রাজশাহীতে ৮ বছরের শিশুর নামে শ্রম আদালতে মামলা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০; সময়: ৯:০৫ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে ৮ বছরের শিশুর নামে শ্রম আদালতে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর শ্রম আদালতে আট বছরের শিশুর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাজশাহীর শ্রম আদালতে এই মামলা করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক।

রাজশাহীর নওহাটা বাজারে শুক্রবার দোকান খোলার অপরাধে একইসাথে ছেলে ও বাবার নামে এই মামলা হয়েছে। বর্তমানে শিশু ও শিশুটির বাবা আদালতে হাজির হয়ে জামিনে রয়েছেন।

শিশুটির নাম জোবায়ের। বাবার নাম জনাব আলী। তাদের রাজশাহীর পবার নওহাটা বাজারে ‘ জে বার্মিজ সুজ’ নামে একটি জুতার দোকান রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় পবা উপজেলার নওহাটা বাজারের ‘জে বার্মিজ সুজ’ দোকানের মালিক জনাব আলীর কাছে রাজশাহীর শ্রম আদালতের দুটি সমন আসে। সেখানে বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬–এর ৩০৭ ধারার অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়।

পরে আইনজীবীর মাধ্যমে জনাব আলী জানতে পারেন যেকোনো এক শুক্রবারে তাঁর দোকান খোলা ছিল সেই অপরাধেই গত ১১ ফ্রেরুয়ারি হয়েছে মামলা । আর দোকানের সাইনবোর্ডে ছেলের ছবি ও নাম থাকায় আসামী হয়েছে সেও।

শিশুটির বাবা জনাব আলী জানান, দোকান খোলার অপরাধে মামলা হলে আমার নামে হবে। কারণ অপরাধ আমার।আমার দোষ আমি স্বীকার করছি। শিশুটির নামে কেন এই মামলা হবে।

মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও দোকান মালিকদের অভিযোগ, মাঠ পর্যায়ে না গিয়েই এমন ভুলভাল রিপোর্ট তৈরী করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক। নওহাটা বাজারেও ৯৩০ টি দোকানের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ টির নামে মামলা হয়েছে। তারা এসে বলে টাকা না দিলে মামলা হবে।

এদিকে শ্রম আদালতের আইনজীবী এস আলম জানান, যেহেতু শিশু জোবায়ের দোকানের মালিক বা পরিচালক কোনটিই নয় তাই শুধু সাইনবোর্ডে ছবি ও নাম থাকায় তার বিরুদ্ধে মামলা হতেই পারে না।

এব্যাপার কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের রাজশাহীর উপ-মহাপরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ভুইয়া বলছেন, এটি সংশ্লিষ্ট পরিদর্শকের ভুল। তাই শিশুটির মামলা প্রত্যাহরের বিষয়ে তারা আন্তরিক।

তিনি বলেন, শিশুটির পরিবার যদি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতো তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। কিংবা ঘটার পরও যদি যোগাযোগ করতো তাহলে আরজি পরিবর্তন করে শিশুটির নাম বাদ দেওয়া যেত। এখন আমরা আরজি থেকে শিশুটির নাম বাদ দিয়ে দেব।

এদিকে রাজশাহীর জজকোর্টের আইনজীবী দিল সেতারা জানান, ১১ বছরের আগে কোনো শিশুর নামে মামলা হওয়ার কোনো আইন নেই। শ্রম আইন অনুযায়ীও ১১ বছরের নিচে কোনো শিশু অপরাধ করলেও তার নামে মামলা হওয়ার সুযোগ নেয়। সেখানে এই মামলা হওয়াটা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।

তিনি আরো জানান, এখন যদি আরজি থেকে শিশুটির নাম বাদও দেওয়া হয় তবুও তার ওপর যে ক্রিমিনাল অফেন্স চাপিয়ে দেওয়া হলো তার দায় কে নেব। তাকে তো বড় হওয়ার পর নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে হবে।

  • 38
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে