শুঁটকি রপ্তানি বন্ধ থাকায় লোকসানের আশঙ্কা

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৫, ২০২০; সময়: ৩:৫১ অপরাহ্ণ |
শুঁটকি রপ্তানি বন্ধ থাকায় লোকসানের আশঙ্কা

এম এ আলিম রিপন : দেশের সীমানা পেরিয়ে সুজানগরের শুঁটকি মাছ প্রতিবেশী দেশ ভারতে রপ্তানি হলেও এ বছর করোনায় রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন এ ব্যবসার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।জানা যায় গত ১৫ বছর আগে উপজেলার শুঁটকি পল্লী হিসাবে খ্যাত সুজানগর পৌরসভার মসজিদপাড়া এলাকার কিছু মৎস্যজীবি শুঁটকি মাছের ব্যবসা করলেও বর্তমানে শত শত মৎস্যজীবী এবং সাধারণ মানুষ এই ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন।

প্রত্যেক বছরের শীতের শুরুতে অর্থাৎ নভেম্বর মাস থেকে ফেব্রয়ারী মাস পর্যন্ত উপজেলার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা তাদের বাড়ির আঙ্গিনায়,অনেকে স্থানীয় খোলা জায়গায়, কেউ বা আবার বিলের ধারে বাঁশের চাতাল তৈরী করে শত শত মণ শুঁটকি মাছ প্রস্তুত করে থাকেন। স্থানীয় শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ী মোঃ আসাদুল্লাহ জানান তারা সুজানগরের গাজনার বিল, নাটোর ও চাটমোহরের চলনবিল সহ স্থানীয় অন্যান্য বিল থেকে টেংরা, টাকি, পুঁটি, চাঁদা সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ কিনে শুকিয়ে শুঁটকি করে থাকেন। মসজিদপাড়া এলাকার শুঁটকি ব্যবসায়ী কুতুব উদ্দিন জানান, তারা প্রতি বছর শুঁটকি মাছ সৈয়দপুরের শুঁটকির আড়তে বিক্রি করে থাকলেও সুজানগরের শুঁটকি মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে ব্যবসায়ীরা সুজানগরে এসে শুঁটকি মাছ ক্রয় করে নিয়ে যান।কিন্তু এবারে করোনায় রপ্তানি বন্ধ থাকায় ভারতের ব্যবসায়ীরা শুঁটকি মাছ ক্রয় করতে পারছেন না।এতে করে বড় ধরণের লোকসানে পড়তে হচ্ছে আমাদের।

ব্যবসায়ী মোতলেব হোসেন জানান, এক মণ পুঁটি শুঁটকি প্রস্তুত করতে নারী-পুরুষ শ্রমিক সহ খরচ হয় পাঁচ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা। আর এবারে তারা মানভেদে ১মণ পুঁটি শুঁটকি বিক্রি করছেন ৬ হাজার পাঁচশত টাকা থেকে সাত হাজার টাকা পর্যন্ত। এ সময় তিনি সরকারের নিকট সহজ শর্তে তাদেরকে ঋণ প্রদানেরও দাবী জানান। অপর শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ী আজমত হোসেন জানান মাছ শুটকি করতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

গত বছর পৌরসভার অর্ন্তগত স্থানীয় বাধের পাশের প্রায় দেড় একর ফাঁকা জায়গা ব্যবহারের জন্য আবেদন করলে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জায়গাটি ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান স্থানীয় মৎস্যজীবিদের প্রতিবছর শুঁটকি মাছের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়ে থাকে। সুজানগর পৌর মেয়র আব্দুল বলেন শুঁটকি মাছের ব্যবসার যাতে এ অঞ্চলে আরো প্রসার ঘটে সেই লক্ষ্যে শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ীদেরকে পৌরসভার প্রায় দেড় একর খোলা জায়গাটি ব্যবহারের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। আর এ জায়গাটি ব্যবহারের জন্য মাছ ব্যবসায়ীদের কোন ধরণের কোন অর্থও পৌরসভায় প্রদান করতে হচ্ছেনা।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন বলেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার মৎস্যজীবিদের ভাগ্যন্নোয়নে বিভিন্ন ধরণের সুযোগ সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। আর সুজানগরের শুঁটকি মাছ ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা যাতে আরো বেশি করে সুযোগ সুবিধা পেতে পারে এ জন্য তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবেন বলে জানান।

  • 16
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে