দেশের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে যারা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২১; সময়: ৫:৫০ অপরাহ্ণ |
দেশের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে যারা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি নির্ভর করে সেদেশের ব্যসায়ীদের ওপর। যে দেশ ব্যবসা-বাণিজ্যে যতো বেশি স্বনির্ভর এবং কৌশলী, পৃথিবীতে তারা সবচেয়ে এগিয়ে। চীনকেই দেখুন, শুধু ব্যবসায়ীক মারপ্যাঁচেই এই দেশটা আমেরিকাকে ঘোল খাইয়ে বিশ্ব অর্থনীতির কাণ্ডারীতে পরিণত হচ্ছে ধীরে ধীরে।

আমাদের দেশটা ছোট, বিশ্বের অর্থনীতির সঙ্গে তুলনা করলে চুনোপুঁটিই বলা যায়। তবুও আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তিটা সেই ব্যবসায়ীদের হাতেই। এই ব্যসায়ীদের মধ্যে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রিয়েল এস্টেট কোম্পানীর মালিক- সবাই আছেন। আমাদের আজকের আয়োজনে থাকছে বাংলাদেশের সেরা দশ ব্যবসা প্রতিষ্টান এবং ব্যবসায়ীকে নিয়ে। যাদের ওপর নির্ভর করে আমাদের অর্থনীতির উন্নতি-অবনতি।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগই কিন্ত পরিবারকেন্দ্রীক। অর্থাৎ দেশের কয়েকটা পরিবারের হাতেই ঘুরেফিরে পুরো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নির্ভর করে। চলুন জেনে নায়ে যাক সেই সব প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপারে। আজ থাকছে শেষ পর্ব-

যমুনা গ্রুপ

দেশের অন্যতম বড় শিল্প পরিবার যমুনা গ্রুপের অধীনে রয়েছে ৪২টি প্রতিষ্ঠান। ১৯৪৬ সালে জন্ম নেয়া নুরুল ইসলাম বাবুল ১৯৭৪ সালে যমুনা গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। যমুনা ইলেকট্রনিক ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শুরু হয় যমুনা গ্রুপের পথচলা। ১৯৭৫ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানে বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের উৎপাদন শুরু হয়। পরবর্তীতে যমুনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ একটি জায়ান্ট গোষ্ঠী হিসেবে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

নুরুল ইসলাম বাবুল ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তা। বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নে এক অনবদ্য ‘আইকন’ বলা হয় তাকে। একে একে তিনি শিল্প খাতে গড়ে তোলেন তিন ডজন কোম্পানি। এই গ্রুপে বর্তমানে প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ কর্মরত আছেন। বাবুলের নেতৃত্বে চার দশক ধরে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যমুনা গ্রুপ এখন এগিয়ে চলেছে তার চার সন্তানের যোগ্য নির্দেশনায়। কয়েকবারই এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের সেরা করদাতা প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার পেয়েছে। তাদের গড়ে তোলা যমুনা ফিউচার পার্ক এশিয়ার সর্ববৃহৎ শপিংমল।

মেঘনা গ্রুপ

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ হচ্ছে (এমজিআই) বৃহত্তম বাংলাদেশী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই সংগঠনের অধীনে শিল্পগুলি হচ্ছে রাসায়নিক, সিমেন্ট, ভোক্তা পণ্য, রিয়েল এস্টেট, বীমা, সিকিউরিটিজ, ইউটিলিটি ইত্যাদি। মোস্তফা কামাল এই মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরের একজন অগ্রণী শিল্পপতি। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে। শিল্পপতি মোস্তফা কামালের হাতে গড়া এই কোম্পানির বাৎসরিক আয় দেড়শ কোটি টাকারও বেশি।

বসুন্ধরা গ্রুপ

বসুন্ধরা গ্রুপ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। ১৯৮৭ সালে এটি ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড হিসেবে আবাসন ব্যবসার মধ্য দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। এর প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। বসুন্ধরা গ্রুপ এর প্রথম সফল প্রকল্পের পরে উৎপাদন, শিল্প এবং বাণিজ্যসহ বিভিন্ন নতুন খাতে বিনিয়োগ করে। ১৯৯০ এর দশকে সিমেন্ট, কাগজ, টিস্যু পেপার এবং ইস্পাত উৎপাদন, এলপি গ্যাসের বোতলজাতকরণ এবং বিতরণের পাশাপাশি আরও অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। এই কোম্পানির তৈরি করা বসুন্ধরা শপিংমল দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং পরিচিত শপিংমল।

এ কে খান কোম্পানি

বেক্সিমকো কিংবা বসুন্ধরার নাম বারবার সবার মুখে ঘুরে ফিরলেও এদের চেয়েও বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ কে খান এন্ড কোম্পানি লিমিটেড হচ্ছে বাংলাদেশের একটি মূখ্য পিণ্ডীভূত ব্যবসায় কোম্পানি, যার সদর দপ্তর চট্টগ্রামে অবস্থিত। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে আবুল কাসেম খান এটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামেই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ। ভারতীয় সিয়েট টায়ার কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে সিয়েটের কারখানা স্থাপন করেছে এ কে খান এন্ড কোম্পানি। তাদের রয়েছে রাবার বাগান, প্লাইউড ফ্যাক্টরি, দিয়াশলাই ফ্যাক্টরি, কোল্ড স্টরেজ, সিকিউরিটি সহ আরো নানা ধরনের ব্যবসা। কোম্পানিটি বেসরকারি উদ্যোগে নরসিংদী জেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে তারা।

প্রায় প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানই শূন্য হাতে শুরু করে এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইএফআইসির এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই গ্রুপগুলোর নাম উঠে এসেছে।

  • 12
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে