি চালু করা হয়। সাধারণ মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা বৃদ্ধির স্বার্থে বাংলাদেশে তা চালু হয় ১৯৭৪ সালে। এ কর্মসূচি পরিচালনা করতে ১৯৮১ সালে করা হয় ‘ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বিধি’।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সাধারণ হিসাব ও মেয়াদি হিসাব মিলিয়ে পুঞ্জীভূত দায় ৩৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।

ওই বিধির আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছে কর্মসূচিটি। তবে নাম ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বিধি হলেও বাস্তবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বলতে কোনো ব্যাংক নেই। আবার পুরো বিষয়টি দেখভালও করে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর, ডাক অধিদপ্তর নয়।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সাধারণ হিসাব ও মেয়াদি হিসাব মিলিয়ে পুঞ্জীভূত দায় ৩৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। এর মধ্যে মেয়াদি হিসাবেই বেশি, অর্থাৎ ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা। আর সাধারণ হিসাবে ২ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা। অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দুটি হিসাব মিলিয়ে আমানত হয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে চালুর পর থেকে মেয়াদি আমানতের মুনাফার হার ১৬ বার পরিবর্তন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে চালুর পর থেকে মেয়াদি আমানতের মুনাফার হার ১৬ বার পরিবর্তন করা হয়েছে। শুরুর বছর ১৯৭৪ সালে এ আমানতে মুনাফার হার ছিল ১০ শতাংশ। মাঝখানে ১৯৮৮-১৯৯২ সময়ে তা ১৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ পর্যন্তও ছিল। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এবং জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চার জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে প্রতিবছর সরকার প্রত্যাশার দ্বিগুণ টাকা সংগ্রহ করে। সে কারণে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে বিনিয়োগসীমা সংকুচিত করা হয়।

  • 24
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে